খাস জমি দখল করে রিসোর্ট-খামার গড়ার অভিযোগ প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে

২ জুলাই, ২০২৪ | ৫:০২ পূর্বাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেস্ক , ইউ এস বাংলা ২৪

গাজীপুরের শ্রীপুরে প্রায় ৭ একর খাস জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী তৈয়বুর রহমানের বিরুদ্ধে। তিনি সরকারি খাস জমি দখল করে গ্রিন প্যারাডাইস রিসোর্ট এবং আহামদিয়া এগ্রোফার্ম গড়ে তুলেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তৈয়বুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের নিজমাওনা গ্রামের মৃত হযরত আলীর ছেলে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে ব্যক্তি মালিকানা জমি দখলেরও। সরকারি জমি দখল করে সীমানা প্রাচীর বানালেও টনক নড়েনি স্থানীয় ভূমি কর্তৃপক্ষের। খোঁজ নিয়ে ভূমির হালনাগাদ তথ্যও পাওয়া যায় না সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসে। সরেজমিন ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার নিজমাওনা গ্রামের ৩নং গাজীপুর মৌজায় সি.এস ও এস.এ ৫৩৩ ও ৫৭৬ নং দাগে সরকারি খাস জমি রয়েছে। যা আর.এস দাগ নম্বর ৮৪১৫, ৭৪৮৫, ৮৪৮৬, ৮৪৮৭, ৮৪৯২ ও ৮৪৯৩। এসব দাগে জমির পরিমান ১০ একর ১০ শতাংশ। দাগগুলোর মধ্যে ৮৪১৫ নং দাগের আংশিকসহ ছয়টি দাগে প্রায় সাত একর সরকারি খাস জমি রয়েছে। যার সব জমিই তৈয়বুর রহমানের অবৈধ দখলে। স্থানীয়রা জানান, তৈয়বুর পৈত্রিক ও নিজের কেনা জমির সঙ্গে সরকারি খাস জমি দখল করে খামার রিসোর্ট গড়েছেন। একই সঙ্গে নিজমাওনা গ্রামের হালিমা খাতুন, তোফায়েল আহাম্মদ, আবু সাইদ ও নূরুল ইসলামদের প্রায় সাড়ে সাত বিঘা জমি জোরপূর্বক জবর দখল করেছেন। ভুক্তভোগী হালিমা খাতুন বলেন, তৈয়বুর রহমান জমির বিরোধে তার ছেলেকে পিটিয়েছেন। ছয় মাস পর সে মারা যায়। আমি এর কোন বিচার পাইনি। তিনি জোরপূর্বক আমার ৪৫শতাংশ জমি দখল করে নিয়েছেন। একই গ্রামের আবু সাইদ জানান, ২০১৯ সাল থেকে তৈয়বুর রহমান তাদের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধ করে আসছে। আদালতে মামলা চলমান অবস্থায় সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে তাদের ৫ বিঘা জমি দখল করে নিয়েছেন। গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত ওয়ার্ড মেম্বার কামরুন্নাহার বলেন, তৈয়বুর রহমান এলাকার চিহ্নিত ভূমি খেকু। তিনি মানুষকে হামলা-মামলা করে দমিয়ে রাখেন। এলাকায় তার নিজস্ব বাহিনী রয়েছে। এ বাহিনীর মাধ্যমে মানুষের জমি দখল করেন। তার হাত অনেক লম্বা। তিনি আমার পরিবারের জমিও দখল করে নিয়েছেন। স্থানীয় ইপি চেয়ারম্যান সিরাজুল হক মাদবর বলেন, তৈয়বুরের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে। তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। মাওনা ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াহাব জানান, সি.এস ও এস.এ ৫৩৩ ও ৫৭৬ নং দাহ সমুহ ১নং খাস খতিয়া ভূক্ত। এসব দাগ থেকে আর.এস ৮৪১৫,৭৪৮৫, ৮৪৮৬, ৮৪৮৭, ৮৪৯২ ও ৮৪৯৩ নম্বর দাগ হয়েছে। যা ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত। উল্লেখিত ৬টি দাগে মোট ১০ একর ১০ শতাংশ সরকারি খাস জমি রয়েছে। বিগত দিনে নিজমাওনার আক্কাছ আলী, বুজরত আলী, আব্দুল কুদ্দুছ, আব্দুস ছামাদ, ইজ্জত আলী, সামসুল হক, মিনহাজ উদ্দিন, হাতেম আলী, মিয়াচাঁন, সরাফত আলী, মোতালেব সহ অনেকেই ওই খাস জমি জন্য বন্দোবস্তের আবেদন করেছিলেন। কিন্তু তাদের নামে বন্দবস্ত দেওয়ার কোন রেকর্ড নেই। বিষয়টি তিনি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন বলে জানান। শ্রীপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাইখা সুলতানা বলেন, নিজমাওনা গ্রামে সরকারি খাস ভূমি জবরদখলের বিষয়ে অবগত হয়েছি। সরেজমিনে তদন্ত করে রেকর্ড পত্র যাচাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অন্যের জমি জোরপূর্বক দখল করার অভিযোগ মিথ্যা ও বৃত্তিহীন বলে প্রকৌশলী তৈয়বুর রহমান বলেন, নিজমাওনা গ্রামের স্থানীয় প্রায় সবারই বাড়ি-ঘরসহ সরকারি খাস জমি দখলে আছে। সরকারি খাস খতিয়ানের অন্তর্ভুক্ত এ গ্রামের কোনো জমিই বর্তমানে ডিমাগ্রেশন দেওয়া হচ্ছে না।