এই সরকারকে ব্যর্থ করতে বহুমুখী ষড়যন্ত্র চলছে -এ এম এম বাহাউদ্দীন
জনপ্রত্যাশার আলোকে জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন। তিনি বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনআকাক্সক্ষার ঐতিহাসিক বাস্তবতা। তাই জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ এ সরকার। এই সরকারকে ব্যর্থ করতে বহুমুখী ষড়যন্ত্র চলছে। এ ব্যাপারে সব নাগরিককে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সচেতন ও সতর্ক থাকতে হবে। গতকাল শনিবার দৈনিক কার্যালয়ে ব্যুরো প্রধান ও জেলা সংবাদদাতাদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি সারাদেশের ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সাংবাদিকদের দায়িত্বশীল হয়ে বস্তুনিষ্ট, তথ্য নির্ভর খবর লেখার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, শ্রোতে গা ভাসানো যাবে না। সোস্যাল মিডিয়া এখন অনেক শক্তিশালী। কিন্তু সেখানে যা প্রকাশ হয় তার ওপর নির্ভর করে খবর প্রকাশ করা যাবে না। মানুষ কি চায় সেটা বুঝতে অনুসন্ধানী রিপোর্ট লিখতে হবে। এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেন, আন্তর্জাতিক খ্যতি সম্পন্ন ব্যক্তিত্ব ড. মুহম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন নাগরিক হিসেবে এটা আমাদের গর্ব। এক নামে তাকে বিশ্বের সবাই চেনেন জানেন। বিশ্বের কোনো প্রান্তেই তার নাম বললে আর পরিচয় করিয়ে দিতে হয় না। কিন্তু তার নেতৃত্বাধীন সরকারের সর্বোচ্চ সফলতা নির্ভর করবে জনপ্রত্যাশার আলোকে জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থার ওপর। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে নির্বাচনের নামে ভোট ডাকাতি প্রহসন হয়েছে। আমজনতা বিশেষ করে নতুন প্রজন্ম ভোট দিতে পারেনি। রাষ্ট্রীয়ভাবে নাগরিকের মৌলিক অধিকার হরণের এহেন আনুষ্ঠানিক ঘটনায় বিশ্বের ইতিহাসে বাংলাদেশের কথিত নির্বাচনী ব্যবস্থাকে কলঙ্কিত করেছে। সে কারণে ক্ষুব্ধ মানুষ রাজপথে নেমে বুক চিতিয়ে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে দলবলসহ পালাতে বাধ্য হয়েছে স্বৈরাচারী, দাম্ভিক, অহঙ্কারী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এখনো প্রশাসনে ঘাপটি মেরে রয়েছে স্বৈরাচারের দোসরা। তারা অপতৎপরতার ছক কষছে। কিন্তু সবই ব্যর্থ হবে, কারণ ছাত্র-জনতা প্রকৃত অর্থে রাজপথ ছাড়ে নেই, ছাড়বেও না লক্ষ্য অর্জনের চূড়ায় না পৌঁছা পর্যন্ত। হাসিনা রেজিম রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করে দিয়েছে। দলদাস লোকজনকে নিয়োগ দিয়ে সেগুলোর মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দিয়েছে। কাজেই সেগুলো সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে সেটা কতটুকু? সংস্কারের নামে বছরের পর বছর সময় লাগালে ষড়যন্ত্রকারীরা সুযোগ পেয়ে যাবে। দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতা দেখতে মুখিয়ে রয়েছে দেশের ১৮ কোটি মানুষ। তাই নির্বাচন নিয়ে কোনো ধরনের অজুহাত বা ছিনিমিনি করলে রাজপথে ঢল নামবে নারী-পুরুষের। বিষয়টি অনুধাবনে ব্যর্থ হলে দাঁতভাঙা জবাব দেবে আমজনতা। এ সময় নিজ নিজ এলাকার রাজনৈতিক, অর্থনীতিক, সমসাময়িক চলমান ঘটনা ও বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে সাধারণ মানুষের বিভিন্নমুখী বিশ্লেষণের তথ্য দিয়ে বক্তব্য রাখেন উপস্থিত সাংবাদিকরা। এ এম এম বাহাউদ্দীন গণমুখী সংবাদ পরিবেশনের পরামর্শ দিয়ে বলেন, দেশ জাতীর পক্ষে আওয়াজ কেউ স্তব্ধ করতে পারবে না। এলাকায় চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী, সিন্ডিকেটের ঘটনার বিরুদ্ধে জনমত গঠনে সাহসীকতার সাথে কলম চালিয়ে জনসম্মুখে তুলে ধরবেন সংশ্লিষ্টদের দলীয় পরিচয়। কারণ মানুষ আর কোনো অনিয়ম ও রাহাজানিকে প্রশয় দেবে না। জনমানুষের স্বার্থে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সাংবাদিকদের জনকল্যাণে ব্রতী হয়ে সেবকের চেয়ার বসে জনবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলে তাদের তৎপরতা তুলে ধরতে হবে নির্বিঘ্নে। মতবিনিময় সভায় রাজশাহী ব্যুরো প্রধান রেজাউল করীম রাজু, চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান শফিউল আলম, বগুড়া ব্যুরো প্রধান মহসিন আলী রাজু, বরিশাল ব্যুরো প্রধান মো. নাছিম উল আলম, কক্সবাজার ব্যুরো প্রধান শামসুল হক শারেক, ময়মনসিংহ ব্যুরো প্রধান মো. শামসুল আলম খান, সিলেট ব্যুরো প্রধান ফয়সাল আমীন, যশোর ব্যুরো প্রধান শাহেদ রহমান, খুলনা ব্যুরো প্রধান আসাফুর রহমান কাজল, দিনাজপুর অফিস প্রধান মো. মাহফুজুল হক আনার, চট্টগ্রামের বিশেষ সংবাদদাতা রফিকুল ইসলাম সেলিম, বেনাপোল অফিস প্রধান মহসিন মিলন, লক্ষ্মীপুরের স্টাফ রিপোর্টার এস এম বাবুল (বাবর), নোয়াখালী জেলা সংবাদদাতা এহসানুল আলম খসরু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।