মাদক ও আধিপত্যের দ্বন্দ্বে প্রাণ যায় ফয়সালের, গ্রেপ্তার ১০

২২ মার্চ, ২০২৪ | ৬:০৩ অপরাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেস্ক , ইউ এস বাংলা ২৪

রাজধানীর মিরপুর পল্লবী থানার সাড়ে ১১ নম্বর এলাকায় আধিপত্যের দ্বন্দ্বে প্রতিপক্ষ কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় প্রাণ যায় কারচুপি কারিগর ফয়সালের। এ ঘটনায় ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রানা ওরফে রানু। ফয়সাল হত্যা মামলার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা, পটুয়াখালী ও নেত্রকোনা জেলায় অভিযান চালিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের ১০ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মিরপুর বিভাগ। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- শাহিন ওরফে নাডা শাহিন (২৪), মো. মুরাদ হোসেন (২৪), পারভেজ আহম্মেদ (২২), মো. ইয়াসিন (২০), মো. সাইফুল ইসলাম সাইমন (৩০), মো. নাসির উদ্দিন (২০), মো. হৃদয় ওমর সাফি গন্ডার (২০), মো. রাজিব মিয়া (২৫), শাহনেওয়াজ ওরফে কাল্লু (২৮) ও তানজিলা (২৩)। এ সময় তাদের কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত চাপাতি, রামদা ও ছুরি উদ্ধার করা হয়। শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার ও ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, রাজধানীর মিরপুরের পল্লবী এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় ফয়সাল নিহতের ঘটনায় মামলা হয়। এই ঘটনার আসামিরা পালিয়ে যায়। আমরা মামলার তদন্তে নেমে জানতে পারি প্রথমে একই গ্রুপের সদস্যদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। ‘পেপার সানী’ গ্রুপের সদস্য মো. শাহিন ও তার বোন তানজিলার সঙ্গে গত ১৫ মার্চ বিকেলে মাদকের টাকা ভাগাভাগি ও আধিপত্যের বিস্তার নিয়ে গ্রুপের সদস্য ফয়সাল ও রানা ওরফে রানুর সঙ্গে মারামারির ঘটনা ঘটে। ডিবিপ্রধান বলেন, এ ঘটনার পরে পেপার সানী গ্রুপের সদস্য শাহিন ওরফে নাডা শাহিন প্রতিশোধ নিতে সায়মুন গ্রুপের রাব্বী ওরফে ‘গালকাটা’ রাব্বীকে বিষয়টি জানায়। পরের দিন ফয়সাল ও তার বন্ধু রানাসহ আরও দুই বন্ধু রিকশায় করে পল্লবীর কমিউনিটি সেন্টারে ইফতার শেষে বাসায় ফিরছিলেন। পথে পল্লবী থানার সেকশন-১২ এলাকায় তাদের চাপাতি, তলোয়ার, রামদা, সুইচ গিয়ার চাকু দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে আহত করা হয়। হারুন অর রশীদ বলেন, পরে আহত ফয়সালকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) নিয়ে যায় তার মা। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ফয়সালের বন্ধু রানা আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় ফয়সালের বাবা শাহাদাত হোসেন পল্লবী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পরে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যায় জড়িত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। জড়িত অন্যদেরও গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, মিরপুর এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা প্রায়ই মাদক ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মারামারির ঘটনা ঘটায়। একই ঘটনা উত্তরায় ঘটেছে। উত্তরা এলাকায় বেশ কিছু বড় ভাইদের নাম পেয়েছি, যারা কিশোর গ্যাং গ্রুপ নিয়ন্ত্রণ করে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, এছাড়া মিরপুর ও উত্তরার পাশাপাশি মোহাম্মদপুরেও বেশ কয়েকটি কিশোর গ্যাং গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। রাজধানীর কোনো এলাকায় বড় ভাইদের বিস্তার করতে দেওয়া হবে না। কোনো বড় ভাইয়ের নামে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাতে দেওয়া হবে না। আমাদের গোয়েন্দা পুলিশের প্রত্যেকটি টিম রাজধানীর প্রত্যেক এলাকায় কাজ করছে। ফয়সাল হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার অভিযানে নেতৃত্ব দেন ডিবির মিরপুর জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) রাশেদ হাসান। তিনি বলেন, পল্লবী এলাকায় একাধিক কিশোর গ্যাং সক্রিয় রয়েছে। এই ঘটনা ছাড়াও অতীতেও কিশোর গ্যাং সদস্যরা বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটিয়েছে। জড়িতদের ধরতে ধারাবাহিক অভিযান চলছে।