প্রবেশ সীমিত করল ঢাবি কর্তৃপক্ষ, খুশি শিক্ষার্থীরা-ভোগান্তি দর্শনার্থীদের
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাস এলাকার সাতটি প্রবেশপথে ব্যারিকেড দিয়ে চলাচল সীমিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতে ক্যাম্পাসের ভেতরে নিত্যদিনের যানজট, দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় দেখা যায়নি। এতে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। তবে প্রবেশপথের বিপরীতদিকের সড়কে ব্যাপক যানজট দেখা দিয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন দর্শনার্থীরা। শুক্রবার বিকেল থেকে ব্যারিকেড দিয়ে যান চলাচল সীমিত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এক বার্তায় বলেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত পয়েন্ট থেকে বাইরের যানবাহন ক্যাম্পাসে প্রবেশ সীমিত করা হলো। এ ব্যাপারে নগরবাসীর সহায়তা কামনা করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পলাশীর মোড়, নীলক্ষেত মোড়, শহীদ মিনার, শাহবাগ, শহীদুল্লাহ হল, হাইকোর্ট মোড় এবং শিববাড়ি ক্রসিং মোড়ে এসব ব্যারিয়ার এবং সিকিউরিটি অ্যান্ড সার্ভিলেন্স বক্স স্থাপন করা হয়েছে। ক্যাম্পাসে স্টিকারবিহীন গাড়ি, গণপরিবহন ও ভারী যানবাহন চলাচল এবং বহিরাগতদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এসব বেরিয়ার এবং সিকিউরিটি এন্ড সার্ভিলেন্স বক্স স্থাপন করা হয়েছে জানিয়েছে প্রশাসন। সরজমিন দেখা যায়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গমনকারী জরুরি গাড়ি, বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি ব্যতীত অন্যান্য গাড়ি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। তবে ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়া যাচ্ছে। এর ফলে শুক্রবার ছুটির দিনে ক্যাম্পাস এলাকায় গাড়ি নিয়ে অনেকে ঘুরতে এসে ঢুকতে পারেননি। অনেকেই বলেছেন, এমন সিদ্ধান্তের কথা তারা জানতেন না। যানবাহন নিয়ন্ত্রণ বেরিয়ার স্থাপনের ফলে শাহবাগ, নীলক্ষেত, বাংলামটর, মৎস্য ভবন এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে একাধিক শিক্ষার্থী জানান, ছুটির দিনগুলোতে ক্যাম্পাসে ব্যাপক দর্শনার্থীদের আগমন ঘটে। এতে ক্যাম্পাসে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হয়। স্বাভাবিক চলাচলে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েন তারা। প্রশাসনের এমন পদক্ষেপে তারা খুশি। তবে কয়দিন এটা থাকবে এটা নিয়ে সন্দিহান তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী তাহমিদুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যান চলাচল কমানোর দাবি বহুদিন ধরেই করা হচ্ছে। কিন্তু প্রশাসন তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। সার্ভেইলেন্স বক্স লাগানো হলেও কোনো লাভ হয়নি। আজ প্রথম বাস্তবিক অর্থে পদক্ষেপ দেখে সব শিক্ষার্থীই খুশি। ঢাকার অন্য রাস্তাগুলোয় তীব্র যানজটের কথা শোনা যাচ্ছে। সেসব বিষয়ে সিটি কর্পোরেশনের বিকল্প ব্যবস্থা চিন্তা করা উচিত। ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদি হাসান বলেন, অতিরিক্ত যান চলাচল এবং বহিরাগতদের অবাধ বিচরণের ফলে বিশেষ করে ছুটির দিনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ প্রায় অচল হয়ে যেত। ফলে যান নিয়ন্ত্রণ করা শিক্ষার্থীদের কাছে স্বস্তির। এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পলাশী মোড়ে স্থাপিত নিরাপত্তা ও নজরদারি বক্স উদ্বোধন করেন উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান। উদ্বোধনের পরের দিন শুক্রবার থেকে শুধু বকশীবাজার থেকে জগন্নাথ হল ক্রসিং হয়ে পলাশী দিয়ে বের হওয়ার রাস্তা খোলা রেখে ক্যাম্পাসের সাতটি প্রবেশপথে চলাচল সীমিত করার সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ বলেন, রোগী, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো অতিথির গাড়ি কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো অফিশিয়াল কাজে এলে অবশ্যই ক্যাম্পাসে ঢোকা যাবে। শিক্ষার্থীদের চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতেই চলাচল সীমিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে।