বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন

২২ জানুয়ারি, ২০২৪ | ৯:১৭ পূর্বাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেস্ক , ইউ এস বাংলা ২৪

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ব্যাংকগুলোতে তারল্য কমে যাচ্ছে। ফলে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আরও জানা যায়, লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী এ খাতে ঋণ বিতরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এতে স্বাভাবিকভাবেই বেসরকারি খাতে কমছে নতুন কর্মসংস্থানের গতি। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে। দেশের অর্থনীতিতে বেসরকারি খাতের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাংক খাতের মোট ঋণের প্রায় ৮০ শতাংশই যাচ্ছে এ খাতে। প্রতি বছর মোট কর্মসংস্থানের প্রায় ৯৪ শতাংশই হচ্ছে বেসরকারি খাতে। মোট দেশজ উৎপাদনের উল্লেখযোগ্য অংশই আসছে এ খাত থেকে। আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের সিংহভাগই বেসরকারি খাতের মাধ্যমে সম্পাদিত হচ্ছে। এ কারণে সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হলে অর্থনীতির সব খাতেই এর প্রভাব পড়বে। বস্তুত ব্যবসা-বাণিজ্যের গতি কমে গেলে উৎপাদনে ভাটা পড়ে, কর্মসংস্থান বৃদ্ধির হার কমে যায় এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে মানুষের আয় কমে যায়। সাম্প্রতিক সময়ে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষের জীবনযাত্রার মানেও বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ কমার জন্য ব্যাংকগুলোর তারল্য প্রবাহ কমে যাওয়াকে অন্যতম একটি কারণ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া আমদানি ব্যয় মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ডলার কেনা বাবদ ব্যাংকের অর্থ চলে যাওয়া ও সংকোচনমূলক মুদ্রানীতিকে দায়ী করা হয়েছে। এছাড়া বৈশ্বিক মন্দার কারণে বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির হার কমে যাওয়া, ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা, ডলার সংকট ও ডলারের দাম বৃদ্ধিকে দায়ী করা হয়েছে। এসব কারণে বেসরকারি খাতেরও ঋণ গ্রহণের সক্ষমতা কমেছে। বস্তুত গত কয়েক বছর ধরেই এ খাতে ঋণ প্রবাহ কমছে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে উৎপাদিত পণ্যের চাহিদা হ্রাস পাওয়ায় কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় নতুন শিল্পকারখানা স্থাপিত হচ্ছে না। এ অবস্থা দীর্ঘদিন চললে অর্থনীতিতে বিপর্যয় নেমে আসবে। বড় উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি ক্ষুদ্র-অতিক্ষুদ্র-মাঝারি সব শ্রেণির উদ্যোক্তার সক্ষমতা বাড়ানোর পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশের অর্থনীতির স্বার্থে শিল্পকারখানায় নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস বিদ্যুতের সরবরাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি অবকাঠামোগত সব সমস্যার সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে যাতে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় না থাকলে দেশে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় বিনিয়োগের বিষয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। এ পরিস্থিতিতে দেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে যা যা করা দরকার সবই করতে হবে।