অমর একুশে বইমেলা-২০২৪ পাইরেটেড বইমুক্ত মেলার দাবি

২৯ জানুয়ারি, ২০২৪ | ৮:৫৭ পূর্বাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেস্ক , ইউ এস বাংলা ২৪

অমর একুশে বইমেলা-২০২৪ আর মাত্র তিনদিন পর শুরু হতে যাচ্ছে। বইমেলা প্রাঙ্গণ সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমির মাঠজুড়ে স্টল ও প্যাভিলিয়ন নির্মাণের কাজ চলছে। এখন সেখানে শুধুই হাতুড়ি আর পেরেকের আওয়াজ শোনা যায়। রাজনৈতিক অস্থিরতা না থাকায় মাসব্যাপী মেলাকে ঘিরে খুবই আশাবাদী প্রকাশকরা। মেট্রোরেলে চেপে বইমেলায় আসা-যাওয়ার নতুন দিনের বারতাসহ সব মিলিয়ে দারুণ উদ্দীপ্ত বইমেলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাই। প্রকাশকদের দাবি-পুরোপুরি পাইরেসি ও পাইরেটেড বইমুক্ত বইমেলার। আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় প্রকাশকদের পক্ষ থেকে বইমেলার সময় শুক্রবারও মেট্রোরেল চালু রাখার দাবি জানানো হয়েছে। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৩টায় অমর একুশে বইমেলা-২০২৪-এর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ আয়োজনে উপহার হিসাবে তার হাতে বই তুলে দেওয়া হবে। একই আয়োজনে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২৩ প্রাপ্ত লেখকদের হাতে তিনি পুরস্কার তুলে দেবেন। দেশের অন্যতম প্রকাশনা সংস্থা আগামী প্রকাশনীর জ্যেষ্ঠ প্রকাশক ওসমান গণি বলেন, আমরা পাইরেসিমুক্ত বইমেলা চাই। মেলার নীতিমালায় স্পষ্টভাবে বলা আছে-এ বইমেলায় বাংলাদেশের লেখকদের লেখা এবং প্রকাশ করা বই-ই বিক্রি হবে। কিন্তু আমরা প্রতিবছর এর ব্যত্যয় দেখি। যে বই বিক্রি হয়, এর মধ্যে ৪০ ভাগ পাইরেটেড। বিশেষ করে শিশু কর্নারে যে বইগুলো বিক্রি হয়, সেগুলোর অনেক বই পাইরেটেড। তিনি বলেন, চিরায়ত সাহিত্যের বই বিক্রি হতে পারে। কিন্তু আরও অনেক দেশের লেখকের বই বিক্রি হয়, যেগুলো আসলে পাইরেটেড। গত বছর পাইরেটেড বই বিক্রির কারণে দুটি প্রকাশনা সংস্থাকে এবার মেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়নি। অনেকে মুচলেকা দিয়ে মেলায় অংশ নিয়েছেন। আমরা চাই-অমর একুশে বইমেলা পুরোপুরি পাইরেটেড বইমুক্ত হবে। তিনি আরও বলেন, এবারের বইমেলার অন্যতম দিক মেট্রোরেল। উত্তরা বা মিরপুরের অনেক মানুষ সহজে বইমেলায় আসা-যাওয়া করতে পারবেন। অন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায় আমরা বইমেলার পুরো সময় শুক্রবারও মেট্রোরেল চালু রাখার দাবি জানিয়েছি। এটি হলে এবারের মেলা হবে যুগান্তকারী এক মেলা। এদিকে শনি ও রোববার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে সরেজমিন দেখা যায়, দুই প্রাঙ্গণেই দিনরাত স্টল ও প্যাভিলিয়ন নির্মাণের কাজ চলছে। কিছু কিছু প্রকাশনীর কাজ ইতোমধ্যে শেষ পর্যায়ে। তবে বেশির ভাগ স্টলের নির্মাণকাজই মাঝ পর্যায়ে আছে। পুরো প্রাঙ্গণে চলছে এক কর্মযজ্ঞ। সেখানে কাজ করছেন অনেক শ্রমিক। মাঠেই অনেকে সেরে নিচ্ছেন দুপুরের আহার। রোববার ফেসবুক পোস্টে অন্যপ্রকাশের নির্মাণাধীন প্যাভিলিয়নের ছবি আপলোড করে পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহসভাপতি এবং অন্যপ্রকাশের প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলাম লেখেন, ১ ফেব্রুয়ারি পর্দা উঠবে অমর একুশে বইমেলার। নির্মাণকাজ চলছে আপনাদের প্রিয় ‘অন্যপ্রকাশ’ প্যাভেলিয়নের। আর হ্যাঁ, এবার কিন্তু খুব সহজেই মেট্রোরেলে উত্তরা এবং মিরপুর থেকে পৌঁছে যেতে পারবেন মেলা প্রাঙ্গণে। আসুন মাসব্যাপী এই মেলায় মেতে উঠি প্রাণের এই উৎসবে! শনিবার মেলা প্রাঙ্গণে অবসর প্রকাশনীর ব্যবস্থাপক মাসুদ রানা বলেন, আমরা আশা করছি-এবারের বইমেলা খুব ভালো হবে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পাশাপাশি মেট্রোরেলে সহজ যাতায়াত মেলায় পাঠক, ক্রেতার অংশগ্রহণ বাড়াবে বলে বিশ্বাস করি। জানা যায়, এবারের বইমেলায় ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশনের অংশের দিকের প্রবেশপথটি খোলা থাকবে। ওদিকে গাড়ি পার্কিংয়েরও ব্যবস্থা রাখা হবে। মেলার আয়োজক বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ এবার মেলার সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বও পালন করবে। প্রতিবছর বইমেলায় খাবারের প্রচুর স্টল রাখার বিষয়ে প্রকাশকসহ নানা মহল থেকে আপত্তি আসে। এবার সেদিক থেকেও নিয়ন্ত্রিত অবস্থা থাকবে বলে জানা গেছে।