রাজনীতি এখন পদে পদে নিয়ন্ত্রিত ও শৃঙ্খলিত হয়ে পড়েছে: অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম

২৭ এপ্রিল, ২০২৪ | ১১:৪৫ অপরাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেস্ক , ইউ এস বাংলা ২৪

জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি বলেছেন, নিজের শক্তি না থাকলে কখনও অন্যের ওপর নির্ভর করে ভালো কিছু করা যায় না। ব্যক্তি পর্যায় থেকে শুরু করে সমাজ, রাষ্ট্র, রাজনীতি-সব ক্ষেত্রে এটা খুব জরুরি বিষয়। একথা সত্য যে, নানা জটিলতা ও মীরজাফরদের বিশ্বাসঘাতকতার কারণে আমাদের দল ৯০ সালের পর থেকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারছে না। বিশেষ করে বিগত ১৫ বছরে এ পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়েছে। আমরা এক ধরনের আরোপিত বা শৃঙ্খলিত সময় পার করছি। আমরা কেউ এ সংস্কৃতি থেকে বের হতে পারছি না। শনিবার রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বর্ধিত সভায় তিনি এসব কথা বলেন। অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম আরও বলেন, সঙ্গত কারণে রাজনীতিও এখন পদে পদে নিয়ন্ত্রিত ও শৃঙ্খলিত হয়ে পড়েছে। সরকার ও প্রশাসনের নগ্ন হস্তক্ষেপ ছিল গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। আমাদের দলের জনপ্রিয় নেতাদের মধ্যে যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলেন, তাদের অনেকে আশাহত হয়েছেন। আবার কেউ মনোনয়ন পেয়েছেন, কেউ আবার পাননি। অনেকে মনোনয়ন পেয়েও নির্বাচনের মাঠে শক্তভাবে দাঁড়াতে পারেননি। শক্তি এবং সামর্থ্য থাকলেও প্রশাসনের গোপন ষড়যন্ত্রের কারণে সব ভেস্তে গেছে। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু হবে আশ্বাস দিয়ে অনেকটা জোর করে আমাদের দলকে নির্বাচনে নেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, আপনারা সবাই জানেন আমিও ঢাকা-১ আসন থেকে নির্বাচন করেছি। কিন্তু কি হয়েছে-তা দেশের মানুষ যমুনা টেলিভিশনের মাধ্যমে লাইভ দেখেছে। কোনো টেলিভিশন চ্যানেল সাহস না করলেও যমুনা টেলিভিশন সাহসী ভূমিকা পালন করেছে। ভোটের দিন সকাল থেকেই যখন সব কেন্দ্রে ভোট কারচুপি হচ্ছিল তখন নির্বাচন কশিসনসহ প্রশাসনের সব পর্যায়ে আমি নিজে যোগাযোগ করি, কিন্তু কোনো প্রতিকার পাইনি। ওই সময় আমাদের পার্টির চেয়ারম্যান প্রতিবাদ করলেও কোনো লাভ হয়নি। ফলে অসহায়ের মতো চরম কষ্ট মেনে নিতে হয়েছে। তিনি বলেন, আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে বলতে পারি, জাতীয় পার্টির যেকটি আসনে নিশ্চিত জয়ের সম্ভাবনা ছিল তার মধ্যে আমার আসনটি অন্যতম। অথচ আমাকেই এরকম ভোট ডাকাতি মেনে নিতে হয়েছে। জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান বলেন, আমি মনে করি আজ এ বিষয়গুলো যথযথভাবে রিভিউ করতে হবে। আমরা নির্বাচনের আগে জনগণকে কি ধরনের প্রতিশ্র“তি দিয়েছিলাম? নির্বাচনে আমরা কি ভূমিকা রেখেছি? কিভাবে আমরা এখন জনগণের আস্থা অর্জন করব? তিনি বলেন, বিশেষ করে শুধু সংসদে বিরোধী দল হয়ে থাকলে চলবে না। সাধারণ মানুষের মন জয় করতে হবে। আমি মনে করি-রাজনীতি কখনও হারাবে না। যে কোনো কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও রাজনীতি টিকে থাকবে। জনগণের বিপ্লব ও সংগ্রাম কখনো বিফলে যায় না। সেই জনগণকে নিয়েই আমাদের রাজপথে থাকতে হবে। অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম বলেন, আমাদের সুযোগ্য চেয়ারম্যানের কৌশলী ভূমিকার কারণে সংসদে তার বিরোধীদলীয় নেতা হওয়ার বিষয়টি শেষ পর্র্যন্ত আটকানো যায়নি। এক্ষেত্রে আমাদের দল অবশ্যই লাভবান হয়েছে। তা না হলে ষড়যন্ত্রকারীরা সফল হয়ে যেত। এ সময় দলের মাঠ নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি জানি আপনাদের অনেকের মনে কষ্ট আছে, অভিমান আছে, ক্ষোভ আছে। এতকিছুর পরেও সবচেয়ে বড় সত্য হলো আমরা সবাই জাতীয় পার্টিকে ভালোবাসি, পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে ভালোবাসি। তার দেখানো পথেই আমরা একসঙ্গে এগিয়ে যাব। অতীতের সব ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে তৃণমূল পর্যায়ে জাতীয় পার্টিকে সুসংগঠিত করব। পার্টির চেয়ারম্যান আমাদের যে দিকনির্দেশনা দেবেন, আমরা তা পালন করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করব।