ছাত্রলীগকে আর ফিরতে দেয়া যাবে না -প্রেস সচিব
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, আওয়ামী লীগ বর্তমানে একটি ফ্যাসিবাদী দল। এই ফ্যাসিবাদী দলকে বাংলাদেশে কোনো প্রতিবাদ কর্মসূচি করতে দেওয়ার সুযোগ নেই। ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামীলগকে ফ্যাসিবাদী দল উল্লেখ করে দলটিকে ‘এর বর্তমান রূপে’ দেশে কোনো ধরনের মিছিল-সমাবেশ বা প্রতিবাদ করার অনুমতি দেওয়া হবে না গতকাল শনিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে শফিকুল আলম এ কথা বলেন। তিনি বলেন, বর্তমান আওয়ামীলীগ একটি ফ্যাসিবাদী দল। এই ফ্যাসিবাদী দলকে বাংলাদেশে কোনো ধরনের রাজনৈতক তৎপরতা চালানোর অনুমতি দেওয়া হবে না। গণহত্যাকারী ও স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার নির্দেশে যারা সমাবেশ, জমায়েত বা মিছিল করার চেষ্টা করবে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাদের কঠোরভাবে মোকাবিলা করবে। অন্তর্বর্তী সরকার দেশে কোনো ধরনের সহিংসতা বা আইন-শৃঙ্খলা ভঙ্গের চেষ্টা বরদাশত করবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন শফিকুল আলম। ফেসবুক পোস্টে তার বক্তব্যের বিষয়ে প্রেস সচিব বাসসকে বলেন, এত বড় গণহত্যা চালানোর পরও দলটির মধ্যে কোনো ধরনের অনুশোচনা নেই। এই গণহত্যাকারী দলটি রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী পূর্ণ শক্তি দিয়ে তাদের মোকাবিলা করবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। আজ রোববার বিকেল তিনটায় রাজধানীর জিরো পয়েন্টে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে আওয়ামী লীগ। তবে আওয়ামী লীগকে ফ্যাসিবাদী দল উল্লেখ করে তাদের কোনো কর্মসূচি বা সমাবেশ করার অনুমতি দেয়া হবে না। আওয়ামী লীগ তার বর্তমান রূপে একটি ফ্যাসিবাদী দল। এই ফ্যাসিবাদী দলের বাংলাদেশে বিক্ষোভ করার কোনো সুযোগ নেই। গণহত্যাকারী ও স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার নির্দেশ নিয়ে কেউ সমাবেশ, মিছিল করার চেষ্টা করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পূর্ণশক্তি দিয়ে মোকাবিলা করবে। অন্তর্বতী সরকার কোনো সহিংসতা বা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভঙ্গের কোনো প্রচেষ্টাকে বরদাশত করবে না। অন্যদিকে, আজ রোববার বিকাল ৩টায় শহিদ নূর হোসেন চত্বরে অগণতান্ত্রিক শক্তির অপসারণ এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দিয়েছে। নিজেদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে আওয়ামী লীগ জানায়, ‹আমাদের প্রতিবাদ দেশের মানুষের অধিকার হরণের বিরুদ্ধে, আমাদের প্রতিবাদ মৌলবাদী শক্তির উত্থানের বিরুদ্ধে, আমাদের প্রতিবাদ সাধারণ মানুষের জীবন যাত্রাকে ব্যাহত করার চক্রান্তের বিরুদ্ধে। উক্ত মিছিলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনসমূহের নেতাকর্মীসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী সাধারণ মানুষকে অংশগ্রহণের জন্য অনুরোধ জানিয়েছে দলটি। এছাড়া, দেশব্যাপী সব জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কর্মসূচি পালনেরও আহ্বান জানানো হয় আওয়ামী লীগের ওই বিজ্ঞপ্তিতে।উল্লেখ্য, ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর, আওয়ামী যুবলীগ নেতা নূর হোসেন তৎকালীন স্বৈরাচারী শাসক জেনারেল এইচএম এরশাদের বিরুদ্ধে রাজধানীর জিরো পয়েন্ট এলাকায় বিক্ষোভ করার সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন। এদিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘নিরাপদ বাংলাদেশ চাই’ শিরোনামে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, সুষ্ঠু পরিবেশে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার জন্য ছাত্রলীগকে আর ফিরতে দেওয়া যাবে না। ক্যাম্পাস সন্ত্রাসীমুক্ত রাখতে হবে। এ জন্য দরকার সুস্থ ধারার কার্যক্রম পরিচালিত করা। এ সময় তিনি নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের গত ১২ বছরের কার্যক্রম তুলে ধরে একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের ওপর করা একটি গবেষণা। তিনি বলেন, এই গবেষণা প্রমাণ করে ছাত্রলীগ কেন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ কতটা উগ্র ছিল। মূলত নতুন করে রাষ্ট্র মেরামত করতে হলে শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস দূর করতে হবে। শফিকুল আলম বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সারা দেশে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মাধ্যমে ছাত্রলীগ অনিরাপদ পরিবেশ তৈরি করেছিল। এ জন্যই ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আর যেন কোথাও ছাত্রলীগ তৈরি হতে না পারে সে পরিবেশ তৈরি করতে হবে। এ জন্য শিক্ষার্থী এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান ও শিক্ষকদের ভূমিকা রাখতে হবে। সুষ্ঠু একটি দেশ গড়তে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।