ক্যু করে পদচ্যুত করতে ব্যর্থ হয়ে ইউনুসের কাছে রাষ্ট্রপতি এখন অচ্ছুৎ!

১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ | ৫:৫৬ পূর্বাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি। কিন্তু মোহাম্মদ ইউনুস তাকে কী বানিয়ে রেখেছেন? বঙ্গভবনে বসে থাকা একটা শোপিস। সাত মাস ধরে একবারও দেখা করার সময় পাননি প্রধান উপদেষ্টা। রাষ্ট্রপতি চিঠি লিখেছেন, জবাব নেই। সেপ্টেম্বরে রাতারাতি সব দূতাবাস থেকে তার ছবি নামিয়ে ফেলা হয়েছে। এটা কোন ধরনের আচরণ? কোন সভ্য দেশে এভাবে রাষ্ট্রপতিকে অপমান করা হয়? ইউনুসের এই ঔদ্ধত্যের কারণ খুবই স্পষ্ট। তিনি জানেন তার পেছনে কারা আছে। জুলাই মাসে যে দাঙ্গা বাঁধিয়ে নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে তাকে ক্ষমতায় বসানো হয়েছে, সেই বিদেশি প্রভুদের আশীর্বাদেই তিনি এখন যা খুশি করতে পারেন। রাষ্ট্রপতি কী করবেন? সামরিক বাহিনীর সমর্থন তো ইউনুসের পকেটে। ইসলামি জঙ্গিরা রাস্তায় তার পক্ষে দাঁড়িয়ে। বিদেশি টাকা আসছে অঝোরে। এই অবস্থায় একজন সাংবিধানিক রাষ্ট্রপতি কতটুকুই বা করতে পারেন? সাহাবুদ্দিন নিজেই স্বীকার করেছেন, তিনি অপমানিত বোধ করছেন। যেতে চান, কিন্তু সংবিধান তাকে বাধ্য করছে থাকতে। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে তবেই তিনি মুক্তি পাবেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো, নির্বাচন হবে কি? ইউনুস কি আদৌ ক্ষমতা ছাড়তে চান? যে মানুষ একবার অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসেছেন, তিনি কেন নিজে থেকে চলে যাবেন? রাষ্ট্রপতির ছবি সরিয়ে ফেলার ঘটনাটা আসলে একটা পরীক্ষা ছিল। দেখা, কতটা অপমান করা যায়, কেউ কিছু বলে কিনা। সাহাবুদ্দিন চিঠি লিখেছেন, কিছুই হয়নি। বিশ্ববাসীর কাছে বার্তা গেছে যে বাংলাদেশে এখন রাষ্ট্রপতির কোনো মূল্য নেই। সংবিধান মানে কিছু না। আইনের শাসন বলে কিছু নেই। আছে শুধু ইউনুসের ইচ্ছা আর বিদেশি প্রভুদের নির্দেশ। এই সুদখোর মহাজন একসময় গরীবদের ঋণ দিয়ে নোবেল জিতেছিলেন। এখন নিজেই হয়ে গেছেন বিদেশি শক্তির কাছে ঋণী। তাদের টাকায় ক্ষমতায় এসেছেন, তাদের স্বার্থ রক্ষা করতে হবে। বাংলাদেশের সংবিধান, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, বাংলাদেশের জনগণ, এসব তার কাছে কিছুই না। আগস্টে ক্ষমতায় এসে ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করার সময় পাননি। কিন্তু বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে দেখা করার সময় ঠিকই পেয়েছেন। পশ্চিমা দেশগুলোতে ছুটে গেছেন বারবার। প্রাথমিকতা কোথায়, সেটা পরিষ্কার। রাষ্ট্রপতি বলছেন, সংবিধান তাকে বাধ্য করছে থাকতে। এটাই আসল ট্র্যাজেডি। একজন মানুষ যখন নিজের দেশে, নিজের পদে বসে অপমানিত বোধ করেন, কিন্তু চলে যেতেও পারেন না, তখন বুঝতে হবে গোটা ব্যবস্থাটাই ভেঙে পড়েছে। ইউনুস আর তার অবৈধ সরকার বাংলাদেশের সাংবিধানিক কাঠামোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। রাষ্ট্রপতি পদকে করে ফেলেছে একটা সাজসজ্জার জিনিস, যেটা দরকার হলে লুকিয়ে রাখা যায়। এই দালাল কার পা চাটছে, সেটা কি আর গোপন আছে? জুলাই মাসে যে দাঙ্গা হয়েছিল, তার পেছনে বিদেশি টাকা ছিল। জঙ্গিদের সহায়তা ছিল। সামরিক বাহিনীর একাংশের মদদ ছিল। এগুলো এখন আর কোনো গোপন তথ্য নয়। নির্বাচিত সরকারকে ক্যু করে ফেলে দিয়ে যাকে ক্ষমতায় বসানো হয়েছে, তার কাছ থেকে গণতন্ত্র আশা করা মূর্খতা। তার কাছ থেকে সংবিধান মানার আশা করাও বোকামি। তিনি এসেছেন একটা নির্দিষ্ট এজেন্ডা নিয়ে, আর সেই এজেন্ডা বাস্তবায়নই তার একমাত্র কাজ। রাষ্ট্রপতির এই সাক্ষাৎকার আসলে একটা আর্তনাদ। একজন বয়স্ক মানুষ, যিনি দেশের সর্বোচ্চ পদে বসে আছেন, তিনি বলছেন তিনি অপমানিত। বলছেন তিনি যেতে চান। কিন্তু যেতে পারছেন না কারণ সংবিধান তাকে আটকে রেখেছে। অথচ যে ইউনুস সংবিধান মানেন না, যে রাষ্ট্রপতিকে সম্মান দেখান না, সেই লোক কীভাবে দেশ চালাচ্ছে? কার ম্যান্ডেট নিয়ে? কোন আইনি বৈধতায়? বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি বিদেশি সংবাদ মাধ্যমকে বলছেন তিনি অপমানিত। নিজের দেশের সরকার প্রধান সাত মাসে একবারও তার সঙ্গে দেখা করেননি। এর চেয়ে লজ্জার আর কী হতে পারে? এর চেয়ে অপমানের আর কী হতে পারে? ইউনুস যে নিজেকে কী মনে করেন, সেটা এখন পরিষ্কার। তিনি ভাবেন তিনি কারও কাছে জবাবদিহি করবেন না। না দেশের মানুষের কাছে, না সংবিধানের কাছে, না এমনকি রাষ্ট্রপতির কাছেও। তার যা ইচ্ছা তাই করবেন। কারণ তার পেছনে আছে বিদেশি প্রভুরা। আছে সামরিক বাহিনীর একাংশ। আছে জঙ্গিদের সমর্থন। এই নিয়ে তিনি যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী। কিন্তু এই আত্মবিশ্বাস তার সবচেয়ে বড় ভুল হতে চলেছে। বাংলাদেশের মানুষ চুপ করে বসে নেই। রাষ্ট্রপতিকে অপমান করার এই ঘটনা, সংবিধান লঙ্ঘনের এই ধারাবাহিকতা, মানুষ সব দেখছে, সব মনে রাখছে। ইউনুস যতদিন বিদেশি মদদে ক্ষমতায় থাকবেন, ততদিন হয়তো নিরাপদ। কিন্তু সেই মদদ যেদিন শেষ হবে, সেদিন কী হবে তার? সেদিন তিনি কোথায় যাবেন? কার কাছে আশ্রয় চাইবেন?