দুই বছরে দ্বিতীয়বার অন্তঃসত্ত্বা, চাকরি হারালেন অধ্যক্ষ
চট্টগ্রাম ইমপেরিয়াল কলেজ অব নার্সিং ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষকে জোর করে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, মধ্যরাতে তার আট মাস বয়সি শিশুসহ ওই নারী শিক্ষককে কলেজের হোস্টেল থেকে বের করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। দুই বছরে দ্বিতীয়বার অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার কারণে এমন আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ডলি আক্তার নামে ওই শিক্ষক। বুধবার নগরীর অ্যাপোলো ইমপেরিয়াল হসপিটালে এ ঘটনা ঘটে। চট্টগ্রাম ইমপেরিয়াল কলেজ অব নার্সিং ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম মেডিকেল ইউনিভার্সিটির (সিএমইউ) অধিভুক্ত একটি প্রতিষ্ঠান। ভুক্তভোগী ডলি আক্তার বলেন, শারীরিক অসুস্থতায় গত ২১ সেপ্টেম্বর ইমপেরিয়াল হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের চিকিৎসক দিল আনজিজ বেগমের কাছে যান তিনি। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানতে পারেন তিনি পুনরায় অন্তঃসত্ত্বা হয়েছেন। কলেজ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানার পর থেকে নানাভাবে হেনস্তা করা শুরু করে। একপর্যায়ে প্রতিষ্ঠানটির মানবসম্পদ বিভাগে ডেকে নিয়ে কর্মকর্তারা বলেন, আপনি গত বছরও চার মাস মাতৃত্বকালীন ছুটি নিয়েছিলেন, এই বছরও আবার ছুটি নেবেন। এভাবে চলতে পারে না। বর্তমানে আপনার হাতে দুটি অপশন রয়েছে- আপনি পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে বিদায় হবেন, অন্যথায় আমরা আপনাকে টার্মিনেট করব। তিনি আরও জানান, পদত্যাগ না করায় ৯ অক্টোবর বিকালে কর্তৃপক্ষ তাকে মানবসম্পদ বিভাগে ডেকে নিয়ে তৎক্ষণাৎ পদত্যাগ করতে জোর করেন। এরপর তিনি যখন পদত্যাগ করবেন না বলে জানান, তখন তাকে একটি চাকরিচ্যুতির নোটিশ ধরিয়ে দেয় এবং তৎক্ষণাৎ কলেজ সংক্রান্ত সব কাগজপত্র কলেজ সেক্রেটারির কাছে বুঝিয়ে দিয়ে কলেজ হোস্টেল ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলেন। তার পরিবার ঢাকায় থাকে বিধায় তিনি কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন হোস্টেল ত্যাগের জন্য যেন তাকে কয়েক দিন সময় দেওয়া হয়। এতে তার স্বামী এসে তাকে নিয়ে যেতে পারবেন; কিন্তু কর্তৃপক্ষ অমানবিকভাবে তাকে ওই দিনই মধ্যরাতে আট মাস বয়সি সন্তানসহ অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় কলেজের হোস্টেল থেকে বের করে নগরীর হোটেল পেনিনসুলায় রেখে আসে। ডলি আক্তার বলেন, প্রায় তিন বছর কলেজ হোস্টেলে অবস্থান করে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। এমনকি গত বছর মাতৃত্বকালীন ছুটির সময়ও হোস্টেলে অবস্থান করে কলেজের কাজে সহযোগিতা করেছি। এরপরও কর্তৃপক্ষ আমার ওপর এমন অমানবিক আচরণ কিভাবে করতে পারল। তাছাড়া নার্সিং কলেজটি চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত একটি প্রতিষ্ঠান। বিধি অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের উপাচার্যসহ প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষেই অধ্যক্ষ নিয়োগ ও চাকরিচ্যুত করা যায়; কিন্তু এক্ষেত্রে কোনো নিয়ম অনুসরণ করা হয়নি। এ বিষয়ে অ্যাপোলে ইমপেরিয়াল হসপিটালের মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান মো. আরিফুর রহমানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও রিসিভ না করায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অপরদিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ডা. মো. ওমর ফারুক ইউসুফের সঙ্গেও যোগাযোগ করে বক্তব্য পাওয়া যায়নি।