এইচএসসির ফল: যেভাবে পাবেন নম্বরসহ মার্কশিট
উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হবে মঙ্গলবার। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত জীবনের জন্য এ পরীক্ষার ফল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এ পরীক্ষার ফলই নির্ভর করছে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত গন্তব্য। এবারের পরীক্ষায় ১৪ লাখের বেশি শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। তাদের প্রত্যেকে ভালো স্কোর পাওয়ার স্বপ্ন দেখছে। শুধু শিক্ষার্থীরা নয়, অভিভাবকরাও অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন এইচএসসি পরীক্ষার স্কোর জানার জন্য। কীভাবে ফল জানবেন এ নিয়ে অনেক অভিভাবক উদ্বিগ্ন। নিচের নির্দেশনা অনুসরণ করলেই সহজেই জানতে পারবেন এইচএসসির ফল। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাবোর্ডের ওয়েবসাইট ও মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে পরীক্ষার ফল জানতে পারবেন। এছাড়া ঘরে বসেও জানা যাবে ফল। নিচে এ বিষয়ে বিস্তারিত দেওয়া হল- ১. শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে যেভাবে জানা যাবে পরীক্ষার ফল পাওয়ার সবচেয়ে পুরনো পদ্ধতি হচ্ছে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে। ফল প্রকাশের দিন বেলা ১১টার পরে শিক্ষার্থীরা তাদের কলেজ বা স্কুলে গিয়ে ফল প্রিন্টআউটের জন্য অনুরোধ করতে পারে। পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানকে এক্সেস দেওয়া হবে যার মাধ্যমে তাদের ছাত্রদের রেজাল্ট দেখতে পাবে এবং সহজেই প্রিন্ট করে নোটিশ বোর্ডে ফলগুলো ঝুঁলিয়ে দিতে পারবে। এতে শিক্ষার্থীরা সহজেই তাদের ফল জানতে পারবে। ২. অনলাইনে পাবেন এএইচএসসির ফল যদি আপনি পরীক্ষার ফল অনলাইনে দেখতে চান তাহলে বেশ কয়েকটি ওয়েবসাইট আছে যেগুলোর যেকোনো একটিতে প্রবেশ করতে হবে। যেখানে নিদিষ্ট কিছু তথ্য দিয়ে প্রবেশ করে আপনার মার্কশীট দেখতে পারবেন। বিশেষ করে নিদিষ্ট স্থানে আপনার এইচএসসির রোল নাম্বার এবং এইচএসসির রেজিস্টেশন নাম্বার দিয়ে প্রবেশ করতে হবে। পরে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ড নির্বাচন করুন এবং আপনার পরীক্ষার বছর (২০২৪) লিখুন। এরপর আপনার ফল দেখতে সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন। নিচের ওয়েবসাইটগুলোতে ক্লিক করে ফলাফল জানতে পারবেন https://www.dhakaeducationboard.gov.bd/site/ http://www.educationboardresults.gov.bd/ https://eduboardresults.gov.bd/ ৩. এসএমসের মাধ্যমে জানা যাবে ফল ইন্টারনেট ছাড়াই এই পদ্ধতিতে ফল জানতে পারবেন। সরকারি উদ্যোগে সহজ পদ্ধতিতে রেজাল্ট জানার ব্যবস্থা করেছে। যেসব এলাকায় ইন্টারনেট বহুল ব্যবহত হয়ে উঠেনি এই পদ্ধতির মাধ্যমে ফল জেনে থাকে। প্রার্থীরা অনলাইনে বা মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে ফল জানতে হলে মোবাইল ফোনের মেসেজ অপশনে গিয়ে HSC লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে আবার স্পেস দিয়ে পাসের বছর লিখে পাঠাতে হবে ১৬২২২ নম্বরে। উদাহরণ—HSC DHA 123456 2024 লিখে পাঠাতে হবে ১৬২২২ নম্বরে। ফিরতি এসএমএসে জানা যাবে ফলাফল। নিচে সব শিক্ষাবোর্ডের আলোকে এসএমএস পাঠানোর ফরমেট দেওয়া হলো Board Name Format Dhaka Board HSC DHA 227755 2024 Chittagong Board HSC CHI 227755 2024 Rajshahi Board HSC RAJ 227755 2024 Comilla Board HSC COM 227755 2024 Jessore Board HSC JES 227755 2024 Barisal Board HSC BAR 227755 2024 Sylhet Board HSC SYL 227755 2024 Dinajpur Board HSC DIN 227755 2024 Mymensingh Board HSC MYM 227755 2024 Madrasah Board ALIM MAD 227755 2024 Technical Board HSC TEC 227755 2024 এএইচএসসি