আমদানি পণ্যে ট্রাম্প শুল্ক বসালে ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে

২৮ নভেম্বর, ২০২৪ | ৯:১৬ পূর্বাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

অ্যামেরিকার বৃহৎ তিন বাণিজ্য অংশীদার মেক্সিকো, ক্যানাডা ও চায়নার আমদানি পণ্যে ডনাল্ড ট্রাম্প শুল্ক আরোপ করলে দেশের ভোক্তা ও খুচরা ব্যবসায়ীদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এমন দাবি করছেন ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা। ইউনিভার্সিটি অব স্যান ডিয়েগোর অর্থনীতির অধ্যাপক অ্যালেন জিন বলেন, ‘এর ফলে দেশগুলো থেকে আমদানি করা পণ্য কিনতে বাড়তি অর্থ গুণতে হবে সাধারণ মানুষকে। পাশাপাশি দেশগুলো পাল্টা পদক্ষেপ নিলে অ্যামেরিকার রপ্তানি খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং অনেকে চাকরি হারাবে বলে আশঙ্কা করেন তিনি। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প তার নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ঘোষণা দিয়েছেন, দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনই মেক্সিকো ও ক্যানাডা থেকে আমদানি করা সব পণ্যের ওপর তিনি ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন। পাশাপাশি চায়নার সব পণ্যের ওপর অতিরিক্ত আরও ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণাও দেন তিনি। ইউনিভার্সিটি অফ স্যান ডিয়েগোর অর্থনীতির অধ্যাপক অ্যালেন জিন বলেন, ‘আমদানিকারকরা শুল্কের জন্য বাড়তি অর্থের বোঝা ভোক্তাদের কাঁধে চাপিয়ে দিতে পারেন। ফলে অ্যাভোকাডো হোক কিংবা গাড়ি, অতিরিক্ত মূল্যে কিনতে হবে ভোক্তাদের।’ জিন বলেন, মূলত দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধি এবং বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে অ্যামেরিকায় বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে ট্রাম্প শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। কিন্তু ট্রুথ সোশ্যালে সাম্প্রতিক পোস্টে ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, শরণার্থী এবং মাদক সমস্যা সমাধানে শুল্ককে একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চান তিনি। ট্রাম্প তার পোস্টে লিখেন, ‘ক্যানাডা ও মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে অ্যামেরিকায় ফেন্টানলসহ বিভিন্ন মাদক পাচার এবং অবৈধ শরণার্থীদের কঠোরভাবে দমন না করা পর্যন্ত, তাদের পণ্যের ওপর এই শুল্ক বহাল থাকবে।’ মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লউডিয়া শিনবমও অ্যামেরিকার পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। অধ্যাপক জিনের মতে, এটি দুশ্চিন্তার আরেকটি কারণ। অ্যাল্যন জিন স্মরণ করিয়ে দেন, মেক্সিকো, ক্যানাডা এবং চায়না অ্যামেরিকার বৃহৎ তিন বাণিজ্য অংশীদার। শুল্ক নিয়ে আশঙ্কার কথা জানান গবেষণা প্রতিষ্ঠান হেরিটেইজ ফাউন্ডেশনের রিসার্চ ফেলো জোয়েল গ্রিফিতও। লস অ্যাঞ্জেলেসের একটি গ্রোসারি স্টোরের মালিক এডউইন হার্নান্দেয জানান, ২০ বছর পুরনো তাঁর এই পারিবারিক ব্যবসার ৪০ শতাংশ পণ্যই মেক্সিকো থেকে আমদানি করা। হার্নান্দেয বলেন, ‘ট্রাম্প ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলে, দোকান ও রেস্তোরাঁর ব্যবসায় ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।’ হার্নান্দেযের মতো আরও অনেক ব্যবসায়ী ট্রাম্পের ঘোষিত শুল্ক আরোপ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন। মেক্সিকোর অর্থমন্ত্রী মার্সেলো এব্রার্ডও বুধবার সতর্ক করেছেন, ট্রাম্পের ট্যারিফের ফলে অ্যামেরিকায় চারশ হাজার মানুষ চাকরি হারাবে, প্রবৃদ্ধি কমবে এবং অ্যামেরিকার ব্যবসায়ী ও ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে ট্রাম্প সত্যিই শুল্ক আরোপ করবেন, নাকি আলোচনার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করবেন সে বিষয়ে অনেক বিশ্লেষক সংশয় প্রকাশ করছেন।