বাংলাদেশে ইসলামি উগ্রবাদ হলে ভারতের উগ্রবাদীদের জন্য সহায়ক হয়
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান নিয়ে ‘অপপ্রচার’ চালানো হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। তার মতে, বাংলাদেশে ইসলামি উগ্রবাদ তৈরি হলে ভারতের যারা উগ্রবাদী রয়েছে, তাদের জন্য সহায়ক হয়। সেই জায়গা থেকে এই অপপ্রচার চালানো হয়ে থাকতে পারে। রোববার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এক সেমিনারে এ কথাগুলো বলেন নাহিদ ইসলাম। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলমকে নিয়ে ভারতের দুটি পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি। ছাত্র-জনতার আন্দোলন নিয়ে অপপ্রচার প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, এই আন্দোলনকে নিয়ে ভারতসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মিডিয়ায় অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। বৈষম্যবিরোধী অভ্যুত্থানের অন্যতম আন্দোলনকারী এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলমকে নিয়ে বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে। ভারতের পত্রিকা ‘ইকোনমিক টাইমস’ কোনও ধরনের তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই মাহফুজ আলম সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করেছে। সেই একই সুর আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রতিফলিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এ ধরনের অপপ্রচারকে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা হচ্ছে যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। নাহিদ ইসলাম বলেন, যখন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মাহফুজ আলম বৈশ্বিক মঞ্চে দাঁড়ালেন এবং আন্দোলনকে বৈশ্বিকভাবে পরিচিত করালেন, তখন থেকেই এই অপপ্রচার ছড়ানোর বিষয়টি বেশি করে হচ্ছে। কী উদ্দেশ্যে এসব ছড়ানো হচ্ছে, তা বোঝা দরকার বলে উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের এই অভ্যুত্থানকে একধরনের ইসলামি উগ্রবাদের সঙ্গে মেলানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। দেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে যে বাংলাদেশে একধরনের উগ্রবাদের উত্থান ঘটছে এবং তাদের হাতেই এই অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে। যেটি একেবারেই সত্য নয়; বরং একটি ইঞ্জিনিয়ারিং করা হচ্ছে। কারণ আমরা জানি, বাংলাদেশে ইসলামি উগ্রবাদ তৈরি হলে ভারতের যারা উগ্রবাদী রয়েছে, তাদের জন্য সহায়তা হয়। বিভিন্নভাবে এই অভ্যুত্থান ও অন্তর্বর্তী সরকারকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অভ্যুত্থানকে ইসলামিক উগ্রবাদের সঙ্গে মেলানোর চেষ্টা করা হচ্ছে যা একেবারে সত্য নয়। সাম্প্রতিক অভ্যুত্থানকে বিপ্লবে রূপ দেওয়ার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সবাইকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। দক্ষিণ এশিয়ায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা যদি গণতান্ত্রিক দক্ষিণ এশিয়া তৈরি করতে চাই, তাহলে আমাদের অবশ্যই সব ধরনের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। সেমিনারে আরও বক্তৃতা করেন অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী প্রমুখ।