সড়ক দুর্ঘটনার ব্যাপকতা

১৯ জানুয়ারি, ২০২৪ | ৫:০৩ পূর্বাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেস্ক , ইউ এস বাংলা ২৪

সড়ক দুর্ঘটনায় আহত-নিহতদের সংখ্যা নিয়ে প্রথমবারের মতো বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। সংস্থাটি জানিয়েছে, ২০২৩ সালে সারা দেশে ৫ হাজার ৪৯৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ হাজার ২৪ জন নিহত এবং ৭ হাজার ৪৯৫ জন আহত হয়েছেন। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বহু পদক্ষেপ নেওয়ার পরও দুর্ঘটনার ব্যাপকতা কমছে না। সড়ক পরিবহণ খাতে শৃঙ্খলা জোরদার করার লক্ষ্যে এবং দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে কয়েক বছর আগে ১১১ দফা সুপারিশ সংবলিত প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল এ সংক্রান্ত কমিটি। প্রশ্ন হলো, সুপারিশগুলোর বাস্তবায়ন হবে কবে? ২০১১ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্যের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করেছিল সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিল। সড়ক দুর্ঘটনা কমানোর লক্ষ্যে এ কমিটিও বেশকিছু প্রস্তাব দিয়েছিল, যার বেশিরভাগই চালক, যানবাহন ও সড়কসংশ্লিষ্ট সংস্কারের প্রস্তাব। ওই কমিটির প্রস্তাবগুলোর বাস্তবায়নের অবস্থাই বা কী? ২০২৩ সালের শেষদিকে হরতাল-অবরোধের কারণে দূরপাল্লার যানবাহন কম চলেছে। তারপরও দুর্ঘটনায় এত মানুষের মৃত্যু দেশবাসীকে ভাবিয়ে তুলেছে। সড়ক দুর্ঘটনার কারণগুলো চিহ্নিত; কী করণীয় তাও বহুল আলোচিত। কিন্তু তারপরও দুর্ঘটনা রোধে নেওয়া হচ্ছে না কার্যকর পদক্ষেপ। বিশেষজ্ঞরা বারবার বলেছেন, চালকের বেপরোয়া মনোভাব, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, চালকের অদক্ষতা, সড়কের ত্রুটি-এসব কারণেই দেশে দুর্ঘটনা হয় বেশি। এসব সমস্যার সমাধানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। বস্তুত বিষয়টি যতটা গুরুত্ব পাওয়ার দাবি রাখে, কর্তৃপক্ষের কাছে ততটা গুরুত্ব পাচ্ছে না বলে মনে করি আমরা। সারা দেশে সড়কে আইন মানার প্রবণতা নেই বললেই চলে। সড়কজুড়ে বিরাজ করছে চরম বিশৃঙ্খলা। পরিবহণ খাতে বিশৃঙ্খলার মূল কারণ সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের অদক্ষতা ও পেশাদারি মনোভাবের অভাব। সড়কে দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে ইজিবাইক, নসিমন, করিমনের পাশাপাশি মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণে নীতিমালা তৈরি হচ্ছে বলে জানা যায়। তবে শুধু নীতিমালা তৈরি হলেই হবে না, তা বাস্তবায়নেও নিতে হবে যথাযথ পদক্ষেপ। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনকেও সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। এ বিষয়ে দেশবাসী ইঁদুর-বিড়াল খেলা দেখতে চায় না। সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় গণপরিবহণ খাতের উন্নয়নে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। কর্তৃপক্ষকে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি মানুষকে সচেতন করার জন্যও নিতে হবে পদক্ষেপ। পরিবহণ খাতের বিশৃঙ্খলা রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। এ খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় যা যা করণীয়, সবই করতে হবে। তা না হলে কেবল বক্তৃতা বা বিবৃতি দিয়ে সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা যাবে না।