সরকারের সম্পত্তি কিভাবে গেল সালাম মুর্শেদীর হাতে: হাইকোর্ট

১৩ মার্চ, ২০২৪ | ৫:০০ অপরাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেস্ক , ইউ এস বাংলা ২৪

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সহ-সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী এমপির দখলে থাকা গুলশানের বাড়ি নিয়ে হাইকোর্ট বলেছেন, দুদকসহ অন্যান্য সংস্থার তদন্ত প্রতিবেদনে এটি প্রমাণিত সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশানের বাড়ি সরকারের পরিত্যক্ত সম্পত্তি। এই সম্পত্তি কিভাবে সালাম মুর্শেদী পেলেন, কিভাবে তার কাছে হস্তান্তর হলো- এটি আমাদের দেখাতে হবে। বুধবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব কথা বলেন। পরে আদালত সালাম মুর্শেদীর আইনজীবীর আবেদনের প্রেক্ষিতে বাড়ি নিয়ে রায় ঘোষণার জন্য আগামী ১৮ মার্চ দিন ধার্য করেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার অনীক আর হক ও ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন এমপি। সালাম মুর্শেদীর পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা। আর দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ। এর আগে গতকাল (মঙ্গলবার) দুদকের আইনজীবীর সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আব্দুস সালাম মুর্শেদীর গুলশানের বাড়ি নিয়ে রায় ঘোষণার দিন পিছিয়ে আজকের দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই দিন ধার্য করেন। তার আগে গত ৩ মার্চ আব্দুস সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশানের বাড়ি নিয়ে শুনানি শেষ হয়। আবদুস সালাম মুর্শেদী খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য, ব্যবসায়ী ও সাবেক ফুটবলার।তার বিরুদ্ধে রাজধানীর গুলশান-২-এ পরিত্যক্ত সম্পত্তির ‘খ’ তালিকাভুক্ত বাড়িটি দখলে রাখার অভিযোগ তুলে অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে ২০২২ সালের ৩০ অক্টোবর রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক (বর্তমানে সংসদ সদস্য)। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২২ সালের ১ নভেম্বর হাইকোর্ট রুল দিয়ে বাড়িসংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নথিপত্র হলফনামা আকারে দাখিল করতে নির্দেশ দেন। রুলে বাড়িটি বেআইনিভাবে দখলে রাখার অভিযোগে আবদুস সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। এরপর রাজউক নথি দাখিল করে। পরে বাড়ি নিয়ে অভিযোগ অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দিতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) নির্দেশ দেওয়া হয়। গত ১৭ জানুয়ারি হাইকোর্ট এক আদেশে প্রশ্ন ওঠা ওই ভূমি বা প্লটের চেইন অব টাইটেল (মালিকানা হস্তান্তরের পরম্পরা), দখলসংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নথি ও কাগজপত্র যুক্ত করে পক্ষগুলোকে হলফনামা (এফিডেভিট ইন অপজিশন) দাখিল করতে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে অনুসন্ধান প্রতিবেদনসহ প্রয়োজনীয় নথি ও কাগজপত্র যুক্ত করে দুদককে ৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হলফনামা দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। গত ৮ ফেব্রুয়ারি শুনানিতে দুদকের আইনজীবী আদালতকে জানান, আদালতের নির্দেশের পর বাড়িটি নিয়ে দুদক অনুসন্ধান করে। অনুসন্ধানে বাড়িটির বিষয়ে জাল–জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়। মৌখিক ও দালিলিক সাক্ষীর ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশন সর্বসম্মতিতে সিদ্ধান্ত নিয়ে যাদের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে অভিযোগ পেয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ৫ ফেব্রুয়ারি মামলা করেছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। আগের ধারাবাহিকতায় গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ওই বাড়ির (ভূমি বা প্লটের মালিকানা হস্তান্তর) পরম্পরার তথ্য আদালতে তুলে ধরেন দুদকের আইনজীবী। ২৯ ফেব্রুয়ারি বিষয়টি শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন পক্ষগুলোর সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ সংক্রান্ত রুল শুনানির জন্য ৩ মার্চ দিন নির্ধারণ করেন। এর ধারাবাহিকতায় ৩ মার্চ শুনানি হয়। সেদিনই শুনানি শেষ হয়।আদালতে দুদকের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান, রিটের পক্ষে আইনজীবী অনীক আর হক, সালাম মুর্শেদীর পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ ও রাজউকের পক্ষে আইনজীবী জাকির হোসেন মাসুদ শুনানিতে ছিলেন।রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আফিফা বেগম।