ফলে যেভারে গ্রেডিং সিস্টেম করা হয় এইচএসসি পরীক্ষায় গ্রেড পয়েন্ট গড় (জিপিএ) ওপর ভিত্তি করে গ্রেডিং সিস্টেম হয়ে থাকে। গ্রেড নির্ভর করে প্রতিটি বিষয়ে প্রাপ্ত নম্বরের ওপর নির্ভর করে সর্বোচ্চ A+ থেকে F (ফেল) গ্রেড প্রদান করে। একজন শিক্ষার্থীর জন্য সামগ্রিক GPA হল বিভিন্ন বিষয়ে অর্জিত সমস্ত গ্রেডের গড়। Marks Range Grade Grade Point 80-100 A+ 5.00 70-79 A 4.00 60-69 A- 3.50 50-59 B 3.00 40-49 C 2.00 33-39 D 1.00 0-32 F 0.00 যেভাবে গ্রেড পয়েন্ট নির্ধারণ হয় প্রথমত, প্রতিটি বিষয়ে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে গ্রেড নির্ধারণ করা হয়। বাংলাদেশে সাধারণত নিচের গ্রেডিং সিস্টেম অনুসরণ করা হয়: দ্বিতীয়ত, প্রতিটি বিষয়ের জন্য প্রাপ্ত গ্রেড পয়েন্ট (GP) নির্ধারণ করা হয়। প্রতিটি বিষয়ের গ্রেড পয়েন্ট আলাদাভাবে গাণিতিক পদ্ধতিতে নির্ধারণ করা হয়। তৃতীয়ত, প্রতিটি বিষয়ের গ্রেড পয়েন্ট যোগ করে মোট গ্রেড পয়েন্ট নির্ধারণ করা হয়। শেষ ধাপে, মোট গ্রেড পয়েন্টকে পরীক্ষায় দেওয়া বিষয়গুলোর সংখ্যায় ভাগ করা হয়। বিশেষ বিবেচনায় প্রকাশিত হচ্ছে এবারের এইচএসসির ফল ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত হওয়া এইচএসসি পরীক্ষা বিশেষ পরিস্থিতিতে প্রস্তুত করা হয়েছে। এবারের পরীক্ষাটি মূলত ৩০ জুন শুরু হওয়ার কথা ছিল কিন্তু সারা দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং বিক্ষোভের কারণে স্থগিত হয়। পরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে প্রেক্ষিতে ৬টি পরীক্ষা বাতিল হয়। পরে শিক্ষার্থীরা যাতে ক্ষতির মুখে না পড়ে সেটা বিবেচনা করে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট এসএসসি, ও অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের ওপর ভিত্তি করে বাতিল পরীক্ষাগুলোর ফলাফল নির্ধারণ করা হয়েছে। যদিও এমন সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের মধ্যে কিছু বিতর্ক সৃষ্ঠি হয়েছিল। যেভাবে হবে সাবজেক্ট ম্যাপিং কোনো পরীক্ষার্থী এসএসসি ও এইচএসসিতে একই বিভাগের হলে ফল তৈরি এসএসসির ভিত্তিতে। কেউ যদি এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগে থাকার পর এইচএসসিতে বাণিজ্য বা মানবিক বিভাগে চলে আসে সেক্ষেত্রে কীভাবে ফল নির্ধারণ করা হবে, তা নিয়ে জানার আগ্রহ বেশি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক তপন কুমার সরকার জানিয়েছেন, এটা সাবজেক্ট ম্যাপিং নীতিমালায় স্পষ্ট করে বলা আছে। ধরুন— কেউ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি দিয়েছিল। তিনি সেখানে পদার্থবিজ্ঞানে ৮৫ নম্বর পেয়েছিল। এবার সে এইচএসসিতে মানবিক বিভাগে চলে এসেছে। তার হয়তো পদার্থবিজ্ঞানের জায়গায় পৌরনীতি বা সমাজকল্যাণ আছে। অথবা অন্য কোনো বিষয়। তাকে পৌরনীতিতে এবার পদার্থবিজ্ঞানে এসএসসিতে যে নম্বর ছিল, সেটা পুরোটা দেওয়া হবে। একইভাবে কেউ এসএসসিতে উচ্চতর গণিত পড়েছে, পরীক্ষা দিয়েছে এবং তাতে ৭৫ নম্বর পেয়েছে। কিন্তু এইচএসসিতে সে বাণিজ্য বিভাগে চলে এসেছে। তাহলে তাকে উচ্চতর গণিতের ওই নম্বরটা হিসাববিজ্ঞান বা ব্যবস্থাপনা বিষয়ে দেওয়া হবে। এভাবে বিভাগ পরিবর্তন করা পরীক্ষার্থীদের কোন বিষয়ের পরিবর্তে কোন বিষয়কে ধরা হবে, তা নীতিমালায় আছে। কেউ এতে বঞ্চিত হবেন না’ যোগ করেন বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার। তিনি আরও বলেন, এটা নিয়ে কোনো ধোঁয়াশা বা রহস্য সৃষ্টির সুযোগ নেই। আমাদের করোনাকালীন ফল প্রকাশের অভিজ্ঞতা রয়েছে। বিশেষজ্ঞ কমিটি, টেবুলেশন শিট তৈরি ও মাঝপথে পরীক্ষা বাতিল হওয়ার বিষয়ে বোর্ডের সুস্পষ্ট নীতিমালা রয়েছে। নীতিমালা মেনেই বোর্ড ফল প্রস্তুত করেছে। কেউ বঞ্চিত হওয়ার সুযোগ নেই।