খাগড়াছড়িতে শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা
পাহাড়ি জেলা খাগড়াছড়িতে এবার শিক্ষার্থীকে ‘ধর্ষণের অভিযোগ’ তুলে আবুল হাসনাত মুহাম্মদ সোহেল রানা নামে এক শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) দুপুরে খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর দুটি পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষক সোহেল রানা প্রতিষ্ঠানটির বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন ও সেফটি বিভাগের চিফ ইনস্ট্রাক্টর ছিলেন। আর যাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে, সে একই প্রতিষ্ঠানের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। ঘটনাটির পর পুলিশ সোহেল রানার মরদেহ খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। এরই মধ্যে এ ঘটনার বেশ কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েছে। একটি ভিডিওতে ‘ধর্ষণের শিকার’ দাবি করা ছাত্রীকে বলতে শোনা যায়, সকালে জামা কিনে দেওয়ার কথা বলে অভিযুক্ত শিক্ষক তাকে রুমে আসতে বলেন। পরে তাকে ধর্ষণ করা হয়। ঘটনাটি জানাজানি হলে শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এসময় অভিযুক্তকে অধ্যক্ষের রুমে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। আরেক ভিডিওতে দেখা যায়, অধ্যক্ষের রুমে ১০-১৫ জন পাহাড়ি কিশোর-যুবক অভিযুক্ত শিক্ষক সোহেল রানাকে এলোপাতাড়ি মারতে থাকেন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় পুলিশ তাকে উদ্ধার করা খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. রিপল বাপ্পি চাকমা বলেন, হাসপাতালে আনার আগে ওই ব্যক্তি মারা গেছেন। ময়নাতদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে। এ বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিস্তারিত বক্তব্য পাওয়া যায়নি। খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল বাতেন মৃধার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনায় নিজে আহত জানিয়ে কল কেটে দেন। ঘটনাটি সম্পর্কে খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ভোরে চোর সন্দেহে খাগড়াছড়িতে মো. মামুন (৩০) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। এরপর খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে সহিংসতা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। পরে পরিবেশ কিছুটা শান্ত হলে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হয়।