জঙ্গিদের উর্বর লীলাভূমিতে পরিণত করার চক্রান্তের প্রতিবাদ
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসে এক বিস্ফোরক বিবৃতি দিয়েছেন, যা দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যালোচনা। তাঁর এই বিবৃতিতে জাতির ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হত্যা এবং দেশকে জঙ্গিদের উর্বর জমিতে পরিণত করার ষড়যন্ত্রের কথা তুলে ধরা হয়েছে। তবে, এই বিবৃতিতে কোথাও মহম্মদ ইউনুস বা বিএনপির কোনো নেতার নাম উল্লেখ করা হয়নি, যা আগের বিবৃতির থেকে একটি বড় পরিবর্তন। বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা এবং মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ধ্বংস শেখ হাসিনা তাঁর বিবৃতিতে বলেন, "মুক্তিযুদ্ধের স্মারকচিহ্ন ধ্বংস করা হচ্ছে এবং পরিকল্পিতভাবে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির পুনর্বাসন করা হচ্ছে। দেশের এক গভীর সংকটময় মুহূর্তে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হচ্ছে।" তাঁর মতে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে জলাঞ্জলি দিয়ে জামাত-ই-ইসলামীসহ ১৯৭১ সালের পরাজিত শক্তি পুনর্বাসন করার চেষ্টা চলছে, যা বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ক্ষতিকর। তিনি আরও বলেন, "প্রিয় দেশকে জঙ্গিদের উর্বর লীলাভূমিতে পরিণত করা হচ্ছে," এবং তাঁর মতে, এ সব অপশক্তি কখনোই বীর বাঙালি জাতির সহ্য করা সম্ভব নয়। শেখ হাসিনার কৌশল পরিবর্তন? বিশ্লেষকরা প্রশ্ন তুলছেন, কেন শেখ হাসিনা এবার বিবৃতিতে কোনো বিশেষ ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেননি? ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে বিবৃতির এই পরিবর্তন কি না তা নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা চলছে। উল্লেখযোগ্য, গত কিছুদিন ধরে শেখ হাসিনা এবং ভারত সরকারের মধ্যে সম্পর্কের বিষয়ে বিভিন্ন বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরি সম্প্রতি জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার বিবৃতি ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে, বিশেষত মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন সরকার সম্পর্কে তাঁর সমালোচনা। এরই মধ্যে, শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ সামাজিক মাধ্যমে তাঁর মায়ের এই বিবৃতি শেয়ার করেছেন, যা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে নানা ধরনের প্রশ্ন উত্থাপন করেছে। রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে শেখ হাসিনার ঐক্যের আহ্বান শেখ হাসিনা তাঁর বিবৃতিতে দেশের অভ্যন্তরীণ ঐক্যবদ্ধতার আহ্বান জানিয়েছেন। "মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি," বলেছেন তিনি। এটি একটি স্পষ্ট বার্তা যে, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের চাপের মধ্যে, শেখ হাসিনা দল ও দেশের ঐক্য রক্ষার জন্য আরও শক্তিশালী পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। সংকটের মধ্যে সংকল্প বাংলাদেশে গত কয়েক বছর ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সংঘাত চললেও শেখ হাসিনার শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসের বিবৃতি স্পষ্ট করেছে যে, তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষার প্রতি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তাঁর মতে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কোনোভাবেই পরাজিত হতে পারে না, এবং স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা জরুরি। এখন প্রশ্ন উঠছে, শেখ হাসিনার এই কড়া বার্তা দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতির প্রেক্ষাপটে কীভাবে পরিণতি পাবে এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এর প্রভাব কী হতে পারে।