অ্যামেরিকায় বড় হামলার পরিকল্পনা, বন্দুক ভর্তি গাড়িসহ পাক-বংশোদ্ভূত যুবক গ্রেপ্তার
স্কুল ক্যাম্পাসে গণ হত্যার পরিকল্পনার অভিযোগে ২৪ বছর বয়সী লুকমান খান নামে এক পাকিস্তানি অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত ২৪ নভেম্বর পুলিশ এই অভিবাসী যুবক কে আটক করে। ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস (ডিওজে) জানায়, তার কাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে বন্দুক, গোলাবারুদ, বডি আর্মার পাওয়া গেছে। এছাড়া তার কাছে একটি নোটবুকও পাওয়া যায়- যেখানে লেখা ছিল ‘সবাইকে মেরে ফেলতে হবে’ এবং ‘শহীদ’ হওয়ার ইচ্ছার কথা। ডেলাওয়্যার ইউনিভার্সটির ছাত্র লুকমান খানকে গত ২৪ নভেম্বর পিকআপ ট্রাকে বসে থাকতে দেখে পুলিশ কর্মকর্তারা তল্লাশি চালান। ডিওজে এক বিবৃতিতে জানায়, তল্লাশির সময় পুলিশ গাড়ির ভেতর থেকে একটি পয়েন্ট ৩৫৭ ক্যালিবারের গ্লক পিস্তল খুঁজে পান। পিস্তলটিতে ২৭ রাউন্ড গুলি ভর্তি ছিল এবং একটি আগ্নেয়াস্ত্র ব্রেস কিটের সাহায্যে সেটিকে আধা-স্বয়ংক্রিয় রাইফেলে রূপান্তর করা হয়েছিল। এছাড়া আরও তিনটি লোডেড ২৭-রাউন্ড ম্যাগাজিন, একটি লোডেড গ্লক ৯ মিমি ম্যাগাজিন, একটি বুলেটপ্রুফ আর্মার প্লেট এবং একটি মার্বেল কম্পোজিশন নোটবুক পাওয়া যায়। নিউ ইয়র্ক পোস্ট–এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাতে লেখা নোটবুকে লুকমান খান আরও অস্ত্র সংগ্রহ, সেগুলো কীভাবে হামলায় ব্যবহার করা যায় এবং হামলার পর কীভাবে পুলিশের নজর এড়ানো যাবে এসব নিয়ে বিস্তারিত লিখেছিলেন। নোটবুকে ডেলাওয়্যার ইউনিভার্সিটির পুলিশ ডিপার্টমেন্টের এক কর্মকর্তার নামও উল্লেখ ছিল। এছাড়া নোটবুকে ভবনের নকশা ও ভবনটির প্রবেশ ও বের হওয়ার পথসহ ইউডি পুলিশ স্টেশনের কথাও লেখা ছিল। নোটবুক জুড়ে বারবার ‘সবাইকে মেরে ফেলো’ এবং ‘শহীদ হওয়া’ জাতীয় বাক্য পাওয়া গেছে। পুলিশের মতে, নোটবুকের সব লেখাই ছিল আগে থেকেই পরিকল্পিত হামলার ছক এবং স্পষ্ট যুদ্ধকৌশল। নিউ ইয়র্ক পোস্ট জানায়, হামলার উদ্দেশ্য পুরোপুরি পরিষ্কার না হলেও গ্রেপ্তারের পর লুকমান পুলিশকে জানায়, শহীদ হওয়া সবচেয়ে বড় অর্জনগুলোর একটি। লুকমান খানের জন্ম পাকিস্তানে হলেও ছোটবেলা থেকেই তিনি অ্যামেরিকায় থাকছেন এবং এখন তিনি অ্যামেরিকান নাগরিক। গ্রেপ্তারের পর এফবিআই লুকমান খানের উইলমিংটনের বাসায় তল্লাশি চালায়। সেখানে তারা একটি এআর -স্টাইলের রাইফেল উদ্ধার করে, যাতে রেড-ডট স্কোপ লাগানো ছিল। আরও একটি গ্লক পিস্তল পাওয়া যায়, যার সঙ্গে অবৈধ একটি যন্ত্র লাগানো ছিল। এটি পিস্তলটিকে সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় মেশিনগানে পরিণত করে, যা মিনিটে প্রায় ১,২০০ রাউন্ড গুলি ছুড়তে পারে। এছাড়া আরও ১১টি লম্বা ম্যাগাজিন, মারাত্মক হোলো-পয়েন্ট বুলেট, এবং একটি বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পাওয়া যায়। খানের কাছে থাকা কোনো অস্ত্রই আইন অনুযায়ী নিবন্ধিত ছিল না। ২৪ নভেম্বর গ্রেপ্তার হওয়ার দুই দিন পরে, ২৬ নভেম্বর তাকে অবৈধভাবে মেশিনগান রাখার অভিযোগে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ আনা হয়। এফবিআই মামলাটি আরও তদন্ত করছে। বর্তমানে লুকমান কারা হেফাজতেই রয়েছেন।
