স্নিগ্ধকে জড়িয়ে ধরে আবেগাপ্লুত সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা
অনেকটাই অপ্রস্তুত, হঠাৎ পেছন থেকে কানের কাছে আওয়াজ-‘আমি মুগ্ধ’। ফিরে তাকাতেই স্নিগ্ধকে দেখে জড়িয়ে ধরেন সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ। এ সময় তিনি আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। বেশ কিছুক্ষণ তার গলা দিয়ে কথা বের হয়নি। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে সচিবালয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের এক মাস পূর্তি উপলক্ষে ডাকা সংবাদ সম্মেলন এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধর জমজ ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। বিকাল ৩টা ৩৫ মিনিটের দিকে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে উপদেষ্টার পেছন থেকে এসে একটি ছেলে বলেন, ‘আমি মুগ্ধ। উপদেষ্টা সঙ্গে সঙ্গে চেয়ার ছেড়ে উঠে তাকে জড়িয়ে ধরেন। খানিক পর কিছুটা ধাতস্থ হয়ে তিনি স্নিগ্ধর কাছে তার পরিবারের খোঁজখবর নেন। ধরা গলায় কথা বলতে বলতে তার মাথায়, গালে হাত বুলিয়ে দেন। এরপর উপদেষ্টা স্নিগ্ধকে তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন নম্বর দেন। যে কোনো সমস্যায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। স্নিগ্ধ যে কাজের জন্য এসেছে তা দ্রুত করে দিতে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন। এরপর সংবাদ সম্মেলনে সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, আন্দোলনকারী বাচ্চাদের স্বপ্নপূরণে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সে কথাটি কিন্তু আমরা কেউ এক মুহূর্তের জন্য ভুলি না। আপনারা লক্ষ্য করে দেখবেন- স্নিগ্ধ যখন এখানে ঢুকলো, আমাদের মুগ্ধর জমজ ভাই, আমি তো আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি, আমি জানি অনেকেই হয়তো পারেননি। আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে কী চরম আত্মত্যাগ এই বাচ্চাগুলো করেছে। ঢাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলনে গত ১৮ জুলাই সন্ধ্যায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান মুগ্ধ। গুলিবিদ্ধ হওয়ার সময় তিনি আন্দোলনে আসা শিক্ষার্থীদের পানি পান করাচ্ছিলেন। আন্দোলনের মধ্যে ‘পানি লাগবে, পানি’- মুগ্ধর এ কথা অনেকের হৃদয়ে গেঁথে আছে।