বন্দর রক্ষার আন্দোলন ক্রমশ তীব্রতর, বিদেশি ইজারা চুক্তির বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে সাধারণ মানুষ

২৪ নভেম্বর, ২০২৫ | ৫:৩৪ অপরাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

ইউনূস সরকার গোপনে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিংসহ বিভিন্ন টার্মিনাল বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে ইজারা দেওয়ার উদ্যোগের প্রতিবাদে দেশজুড়ে আন্দোলন আরও তীব্র হচ্ছে। এই ইজারা বন্ধে বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) আগামী ২৬শে নভেম্বর চট্টগ্রাম বন্দর অভিমুখী সড়ক অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে। বাম গণতান্ত্রিক জোট চট্টগ্রাম জেলা শাখা এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম বিভাগীয় আঞ্চলিক কমিটি স্কপের এই কর্মসূচির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষও ড. ইউনূসের দেশবিরোধী এই গোপন তৎপরতায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠছেন। ইউনূস বিদেশিদের কাছে দেশ বিক্রি করে দিচ্ছেন বলেও তারা প্রকাশ্যে অভিযোগ করছেন। রোববার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমাবেশ ও মিছিলে বক্তারা অভিযোগ করেন—চট্টগ্রামের নিউমুরিংসহ বিভিন্ন টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানিকে ইজারা দেওয়ার প্রক্রিয়া অত্যন্ত গোপনীয়ভাবে পরিচালিত হচ্ছে, যা দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি। তারা বলেন, প্রয়োজনীয় বোর্ড সদস্য ছাড়াই অনুমোদন নেওয়া, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে আলোচনার নামে নেগোশিয়েশন সম্পন্ন করা—এসবই অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ার অংশ। বক্তারা দাবি করেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের এমন চুক্তি করার কোনো এখতিয়ার নেই এবং সরকারের উচিত দ্রুত নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতা ছাড়ার প্রস্তুতি নেওয়া। সমাবেশ শেষে মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক ঘুরে পল্টন মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। একই দিন চট্টগ্রামের পুরাতন স্টেশন এলাকায় বাম গণতান্ত্রিক জোট চট্টগ্রাম জেলা শাখা সমাবেশ করে। তারা স্কপ ঘোষিত ২৬শে নভেম্বরের অবরোধ কর্মসূচিতে সমর্থন জানান এবং ৪ ডিসেম্বর ঘোষিত যমুনা ঘেরাও কর্মসূচি সফল করার আহ্বান জানান। বক্তারা বলেন, দেশের মোট আমদানি–রপ্তানির ৯২ শতাংশ চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে সম্পন্ন হয়, তাই এ ধরনের কৌশলগত স্থাপনার বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত অত্যন্ত সংবেদনশীল। জাতীয় স্বার্থ ও সামরিক-অর্থনৈতিক নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে বন্দরের অংশবিশেষ ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত আরও ঝুঁকিপূর্ণ বলে তারা মন্তব্য করেন। এদিকে গতকাল চট্টগ্রামের বিআরটিসি মার্কেট কার্যালয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির সঙ্গে যুক্ত ৪৭টি শ্রমিক সংগঠনের সভায়ও স্কপ ঘোষিত অবরোধ কর্মসূচির প্রতি একাত্মতা ঘোষিত হয়। উপস্থিত নেতারা বলেন, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা—চট্টগ্রাম বন্দর, নৌবাহিনী ঘাঁটি, তেল শোধনাগার ও বিমানবন্দরের পাশে বিদেশি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা জাতীয় স্বার্থ ও সার্বভৌমত্বের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করবে। সভায় বক্তারা অভিযোগ করেন, দেশের বন্দরের ইজারা নিয়ে গোপন তৎপরতা জনগণের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি করেছে এবং জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় এ আন্দোলন আরও শক্তিশালী হবে।