পোশাক শ্রমিকদের বার্ষিক বেতন ৯ শতাংশ বৃদ্ধির সুপারিশ
বাংলাদেশের পোশাকশিল্প খাতে শ্রমিকদের বার্ষিক বেতন বৃদ্ধির জন্য ৯ শতাংশ বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয়েছে, যা ১ ডিসেম্বর ২০২৪ থেকে কার্যকর হবে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. এম. সাখাওয়াত হোসেন। আজ সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ড. সাখাওয়াত হোসেন জানান, পোশাকশিল্পের বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি বিষয়ে শ্রমিক ও মালিকপক্ষের মধ্যে আলোচনা শেষে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শ্রমিকপক্ষ ১০ শতাংশ বৃদ্ধির দাবি করলেও মালিকপক্ষ ৮ শতাংশের বেশি বাড়াতে রাজি ছিলেন না। আলোচনার মাধ্যমে বিদ্যমান ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্টের সঙ্গে আরও ৪ শতাংশ যোগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উপদেষ্টা বলেন, “বিদ্যমান শতকরা ৫ ভাগ বেতন বৃদ্ধির সঙ্গে নতুন ৪ শতাংশ যোগ করে মোট ৯ শতাংশ বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয়েছে। এটি জানুয়ারি মাসে প্রদেয় বেতনের সঙ্গে কার্যকর হবে।” উপদেষ্টা আরও জানান, এই বেতন বৃদ্ধি বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সর্বশেষ সংশোধিত) অনুযায়ী অন্যান্য সুবিধাসহ কার্যকর হবে। পাশাপাশি, নতুন কোনো নিম্নতম মজুরি হার ঘোষিত না হওয়া পর্যন্ত এই বেতন বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। ড. সাখাওয়াত হোসেন পোশাকশিল্পের বর্তমান চ্যালেঞ্জ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি জানান, দেশের ভেতর-বাইরে থেকে গার্মেন্টস শিল্পের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এবং উসকানি চলছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "গার্মেন্টস শিল্পকে বাইরে সরিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। এই শিল্প দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড। এর সুরক্ষায় মালিক ও শ্রমিকদের সহযোগিতা করতে হবে।" বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পোশাকশিল্পের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক এই খাতে কর্মরত, যার বেশিরভাগই নারী। এ খাত দেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮০ শতাংশ যোগান দেয়। শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং শিল্পে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়ক হবে। বাংলাদেশের পোশাকশিল্প খাতের বেতন বৃদ্ধির এই সুপারিশ শ্রমিকদের জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা। তবে শ্রমিক-মালিক উভয়পক্ষের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখা এবং ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। গার্মেন্টস শিল্প দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করছে, এবং এই খাতের সুরক্ষায় সবার আন্তরিক সহযোগিতা অত্যাবশ্যক।