ভারতের ঘটনাকে ইসকনের খামারে হামলার দৃশ্য বলে প্রচার
গত ২৫ নভেম্বর বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে জাতীয় পতাকা অবমাননার রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন গত ২৬ নভেম্বর তাকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হলে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আদালত প্রাঙ্গণে উত্তেজনা ও বিক্ষোভের সৃষ্টি হয়। শুরু হয় ধাওয়া পালটা ধাওয়া। সে সময় সাইফুল ইসলাম নামে এক আইনজীবীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে, বাংলাদেশে ইসকনের গরুর খামারে আক্রমণের দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। বাশার পতনের মাস্টারমাইন্ড কে এই জোলানি ফ্যাক্টচেক রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, একটি গরুর খামারে চার যুবক গরুর ওপর হামলার দৃশ্যটি বাংলাদেশের নয়, প্রচারিত ভিডিওটি ভারতের পাঞ্জাবের একটি গরুর খামারে হামলার পুরোনো দৃশ্য। অনুসন্ধানে ভিনয় কাপুর নামে একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে গত ১৪ নভেম্বর প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সঙ্গে আলোচিত ভিডিওর মিল রয়েছে। উক্ত পোস্টের ক্যাপশনটি ভাষান্তর করে জানা যায়, জলন্ধর জমশেদ ডেইরিতে কিছু লোকের মাধ্যমে গরুটিকে বাজেভাবে হত্যা করা হয়েছিল। ভিডিওটি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছানো হয়েছে এবং পুলিশ প্রশানকে অভিযোগ জানানো হয়েছে। যাতে এই ধরনের অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়৷ পোস্টে তিনি নিজেকে শ্রী গোবিন্দ গরু প্রতিরক্ষা দলের সভাপতি ও সর্বভারতীয় শিবসেনা রাষ্ট্রবাদির পাঞ্জাবের সভাপতি দাবি করেন। পোস্টে উল্লেখিত স্থানের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে খবরস্তান নামক একটি ওয়েবসাইটে গত ২৭ নভেম্বর ‘Jalandhar: Brutally thrashed on a mute person in a dairy, watching the VIDEO will blow your mind’ (ইংরেজি অনূদিত) শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে যুক্ত ভিডিওর সঙ্গে আলোচিত ভিডিওর মিল রয়েছে। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গরুর ওপর যুবকদের হামলার দৃশ্যটি ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের জলন্ধর শহরে জমশেদ ডেইরির। এছাড়া, ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য ট্রিবিউনের ওয়েবসাইট প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়। সুতরাং, ভারতের পাঞ্জাবে গরুর ওপর যুবকদের হামলার দৃশ্যকে বাংলাদেশে ইসকনের গরুর খামারে হামলার দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।