মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসীদেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল : এমএ মালেক
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও লন্ডন বিএনপি সভাপতি এমএ মালেক বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসীদেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। সোমবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে সংবর্ধিত অতিথি হিসেবে তিনি এ কথা বলেন। এমএ মালেক বলেন, ১৭ বছর পর দেশের মাটিতে পা রাখলাম। আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি। প্রবাসে বসে মা-ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। তাদের লাশ দেশে আনতে পারিনি। আমার সিলেট সুরমা উপজেলার বাড়ি থেকে টয়লেটের কমোড পর্যন্ত তারা নিয়ে গেছে। আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। তবুও আমাকে দমাতে পারেনি। আপনারা জানেন, ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রধানমন্ত্রী আমাকে লন্ডনে চায়ের দাওয়াত দিয়েছিল, আমি প্রত্যাখ্যান করেছি। খুনি হাসিনা আমার নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বছরের পর বছর কারাগারে রেখেছে। আমার নেতা তারেক রহমানকে প্রবাসে থাকতে বাধ্য করেছে। তার সঙ্গে কিসের চায়ের নিমন্ত্রণ। গত ১৭ বছর এম ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলম, সুমনসহ প্রায় ৬ শতাধিক বিএনপির নেতাকর্মীকে গুম করেছে। স্বাধীন বাংলাদেশের দুই মাসের অধিক সময় পার হয়ে গেলও এখনো কেউ ফিরে আসেনি কেন? আমি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. ইউনূসকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। তিনি সারা পৃথিবীতে অত্যন্ত সম্মানিত একজন ব্যক্তি। তার হাতে দেশ ও জাতি নিরাপদ। তিনি অতি দ্রুত সংস্কার শেষ করে দেশে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন বলে আমি বিশ্বাস করি। তিনি বলেন, আপনাদের নেতা, আমার নেতা তারেক রহমান অচিরেই বাংলাদেশে আগমন করবেন। আমি সত্যিই অভিভূত যখন হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে লাখ লাখ মানুষ আমাকে স্বাগত জানাতে গিয়েছে। আমার সঙ্গে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীরউত্তমের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে গিয়েছে, তাদের এবং বাংলাদেশের ও আন্তর্জাতিক সব গণমাধ্যমকে আমি আমার পরিবারের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমার বাড়িতে যখন আগুন লাগিয়েছে তখন আমার কেয়ারটেকার সে ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেছে, সে বিচার আজও হয়নি। আজও সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার বিচার হয়নি। বাংলাদেশের জুলাই অভ্যুত্থানে যাদের রক্তের বিনিময়ে আমরা এ দেশের মাটিতে পা রাখতে পেরেছি তাদের হৃদয় দিয়ে দোয়া করছি, আল্লাহ যেন তাদের জান্নাত দান করেন। তিনি আরও বলেন, যারা পঙ্গু রয়েছে তাদের পাশে দাঁড়ান, নির্বাচনের সময় কোটি কোটি টাকা খরচ করেন অথচ যাদের জন্য নতুন বাংলাদেশ পেলেন তারা পঙ্গুত্ব বরণ করে মানবেতর জীবন-যাপন করছে তাদের দেখবেন না, নতুন নির্বাচনে এমপি-মন্ত্রী হবেন- এটি জাতি কখনো মেনে নেবে না। তিনি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি করেন। এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীরা স্লোগানমুখর তাকে স্বাগত জানান। এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন গুম হওয়া এম ইলিয়াস আলীর সহধর্মিণী, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য রুশদীর লুনা, বিএনপির সহ-সম্পাদক নিলোফার চৌধুরী মনি, বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য রফিক শিকদার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক, সাবেক কমিশনার নবীউল্লা নবী, জাতীয় মানবাধিকার সমিতি চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, কাজী খায়রুজামান শিপন, শিক্ষাবিদ ড. ফারদিন ইসলাম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতা নিজাম উদ্দিন দরবেশ প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাপ্তাহিক জয়যাত্রা পত্রিকার প্রধান সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু ও এমএ মালিক, স্বদেশ প্রত্যাবর্তন কমিটির এম জাকারিয়া মাহমুদ। ১০ বছর আগে জাতীয় প্রেস ক্লাবে লন্ডন বিএনপির সভাপতি এমএ মালেকের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত নাগরিক মুভমেন্টের একটি গুরুত্বপূর্ণ সভা তার অনুপস্থিতিতে তৎকালীন সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমেদের উপস্থিতিতে এবং মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসার নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।