দক্ষিণ কোরিয়ায় উত্তাল সাগরে ভেসে গেলেন বাংলাদেশি দুই বন্ধু

১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ৫:০৫ পূর্বাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

ছুটির দিনে অন্য বন্ধুদের সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার বুসান শহরের হিউন্দে সমুদ্রসৈকতে স্নানে নেমেছিলেন বাংলাদেশের দুই তরুণ সাকিবুর রহমান সঞ্জীব (২৩) ও সৈকত হাসান শান্ত (২০)। কিন্তু কে জানত, কিছুক্ষণের মধ্যেই বন্ধুদের ছুটির আনন্দ পরিণত হবে বিষাদে। উত্তাল সাগরে ভেসে গিয়েছিলেন সঞ্জীব ও শান্ত। পরে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার স্থানীয় সময় সোমবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। সঞ্জীব ও শান্ত দু’জনের বাড়িই নরসিংদীর বেলাবতে। সঞ্জীব উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের দড়িকান্দি গ্রামের মুজিবুর রহমানের ছেলে। শান্ত একই উপজেলার বেলাব টেকপাড়া গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে। সঞ্জীব ও শান্ত দুটি আলাদা ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানিতে কাজ করতেন। এর মধ্যে সঞ্জীব ২০২০ সালে এবং শান্ত চার মাস আগে বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের (বোয়েসেল) মাধ্যমে ‘এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেমে’ (ইপিএস) ই-নাইন ভিসায় দক্ষিণ কোরিয়ায় যান। তাদের মৃত্যুর খবর গ্রামের বাড়ি পৌঁছালে পরিবার, স্বজন ও প্রতিবেশীর মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তারা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সঞ্জীব ও শান্তর মরদেহ দ্রুত দেশে আনার ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। জানা গেছে, চীনে টাইফুনের কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে সাগরের ঢেউয়ের উচ্চতা বেশি থাকায় দেশটির স্থানীয় সরকার পর্যটককে সমুদ্রস্নানে না নামতে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে সবার মোবাইল ফোনে বার্তা দিয়েছিল। কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়ায় নবান্ন উপলক্ষে গত রোববার থেকে চার দিনের সরকারি ছুটি চলছে। এ উপলক্ষে আরও অনেক পর্যটকের মতো গত সোমবার এক নেপালি বন্ধুকে নিয়ে সঞ্জীব ও শান্ত হিউন্দে সৈকতে ঘুরতে গিয়ে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই সাগরে নামেন। কিন্তু এক পর্যায়ে উত্তাল ঢেউয়ের মুখে পড়ে সঞ্জীব ও শান্ত ভেসে গেলে অন্যরা সৈকতের নিরাপত্তাকর্মীদের খবর দেন। পরে স্থানীয় সময় বিকেল ৩টার দিকে প্রথমে সঞ্জীব ও ৫টার দিকে শান্তর নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়। ছেলের শোকে স্তব্ধ বাবা: বেলাব টেকপাড়া গ্রামে শান্তর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ছেলের শোকে যেন স্তব্ধ হয়ে গেছেন বাবা বাচ্চু মিয়া। পরিবারের অন্য সদস্যরা করছেন আহাজারি। বাচ্চু মিয়া কাঁদতে কাঁদতে বলেন, সোমবার রাতে আমরা জানতে পারি, শান্ত আর নেই। মাত্র চার মাস আগে আমার ছেলে দক্ষিণ কোরিয়ায় যায়। কিন্তু সুখ হয়তো তার কপালে বেশি দিন ছিল না। আমার ছেলের লাশটা যাতে দ্রুত দেশে আনা যায়, সে জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাই। মরদেহ দেশে আনতে সরকারের সহযোগিতা চায় সঞ্জীবের পরিবার: সঞ্জীবের চাচা আতিকুর রহমান জীবন জানান, সোমবার দুপুরে তারা জানতে পারেন সঞ্জীবের মৃত্যুর কথা। তিনিও সঞ্জীবের মরদেহ দ্রুত দেশে আনার জন্য সরকারের কাছে সহযোগিতা চান। বেলাব ইউএনও আবদুল করিম বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ায় দুই যুবকের মৃত্যুর বিষয়টি বিভিন্ন মাধ্যমে শুনেছি। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ আমাদের এখনও জানায়নি। তারা সহযোগিতা চাইলে সরকারিভাবে মরদেহ আনার জন্য সহযোগিতা করা হবে।