‘ইসলামি সংস্কৃতিকে ধ্বংস করে বিজাতি সংস্কৃতি চাল করেন নূর’
বৈষম্যবিরোরধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিতে হোটেল কর্মী সিয়াম সরদারকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। সোমবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোশাররফ হোসেন এ আদেশ দেন। এদিন আদালতে বিএনপিপন্থি আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক ও নন্দিত লেখক হুমায়ূন আহমেদ আসাদুজ্জামান নূরকে রাস্তা থেকে তুলে এনেছিলেন। এরপর তাকে কয়েকটি নাটকের অভিনয়ের সুযোগ করে দিয়েছিলেন। সেই সুযোগে চেনামুখ হিসেবে পরিচিতি পায়। জনগণের ভালোবাসায় সিক্ত হয়। তার ভেতরের কালো অধ্যায়টা মানুষ দেখেনি। হাসিনার সঙ্গে হাত মিলিয়ে তাকে স্বৈরাচার করতে যা যা করার দরকার তিনি তাই করেছেন। দুবার বিনাভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। ২০১৩ সালে নীলফামারীতে গিয়েছিলেন নির্বাচনি পথসভায়। সেখানে তার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীসহ তিন জনকে ক্রসফায়ার দেওয়া হয়। হুমায়ূন আহমেদের সৃষ্টি করা নরপিশাচ, খুনি দেখলে তিনি হয়তো এখন আফসোস করে ক্ষমা চাইতেন। তিনি বলেন, হত্যা, ভোট চুরি করার কারণে হাসিনা উপহার হিসেবে তাকে সংস্কৃতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন। সেই দায়িত্ব পেয়ে আমাদের বাঙালি, ইসলামি সংস্কৃতিকে ধ্বংস করে বিজাতি সংস্কৃতি চালুর চেষ্টা করেন এবং করেনও। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হওয়া উচিত। যখন ছাত্র-জনতাকে হত্যা করা হয় তখন শেখ হাসিনাকে বন্ধ করতে না বলে স্বৈরাচার ঠিকিয়ে রাখতে কাজ করেছেন তিনি। সাংস্কৃতিক জোট গঠন করে আন্দোলনকারীদের ওপর গরম পানি ঢালার পরিকল্পনা করেন আসাদুজ্জামান নূর। তার শাস্তি হবে। এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক আব্দুর রহমান সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। তার পক্ষে আইনজীবীরা জামিন চেয়ে আবেদন করেন। আসাদুজ্জামানের আইনজীবী বলেন, তিনি ডায়াবেটিস ও হৃদরোগে আক্রান্ত। তার চিকিৎসার ব্যবস্থার আবেদন করছি। তিনি সন্ধিগ্ধ আসামি, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। বাকের ভাই হিসেবে পরিচিত। বার বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন। তার জামিনের প্রার্থনা করছি। রাষ্ট্রপক্ষে ইন্সপেক্টর মো. আসাদুজ্জামান জামিনের বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, এটা হত্যা মামলা। তাদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। জামিনের বিরোধিতা করছি। গতকাল রোববার রাতে রাজধানীর বেইলি রোডের নওরতন কলোনি থেকে আসাদুজ্জামান নুরকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ভিকটিম সিয়াম সরদার (১৭) রাজধানীর মিরপুরের হোটেল রাব্বারিতায় চাকরি করতেন।গত ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোরধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ডিউটি শেষে বাসায় যাওয়ার পথে মিরপুর ১০ এ গুলিতে আহত হন।তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গত ৪ সেপ্টেম্বর তার বাবা সোহাগ সরদার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি হত্যা মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মিরপুর থানাকে এজাহার হিসাবে গ্রহণের নির্দেশ দেন। মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আসাদুজ্জামান নূরসহ ১১৪ জনকে আসামি করা হয়।