ডেকে নিয়ে বোট মালিক সমিতির সভাপতিকে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ
কক্সবাজারের টেকনাফে মো. শহিদ নামে এক ব্যক্তিকে অস্ত্রসহ আটকের নামে তাকে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে কোস্ট গার্ডের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীর পরিবার ও স্থানীয়দের দাবি, শহিদকে ফোনে ডেকে নিয়ে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে। শনিবার সকালে কোস্ট গার্ড সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মো. সিয়াম-উল-হক জানান, টেকনাফের সাবরাং এলাকার বাসিন্দা মো. শহিদ দীর্ঘদিন ধরে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে অস্ত্র পাচার করে টেকনাফের কুখ্যাত ডাকাতদের সরবরাহ করে আসছিলেন। এমন তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার রাতে তার বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে একটি জি-৩ রাইফেল, ৮ রাউন্ড তাজা গুলি এবং একটি দেশীয় চাপাতি উদ্ধার করা হয়। আটক শহিদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাকে টেকনাফ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে শহিদের পরিবার ও স্থানীয়রা বলছেন, এটি একটি সাজানো ঘটনা। শহিদের স্ত্রী জেয়াছমিন করিম অভিযোগ করে বলেন, তাকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে। তিনি বলেন, ঘটনার শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে কোস্ট গার্ড থেকে শহিদের ফোনে কল আসে এবং তাকে ঘাটে যেতে বলা হয়। ঘাটের সভাপতি হিসেবে তিনি সেখানে যান এবং রাত ১১টার দিকে জানা যায়, তাকে অস্ত্রসহ আটক করা হয়েছে। শহিদের স্ত্রী আরও বলেন, ‘আমার স্বামী খালি হাতে বাইক চালিয়ে গিয়েছিলেন, যা এলাকাবাসী দেখেছে। যদি তার কাছে অস্ত্র থাকত, তবে কেউ না কেউ তা দেখত।’ আটক মো. শহিদ মুন্ডার ডেইল বোট মালিক সমিতির সভাপতি এবং সৈয়দ আহমেদের ছেলে। স্থানীয় জেলে শফিক বলেন, কোস্ট গার্ডের সদস্যরা প্রথমে ঘাটে এসে শহিদকে খুঁজতে থাকে এবং পরে তাকে নিয়ে যায়। আমরা ভেবেছিলাম এটি স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু সকালে শুনি তার কাছে ভারি অস্ত্র পাওয়া গেছে, যা আমরা কেউ দেখিনি। স্থানীয় ইউপি সদস্য সেলিম বলেন, শহিদকে দীর্ঘদিন ধরে চিনি। তিনি মুদির দোকান চালান এবং কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত নন। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, তাকে ধরার সময় তার কাছে কোনো অস্ত্র ছিল না। এটি সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্র। আমি বিষয়টি তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। এছাড়াও শহিদের বাড়িতে কোনো ধরনের অভিযানে যাওয়ার কথা জানেন না এলাকাবাসী। এদিকে কোস্ট গার্ড আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অস্ত্রসহ আটক শহিদ নিজেও দাবি করেন, আমি নির্দোষ। বোট মালিক সমিতির পদ নিয়ে বিরোধের জের ধরেই আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। সাবেক সভাপতি আমাকে কোস্ট গার্ডের হাতে তুলে দিয়েছে। আপনারা সাংবাদিকরা দয়া করে বিষয়টি অনুসন্ধান করে সত্যটা তুলে ধরুন। এই ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। শহিদকে ফাঁসানোর অভিযোগ তুলে শত শত পোস্ট ও মন্তব্য করেছেন ফেসবুক ব্যবহারকারীরা। অভিযোগের বিষয় উল্লেখ করে জানতে চাইলে অভিযানের নেতৃত্ব দেওয়া টেকনাফ স্টেশন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এইচএম লুৎফুল লাহিল মাজিদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমরা তাকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে অস্ত্র উদ্ধার করেছি। এ ঘটনার সাক্ষী রয়েছে।