বাংলাদেশ থেকে পাচার অর্থ-সম্পদ ফ্রিজ করুন

৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ৩:৩৩ অপরাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশিদের অবৈধ সম্পদ জরুরি ভিত্তিতে ফ্রিজ করার আহ্বান জানিয়েছে টিআইবিসহ দুর্নীতিবিরোধী পাঁচ সংস্থা। দেশটির পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রীর কাছে পাঠানো চিঠিতে এ আহ্বান জানানো হয় বলে গতকাল মঙ্গলবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে টিআইবি। তাদের সঙ্গে যৌথভাবে চিঠি দিয়েছে টিআই ইউকে, ইউকে অ্যান্টি করাপশন কোয়ালিশন, ইন্টারন্যাশনাল ল ইয়ারস প্রজেক্ট ও স্পটলাইট অন করাপশন। গত ৩০ আগস্ট লেখা চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশে ক্ষমতাচ্যুত কর্তৃত্ববাদী সরকারের সুবিধাভোগীদের বিপুল দুর্নীতি উদ্ঘাটিত হচ্ছে। তাদের পাচারকৃত অর্থ-সম্পত্তি বাংলাদেশের নাগরিকদের সম্পদ। ‘নতুন বাংলাদেশ’ পুনর্গঠনের পাশাপাশি দেশকে আরও স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক, গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাচার হওয়া সম্পদ দ্রুত চিহ্নিত ও পুনরুদ্ধার করা জরুরি। এ কাজে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে যেসব দেশে অর্থ ও সম্পদ পাচার করা হয়েছে, তারা আমাদের উন্নয়ন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগে অংশীদার। তারা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রতিশ্রুতি কার্যকরের লক্ষ্যে এসব দেশকে তাদের এখতিয়ারে থাকা সব বাংলাদেশি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অবৈধ সম্পদ ফ্রিজ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছি। পাচারকৃত সম্পদ ফেরানোর উদ্যোগে বাংলাদেশ সরকার ও সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিতে বিশেষ করে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, সুইজারল্যান্ড, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, হংকং ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সরকারের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে।’ স্পটলাইট অন করাপশনের নির্বাহী পরিচালক সুসান হোলে বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দুর্নীতিবিরোধী প্রচেষ্টা জোরদারের মাধ্যমে যুক্তরাজ্য দেশটির প্রতিশ্রুত গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।’ টিআই ইউকের ডিরেক্টর অব পলিসি ডানকান হেমজ বলেন, ‘অপ্রদর্শিত সম্পদের অধিকারী বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ ও দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী মহলের উল্লেখযোগ্য সম্পত্তি রয়েছে যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে।’ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি যুক্তরাজ্যের সহায়তার প্রতিশ্রুতি ও সমর্থনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে চিঠিতে জরুরি ভিত্তিতে তিনটি বিষয় কার্যকরের আহ্বান জানানো হয়। প্রথমত, কোনো বাংলাদেশি ব্যক্তি বা কোম্পানির পাচারকৃত সম্পদ যুক্তরাজ্যে রয়েছে কিনা এবং তা পুনরুদ্ধারযোগ্য কিনা তা যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সিকে খুঁজে দেখে সেগুলো ফ্রিজ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান যেমন–দুর্নীতি দমন কমিশন, আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ, অপরাধ তদন্ত বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংস্কারে সহায়তা করতে পারে যুক্তরাজ্য সরকার। তৃতীয়ত–যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, হংকং, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ (বিশেষ করে দুবাই) যেসব দেশে বাংলাদেশের অর্থ-সম্পদ পাচার হয়েছে, তাদের সঙ্গে সহযোগিতা ও সমন্বয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের সম্পদ ফেরত আনা ও পাচারের সঙ্গে জড়িতদের জবাবদিহি নিশ্চিতের পথ ত্বরান্বিত করা।