অবৈধ ও অসাংবিধানিক শ্বেতপত্রের আ’লীগের প্রতিবাদ
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অবৈধ ও অসাংবিধানিক ফ্যাসিস্ট ইউনূস সরকারের নির্দেশে প্রকাশিত "অর্থনীতি শ্বেতপত্র" (নভেম্বর ২০২৪) এর তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। শ্বেতপত্রটি ১২ সদস্যের "শ্বেতপত্র কমিটি ২০২৪" দ্বারা রচিত এবং এর শিরোনাম ছিল "White Paper on State of the Bangladesh Economy: Dissection of a Development Narrative"। এটি মূলত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত একটি রচনা যা গত ১৬ বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সামাজিক সূচকের সাফল্যকে উপেক্ষা করেছে। শ্বেতপত্রের পদ্ধতিগত দুর্বলতা শ্বেতপত্রের পদ্ধতি ছিল একপেশে এবং প্রমাণিত নয়। গবেষণার পদ্ধতিগত ভিত্তি দুর্বল হওয়া সত্ত্বেও এতে লক্ষ্য রাখা হয়েছে পপুলিস্ট উপস্থাপন, যা কোনো যুক্তিক ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে ছিল না। শ্বেতপত্রে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সামাজিক সূচক, এবং নানা গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের সফলতা তুলে ধরা হয়নি। অথচ, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং সামাজিক সূচকে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে। অর্থপাচার: বাস্তবতার উল্টো শ্বেতপত্রে বাংলাদেশ থেকে ২৮ লাখ কোটি টাকা অর্থ পাচারের অভিযোগ তোলা হয়েছে। কিন্তু এই দাবি সঠিক পরিসংখ্যানের উপর ভিত্তি করে নয়। ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে সরকারি বাজেট ছিল প্রায় ৫৭ লাখ কোটি টাকা, অথচ শ্বেতপত্রে উল্লেখিত অর্থ পাচারের অঙ্ক দেশটির বার্ষিক বাজেটের প্রায় ৪৯ শতাংশ। এটি একটি অবাস্তব এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসাব, যা কোনো বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে হয়নি। প্রবৃদ্ধি এবং নৈতিক উন্নয়ন: অস্বীকার শ্বেতপত্রে গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের ৫%-৮.২% প্রবৃদ্ধি অস্বীকার করা হয়েছে। তবে, এই সময়ে বাংলাদেশে সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নীতিগত অগ্রগতি ছিল তা অবহেলা করা হয়েছে। বিশেষ করে, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে, যার ফলে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক মানচিত্রে একটি নতুন পরিচিতি লাভ করেছে। উন্নয়ন প্রকল্পের অবমূল্যায়ন শ্বেতপত্রে দেশের সফল মেগা প্রকল্পগুলির সাফল্য এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। পদ্মা সেতু, ঢাকার মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, কর্ণফুলী টানেলসহ দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে জনগণের জীবনযাত্রায় সরাসরি প্রভাব ফেলেছে। তবে, এসব প্রকল্পের প্রকৃত কার্যকারিতা এবং দেশের উন্নয়ন সূচক নিয়ে শ্বেতপত্রে কোনো পর্যালোচনা করা হয়নি। বৈদেশিক ঋণের চাপ কমানো শ্বেতপত্রে বৈদেশিক ঋণের অবস্থা নিয়ে মিথ্যা তথ্য দেওয়া হয়েছে। ২০০৯ সালে বৈদেশিক ঋণ ছিল দেশের জিডিপির ৩৫%, যা এখন কমে দাঁড়িয়েছে ২৫%-এ। এটি অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রতীক। ইউনূস সরকারের অব্যবস্থাপনা শ্বেতপত্রে ইউনূস সরকারের অর্থনৈতিক নীতির বিপর্যয়ের বিষয়টি উল্লিখিত হয়নি। বিগত ৪/৫ মাসে দেশের অর্থনীতি এবং সমাজে ধ্বংসযজ্ঞের ফলে জনগণের জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়েছে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি, শিল্প উৎপাদনের হ্রাস, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ভেঙে পড়া, এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে বিপর্যয়ের কারণে বর্তমান সরকারের অব্যবস্থাপনা স্পষ্ট হয়েছে। সার্বিক প্রতিবাদ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শ্বেতপত্রের প্রতিবাদ জানানো হয়েছে এবং দেশবাসীকে এই অসত্য, অবৈজ্ঞানিক এবং বাস্তবতাবিহীন শ্বেতপত্রের বিরুদ্ধে একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। এটি একটি গভীর অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রয়াস, যা দেশের জনগণের সামনে সরকারের সঠিক কাজকর্ম এবং অর্জনগুলো আড়াল করার চেষ্টায় রচিত হয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ এবং দেশের অর্থনৈতিক সাফল্য জনগণের কাছে তুলে ধরতে আগ্রহী, যাতে তারা বুঝতে পারে শ্বেতপত্রের আসল উদ্দেশ্য এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রকৃতির কথা।