কুষ্টিয়ায় নিখোঁজ পুলিশ কর্মকর্তার মরদেহ উদ্ধার
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে পদ্মা নদীতে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছিল দুষ্কৃতকারীরা। এ ঘটনায় নৌকা থেকে নদীর পানিতে পড়ে পুলিশের দুই সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) নিখোঁজ হন। নিখোঁজের একদিন পর এএসআই সদরুল আলমের মরদেহ উদ্ধার করেছেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বিকেল ৩টার দিকে কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহ এলাকায় নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিখোঁজ অপর এএসআই মুকুল হোসেনকে উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমারখালী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম। এর আগে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার পদ্মা নদীতে পুলিশ ও স্থানীয় দুই ইউপি সদস্যর ওপর দুর্বৃত্তদের হামলার অভিযোগ উঠেছে।এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত দুই পুলিশ সদস্য নিখোঁজ রয়েছেন।তবে কি কারণে হামলার ঘটনা ঘটেছে তা নিশ্চিত করে জানাইনি পুলিশ। সোমবার (২৮ অক্টোবর) ভোর ৪টার দিকে কুমারখালী উপজেলার বেড় কালোয়া এলাকার পদ্মা নদীতে এ ঘটনা ঘটে।এ ছাড়া হামলায় দুই ইউপি সদস্য আহত হয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। আহতরা হলেন, কয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ছানোয়ার হোসেন ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আনোয়ার হোসেন তাঁদের মোবাইল ফোন নম্বর বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে এ ঘটনায় উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা বলছেন রাতে তাঁদের কোনো অভিযান ছিল না।আর স্থানীয়রা জানিয়েছেন জেলেদের কাছে অনৈতিক সুবিধা দাবি করায় হামলা চালিয়েছে তাঁরা। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার ভোর ৪টার দিকে একটি নৌকায় স্থানীয় দুই ইউপি সদস্য ছানোয়ার ও আনোয়ার কুমারখালী থানার চারজন পুলিশকে নিয়ে পদ্মা নদীতে যান।এ সময় অবৈধভাবে জাল ফেলে মাছ নিধন করছিলেন জেলেরা।পুলিশের নৌকাটি জেলেদের দিকে এগিয়ে গেলে দুর্বৃত্তরা তাঁদের ওপর হামলা চালিয়ে মারধর করে। এ সময় নৌকায় থাকা এএসআই সদরুল আলম ও এএসআই মুকুল হোসেন নদীতে ঝাঁপ দেন।এরপর থেকেই তাঁরা নিখোঁজ রয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা চললেও পদ্মা নদীতে প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে মাছ শিকার করছে জেলেরা।ওই এলাকায় জেলেদের প্রধান ইয়ারুল।পদ্মায় তাঁর নেতৃত্বে একটি বাহিনীও আছে।সোমবার ভোরে স্থানীয় ইউপি সদস্যদের সহযোগিতায় কয়েকজন পুলিশ নৌকা নিয়ে পদ্মা নদীতে যান।এ সময় তাঁরা অভিযানের নামে জেলেদের মাছ লুটে নেওয়ার চেষ্টা করে।এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বেশ কয়েকটি নৌকায় ১৫-২০ জন তাঁদের ওপর হামলা চালান।হামলাকারীদের মাথায় হেলমেট পড়া ছিল। এ ঘটনায় কুমারখালীর সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহমাদুল হাসান বলেন, ‘রাতে মৎস্য অভিযান ছিল না। পদ্মায় পুলিশ কেন গেছে তা জানি না।’ এ বিষয়ে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) পলাশ কান্তি নাথ বলেন, পদ্মায় একটি ঘটনায় কুমারখালী থানা-পুলিশের দুজন উপসহকারী পরিদর্শক (এএসআই) নিখোঁজ রয়েছে। তাদের উদ্ধারে পুলিশের একাধিক দল নৌকা নিয়ে পদ্মায় তল্লাশি চালাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, তবে তারা কি কারণে এখানে এসেছিল সেটা এখনো পর্যন্ত পরিষ্কারভাবে জানতে পারেননি। পরে বিস্তারিত জানানো হবে। ঘটনাস্থলে এসপিসহ তিনি রয়েছেন বলে জানান এই কর্মকর্তা।