বাঙালি রান্নায় পেঁয়াজকলির জাদু
বাংলার শীতকালীন রান্নাঘর পেঁয়াজকলি ছাড়া অসম্পূর্ণ। এটি শীতের এক বিশেষ সবজি, যা স্থানীয়দের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয়। পেঁয়াজকলির স্বাদ ও সুবাস শীতকালীন খাবারের অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে, বাংলার বাজারগুলোতে পেঁয়াজকলি ভরে যায় এবং এটি নানা রকম বাঙালি পদে ব্যবহৃত হয়। যত শীতের আগমন ঘটে, তত পেঁয়াজকলি এক অপরিহার্য পদ হয়ে ওঠে আমাদের দুপুরের খাবারে। এটি কেবল আমার পরিবারেই নয়, প্রায় প্রতিটি বাঙালি বাড়িতে একটি সাধারণ দৃশ্য। যারা অচেনা, তাদের জন্য জানিয়ে রাখি, পেঁয়াজকলি হলো পেঁয়াজের ফুলের গাছের ডগা। পেঁয়াজের মূল মাটি-ভেতরে থাকা সত্ত্বেও এর গাছ মাটির উপরে পাতা ও ফুল উৎপন্ন করে। শীতকালে, এই গাছের ডগা কেটে বাজারে বিক্রি করা হয় পেঁয়াজকলি হিসেবে, বাকি গাছগুলো পরবর্তী সময়ে বীজ উৎপাদনের জন্য রেখে দেওয়া হয়। বাঙালিরা পেঁয়াজকলি দিয়ে নানা ধরনের পদ তৈরি করেন, যেমন পেঁয়াজকলি পোস্ত, আলু পেঁয়াজকলি ভাজা এবং পেঁয়াজকলি ফুলকপি তড়কা। মাংসপ্রেমিরা তাদের প্রিয় মাছ এবং চিংড়ির পদেও এটি যোগ করেন, যেমন পেঁয়াজকলি মাছের ঝোল এবং পেঁয়াজকলি চিংড়ি মাচের চর্চুরি। প্রথমবার বাঙালি পেঁয়াজকলি পোস্ত রেসিপি ট্রাই করুন : উপকরণ: ৩টি পেঁয়াজকলির গাছ ৪ টেবিল চামচ পোস্তদানা ৩টি পেঁয়াজ (পাতলা কাটা) ৮টি কাঁচা মরিচ ৩ টেবিল চামচ সরিষা তেল ১/২ চা চামচ কালো জিরা স্বাদ অনুযায়ী লবণ প্রণালী: ১. পোস্তদানা ২০ মিনিট গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখুন, তারপর ছেঁকে নিতে হবে এবং একটু শুকিয়ে নিতে হবে। ২. পেঁয়াজকলি ১.৫ ইঞ্চি আকারে কেটে রাখুন। ৩. পোস্তদানা ও ৪টি কাঁচা মরিচ ব্লেন্ডারে দিয়ে একসাথে মিহি পেস্ট তৈরি করুন। ৪. একটি কড়াইয়ে ২ টেবিল চামচ সরিষা তেল গরম করুন, তাতে কালো জিরা দিন এবং ফোটাতে দিন। ৫. এবার কাটা পেঁয়াজ ও কাঁচা মরিচ দিন, আঁচ কমিয়ে পেঁয়াজ সোনালি হওয়া পর্যন্ত রান্না করুন। ৬. পেঁয়াজকলি ও লবণ দিয়ে দিন এবং মাঝে মাঝে নাড়াচাড়া করে রান্না করুন যতক্ষণ না এটি নরম হয়। ৭. পোস্তদানার পেস্ট যোগ করে ভালোভাবে মেশান এবং ৪-৫ মিনিট মাঝারি আঁচে রান্না করুন। যদি শুকিয়ে যায়, সামান্য পানি দিয়ে দিন। ৮. শেষমেশ সরিষা তেল দিয়ে দিন এবং গরম গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন। শীতের মৌসুমে এই মজাদার রেসিপি দিয়ে ভিন্ন স্বাদ উপভোগ করুন!