আবারও পণ্যের দাম অস্বাভাবিক, খুচরা বিক্রেতাদের ক্ষোভ
দেশের বাজারে আবারও পণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। গত কিছুদিনে ডিম, পাম তেল, ছোলা, চালসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ভোক্তাদের জন্য বড় ধরনের আর্থিক চাপ সৃষ্টি করছে। বিশেষ করে ডিমের দাম এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৬ টাকা বেড়ে প্রতি ডজন ১৫৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা ভোক্তাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। একইভাবে, পাম তেলের দামও এক মাসের ব্যবধানে ৪-৫ টাকা বাড়িয়ে প্রতি লিটার ১৫৮-১৬০ টাকা ছাড়িয়েছে। বাজারের খুচরা বিক্রেতারা জানান, পাইকারি আড়তের ব্যবসায়ীরা বাজারে কিছুদিন পর পর কারসাজি করে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়ে অতি মুনাফা অর্জন করে। তাদের মতে, তদারকি সংস্থাগুলোর নজরদারি না থাকলে দাম বাড়ানো সহজ হয়ে যায়। বিশেষত, গত এক বছর ধরে ডিমের দাম একইভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই পরিস্থিতি থেকে ভোক্তাদের রক্ষা করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে। এদিকে, ছোলার দামও গত মাস থেকে বাড়ানো হচ্ছে। বর্তমানে প্রতি কেজি ছোলা ১৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে, যা এক মাস আগে ১৩৫ টাকা ছিল। গত বছর একই সময়ে ছোলা প্রতি কেজি ৮৫-৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বাজারে ছোলার মূল্যবৃদ্ধির পেছনে রোজা, উৎপাদন ও সরবরাহ সংকটকেই দায়ী করা হচ্ছে, তবে দামের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি সবার জন্য কষ্টকর হয়ে উঠেছে। চালের বাজারেও অস্থিরতা বিরাজ করছে। সরু চালের দাম প্রতি কেজি ৬৮-৮০ টাকা, মাঝারি চাল ৫৮-৬৩ টাকা, এবং মোটা চাল ৫০-৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে মিলারদের দাবি, আমন ধানের নতুন ফলন বাজারে আসলেও তারা চালের দাম কমাচ্ছে না, যার কারণে পাইকারি বাজারে দাম অপরিবর্তিত থাকছে। এছাড়া, সয়াবিন তেল ও আটা-ময়দার দামেও বৃদ্ধি ঘটেছে। সয়াবিন তেল, বিশেষত বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটার ১৭০ টাকা এবং পাঁচ লিটারের বোতল ৮১৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আটা এবং ময়দার দামও সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। এভাবে বাজারে পণ্যের দাম বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় আরও বেড়ে যাবে। বাজারে কারসাজি, অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি এবং সরকারের তদারকি সংস্থার পক্ষ থেকে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ার ফলে ভোক্তাদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে। বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকারের উচিত তদারকি ব্যবস্থা জোরদার করা এবং বাজারে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।