হাইকোর্টের অভিমত : কুরআন অবমাননা ও মহানবীকে কট‚ক্তির শাস্তি মৃত্যুদন্ডের বিধান করতে পারে সংসদ
পবিত্র কুরআন এবং হযরত মুহাম্মদ (স.)-কে উদ্দেশ্য করে অপ্রয়োজনীয়, বিবেকবর্জিত, ধৃষ্টতা ও উসকানিমূলক আশালীন বক্তব্য এবং আচরণের জন্য মৃত্যুদÐ প্রদানের বিধান জাতীয় সংসদ বিবেচনা করে দেখতে পারে। যাবজ্জীবন কারাদন্ডের মতো শাস্তির বিধান থাকাও বাঞ্ছনীয়। এমন অভিমত দিয়েছেন হাইকোর্ট। মহানবী (স.) কে নিয়ে করা কটূক্তি করা সংক্রান্ত এক মামলার রায়ে আদালত এ অভিমত দেন। বিচারপতি মো: রেজাউল হাসান এবং বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের ডিভিশন বেঞ্চ এ অভিমত ব্যক্ত করেন। গত ১২ মার্চ হাইকোর্টের দেয়া এ রায়ের সম্প্রতি অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে। তাতে উপরোক্ত অভিমত রয়েছে। মামলার রেকর্ডপত্র থেকে জানাযায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.) কে নিয়ে কটূক্তি করেন কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা এলাকার বাসিন্দা জনৈক সেলিম খান। এ ঘটনায় গতবছর ৪ নভেম্বর ভেড়ামারা থানায় সেলিম খানের বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনের চারটি (২৫, ২৮, ২৯ ও ৩১) ধারায় ওই মামলা হয়। ওইদিনই তাকে গ্রেফতার করা হয়। জনৈক নাফিসা চৌধুরীর লিংক পোস্টে সেলিম খান কমেন্ট করেছিলেন। পরে ৩১ ডিসেম্বর পুলিশ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। এর মধ্যে জজ আদালতে জামিন নামঞ্জুরের পর হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন সেলিম খান। ওই আবেদনে হাইকোর্ট রুল জারি করেছিলেন। সেই রুল শুনানি শেষে হাইকোর্ট তাকে জামিন দেন। আসামি সেলিম খানকে ২৫ লাখ টাকার ব্যাংক গ্যারান্টির মাধ্যমে দেয়া বন্ডে (জামিননামায়) জামিন দেয়া হয়। অন্যদিকে ফেসবুকে পোস্ট দেয়া নাফিসা চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলার নথিতে প্রাথমিকভাবে অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ততার সাক্ষ্য-প্রমাণ থাকায় তাকে সহ-আসামি করে সম্পূরক চার্জশিট দিতে তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়। রায়ের পর্যালোচনা ও মতামত অংশে আদালত বলেন, পবিত্র কুরআনের উদ্ধৃত আয়াতগুলো পড়ে এবং হযরত মুহাম্মদ (স.) এর জীবনী বিবেচনায় নিয়ে, এ বিষয়ে নাতিদীর্ঘ বিচার বিশ্লেষণের পর, আমাদের সুচিন্তিত মতামত এই যে,কুরআন সম্পর্কে এবং মহানবী সম্পর্কে বিষোদগার বা কটূক্তি বা কোনোভাবে অবমাননা করার কোনো প্রকার যৌক্তিক বা বুদ্ধিজাত কারণ নেই। দৃশ্যমান বাস্তবতার আলোকে কুরআন বা রাসুল (স.) এর প্রতি ধৃষ্টতা প্রদর্শন বা অবমাননাকর উক্তির স্বাধীনতা কার্যতঃ ‘স্বাধীনতা’ ধারণাটির অপব্যবহার। অধিকার এবং অবমাননার অপরাধ এক নয়। হাইকোর্টে আসামি সেলিম খানের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবদুল্লাহ আল নোমান। সরকারপক্ষে ছিলেন তৎকালিন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন।