অর্থাভাবে বাম চোখও হারানোর শঙ্কায় শিক্ষার্থী রায়হান
অর্থ সংকটে উন্নত চিকিৎসার অভাবে দৃষ্টি শক্তি হারানোর শঙ্কায় রয়েছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে চোখে গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থী আসাদুজ্জামান রায়হান। দেশের ৫টি হাসপাতালে চিকিৎসা শেষেও গুলিবিদ্ধ ডান চোখ ইতোমধ্যে দৃষ্টিহীন হয়ে গেছে। এর প্রভাবে তিনি বাম চোখেও ঝাপসা দেখতে শুরু করেছেন। সরকারি কোনো ধরনের সহায়তা না পাওয়া রায়হানের চোখে আলো ফেরাতে ভারতে যেতে বলেছেন দেশের চিকিৎসকরা। তাতে খরচ হবে প্রায় ১৫ লাখ টাকা। তাই সহায়তা চেয়ে সম্প্রতি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন তিনি। সেই স্ট্যাটাস দেখে প্রকৌশলী সায়েম শাহনেওয়াজ নামে ব্যবসায়ী বুধবার তার চিকিৎসায় দিয়েছেন সাড়ে ৩ লাখ টাকা। দ্রুত সময়ের মধ্যে বাকি টাকা জোগাড় করতে না পারলে চিরতরে দৃষ্টি হারানোর শঙ্কায় রয়েছেন রায়হান। তাই দ্রুত সময়ে চিকিৎসা নিশ্চিতে সরকার ও দেশের জনসাধারণের প্রতি সহায়তা চেয়েছেন তিনি। এর আগে ৪ আগস্ট বরিশাল নগরীর হাতেম আলী কলেজ চৌমাথায় তিনি গুলিবিদ্ধ হন। রায়হান নগরীর রূপাতলী এলাকার বাসিন্দা এবং ট্রাকচালক আনোয়ার হোসেনের ছেলে। তিনি নগরীর ইউনিভার্সিটি অব গ্লোবাল ভিলেজে (ইউজিবি) হিসাববিজ্ঞানের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। রায়হান বলেন, আমার ডান চোখের মধ্যে ছররা গুলি রয়েছে। দ্রুত সময়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বলা হলেও অর্থ সংকটে তা পারছি না। এ কারণে ইতোমধ্যে আমার বাম চোখেও ঝাপসা দেখতে শুরু করেছি। উন্নত চিকিৎসা না মিললে চিরতরে চোখ হারাব। এর আগেই সরকারি ও বেসরকারি সহায়তায় আমার চোখের আলো ফিরিয়ে দেওয়া হোক। রায়হান আরও বলেন, সরকার আমার কোনো খোঁজই নেয়নি। কী খেয়ে আছি না খেয়ে আছি কেউ জিজ্ঞেসও করেনি আজ পর্যন্ত। কয়েকজন ব্যক্তি এসে আহত হওয়ার খবর ও প্রেসক্রিপশন নিয়ে গেলেও কোনো সহায়তা আসেনি। রায়হানের বাবা আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি এমনিই গরিব মানুষ; সংসার চালানো দায়। এর মধ্যে ছেলের চিকিৎসা খরচ জোগানো অসম্ভব। তাই উন্নত চিকিৎসায় সবার সহযোগিতা কামনা করছি। এদিকে ব্যবসায়ী সায়েম শাহনেওয়াজ বলেন, রায়হানের ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখে তাৎক্ষণিক সাড়ে ৩ লাখ টাকা দিয়েছি। পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানরা তার পাশে না দাঁড়ালে এত টাকা জোগাড় করা অসম্ভব। তাই দলমত ভুলে রায়হানের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি। বরিশাল জেলা প্রশাসক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ঢাকার দুটি হাসপাতালে আহতদের তালিকা তৈরির ডেস্ক খোলা আছে। সেখানে গিয়ে রায়হানের নাম লিপিবদ্ধ করে সহায়তার আবেদন করতে পরামর্শ দিয়েছি। ঢাকায় যাওয়ার যাতায়াত বাবদ তাকে নগদ অর্থ প্রদান করা হয়েছে। আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের পাশে আছি।