খুনী হাসিনাকে দেশে ফেরত পাঠানোর সকল ব্যবস্থা করুন: ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে কিন্তু তার প্রেতাত্মারা এখনো দেশের মধ্যেই আছে। তারা এখন দেশের বিভিন্ন জায়গায় ষড়যন্ত্র করছে। সবচেয়ে বড় যড়যন্ত্র করছে শিল্প এলাকাতে। শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি ডিগ্রি কলেজ মাঠে গাজীপুর জেলা ও মহানগর শ্রমিক দল আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা ভারতের কাছে অনুরোধ করেছি, আপনারা এমন একজন খুনীকে জায়গা দেবেন না, যে গণহত্যা করেছে তাকে জায়গা দেবেন না। যে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে। মানুষ খুন করেছে এবং অনেক গণহত্যার আসামি হয়েছে। তারা এখন পর্যন্ত কিছু বলেনি। বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের কাছে আহ্বান জানাব- আপনারা অবিলম্বে গণহত্যাকারী, দেশ ধ্বংসকারী, রাষ্ট্রবিরোধী, গণতন্ত্র বিরোধী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনুন। অভিযোগগুলোর ভিত্তিতে তার বিচারের দাবিতে তাকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য ভারত সরকারের কাছে চিঠি দেন। ভারতের কাছে আবারও অনুরোধ জানাচ্ছি এই গণহত্যাকারী, মানুষ খুনকারী, খুনী হাসিনাকে দেশে ফেরত পাঠানোর সকল ব্যবস্থা করুন। সরকারকে আবারও বলছি তার জন্য যে আইনগত ব্যবস্থা আছে তা গ্রহণ করুন।’ তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার প্রেতাত্মারা দেশের মধ্যে থেকে ষড়যন্ত্র করছে, তারা যে লুটপাট, চুরি করেছে, বিদেশে টাকা পাচার করেছে এগুলো তারা ভুলতে পারছে না। তারা ভাবছে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনতে পারলে আবার চুরি করতে পারতাম, লুটপাট করতে পারতাম। এজন্যই দেশের শিল্পকারখানা বিশেষ করে পোশাক শিল্প ধ্বংসের জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। তাদের সঙ্গে বাহিরের শক্তি কাজ করছে। তারা ষড়যন্ত্র করেছে, যাদের স্বার্থ রয়েছে। তারা জানে আমাদের শিল্প ধ্বংস হলে তাদের দেশে কাজ চলে যাবে।’ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য ফখরুল বলেন, ‘আমাদের শিল্পকে আমাদের রক্ষা করতে হবে। শ্রমিকদের সঙ্গে নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতিহত করুন। মনে রাখবেন দেশের ৫০ লাখের বেশি মানুষ এ পেশার সঙ্গে জড়িত। আমাদের বৈদেশিক আয়ের সিংহভাগ এ শিল্প থেকে আসে।’ তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকার জন্য সমস্ত রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। বিশেষ করে পুলিশ বাহিনীকে ব্যবহার করেছে। তাকে দিয়ে গুলি করে, হত্যা করে, মিথ্যা মামলা দিয়ে, জেলে নিয়ে নির্যাতন করে, অকথ্য অত্যাচার করে বাংলাদেশের মানুষকে একটা ভীতির রাজত্বে নিয়ে গেছে। আমরা এখন দম ফেলতে পারছি, রাতে শান্তিতে ঘুমাতে পারছি।’ বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘ড. ইউনূসকে সারা পৃথিবীর মানুষ শ্রদ্ধা করে। তিনি দেশের কয়েকজন বিশিষ্ট লোকদের নিয়ে সরকার গঠন করেছেন। আমরা তাদের বলেছি আওয়ামী লীগের জঞ্জাল মুক্ত করে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচন দিতে। আমরা ভোট দিতে চাই, ভোটের মাধ্যমে সরকার ও পার্লামেন্ট নির্বাচন করতে চাই।’ সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন- বিএনপির চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী সামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আনোয়ার হোসেন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মজিবুর রহমান ও হাসান উদ্দিন সরকার, গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি শওকত হোসেন সরকার প্রমুখ। সমাবেশে মহানগর ও জেলার শ্রমিক দল এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।