আশা-নিরাশার দোলাচলে ১৪ দলের শরিকরা – U.S. Bangla News




আশা-নিরাশার দোলাচলে ১৪ দলের শরিকরা

ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স:-
আপডেটঃ ২৬ মার্চ, ২০২৪ | ৭:৩৫
ভোটের রাজনীতিতে নজিরবিহীন ব্যর্থতার পর অনেকটাই আশা-নিরাশার দোলাচলে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিকরা। ক্ষমতাসীনদের দীর্ঘদিনের সুহৃদ হিসাবে পরিচিত এই দলগুলোর নেতাদের কেউ কেউ এখন মনে করছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর রাজনীতির মাঠে তাদের প্রভাব অনেকটাই কমে গেছে। আর এ কারণে জোটের প্রধান শরিক আওয়ামী লীগের কাছেও তারা গুরুত্বহীন হয়ে উঠেছেন। এ অবস্থায় নতুন করে পথচলার কথাও ভাবছেন ১৪ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোর নেতারা। তবে সেই নতুন পথ কী হবে-তা এখনো ঠিক করতে পারেননি তারা। গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদকে তিনটি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টিকে দুটি এবং জাতীয় পার্টি-জেপিকে একটি আসনে ছাড় দেয়

আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য একেএম রেজাউল করিম ছাড়া সবাই হেরেছেন। এরপর সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য পদে মনোনয়ন পেতে চেষ্টা চালান জোটের শরিক দলগুলোর নেতারা। এখানেও সুবিধা করতে না পেরে অনেকটাই এখন হতাশ তারা। ১৪ দলের শরিক দলগুলোর নেতারা বলছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর জোটের শরিক দলগুলো বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। শরিক দলগুলোর অভ্যন্তরেও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে; তৈরি হয়েছে নানা সংকট। জানতে চাইলে এ প্রসঙ্গে ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম প্রধান শরিক দল বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি বলেন, ১৪ দলীয় জোটের ভবিষ্যৎ মলিন, জোরদার কিছু দেখা যাচ্ছে না। তবে

ওয়ার্কার্স পার্টি সংসদ এবং সংসদের বাইরে জনগণের কথা বলে যাবে। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের আরেক প্রধান শরিক দল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এ প্রসঙ্গে বলেন, নির্বাচনোত্তর পরিস্থিতি সার্বিক পর্যালোচনা সাপেক্ষে ১৪ দলীয় জোটের ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হবে। ১৪ দলীয় জোট থাকবে কি না, সেটা সিদ্ধান্ত নেবে আওয়ামী লীগ। তবে জোটের এখন কার্যক্রম নেই। তিনি বলেন, এটা ঠিক যে ১৪ দলের আদর্শিক ঐক্যের পাশাপাশি বৈষয়িক লেনদেনে মতপার্থক্য বিদ্যমান। জোটসংশ্লিষ্ট একাধিক নেতার মতে, মূলত এখন কাগজে-কলমেই ১৪ দলীয় জোট আছে। বিএনপি-জামায়াতের বিপরীতে এই জোটের প্রয়োজনও আছে বলতে চান নেতারা। কিন্তু বাস্তবে ১৪ দলের ভবিষ্যৎ দেখছেন না তারা। আওয়ামী লীগও এখন

এই জোটের সেভাবে আর প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করে না। তাদের এমন মনোভাবের পেছনে যুক্তি হচ্ছে, একটানা ক্ষমতায় থেকেও ১৪ দলীয় জোটের শরিক দলগুলো নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে পারেনি। এমন বাস্তবতায় শরিক দলগুলোর নেতাদের কেউ কেউ মনে করেন, আওয়ামী লীগ গুরুত্ব না দেওয়ায় রাজনীতিতে তাদের প্রভাব দিন দিন কমে যাচ্ছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসন সমঝোতায় আওয়ামী লীগের সেই মনোভাবেরই প্রকাশ ঘটেছে। সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের এমন মনোভাব বুঝতে পেরে ১৪ দলের শরিকরা বাইরে থাকা বাম প্রগতিশীল ঘরানার অন্য দলগুলোকে নিয়ে আলাদা মোর্চা গড়ে তোলার চেষ্টা চালাচ্ছে। তাদের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক আলোচনাও শুরু হয়েছে। ১৪ দলের শরিকরা নিজেরা আগ বাড়িয়ে বলবে না যে,

তারা জোটে নেই; বরং নিজেদের মতো করে জনগুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে রাজপথে কর্মসূচি পালন করবে। পাশাপাশি অন্য শরিকদের সঙ্গে ঐক্যের বিষয়টি এগিয়ে নিয়ে যাবে। পুরোনো ১১ দলীয় জোটকেই নতুন করে চাঙা করা যায় কিনা-এমন আলোচনাও চলছে। ২০০৪ সালে ১৪ দলীয় জোট গঠনের আগে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির নেতৃত্বে বাম ঘরানার ১১ দলের একটি জোট ছিল। সেই জোটে সাম্যবাদী দল (এমএল), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, গণতন্ত্রী পার্টিসহ অন্যান্য দল ছিল। পরে তারা একসঙ্গে ১৪ দলে যোগ দেয়। এর বাইরে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ ১৪ দলের শরিক হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওয়ার্কার্স পার্টি আগের ১১ দলীয় জোটকে নতুন করে সক্রিয় করার চেষ্টা চালাচ্ছে।

এ ক্ষেত্রে তারা জাসদকেও পাশে চায়। এছাড়াও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি, বাসদ, ঐক্য ন্যাপ ও শরিফ নূরুল আম্বিয়ার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাসদের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। ১৪ দলীয় জোটের একাধিক শরিক দলও রয়েছে এই উদ্যোগে। যদিও ঐক্যের বিষয়টি সময়সাপেক্ষ বলে মনে করছেন এর উদ্যোক্তারা। এখন তারা দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং অর্থ পাচার ও দুর্নীতির মতো সর্বগ্রাসী ইস্যুতে রাজপথে কর্মসূচি নিয়ে জোরালোভাবে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিশেষ করে সাধারণ মানুষের মধ্যে নিজেদের অবস্থান এবং সামান্যতম গুরুত্ব ধরে রাখতে হলে এর কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করেন তারা। নির্বাচনে ভরাডুবির পর ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম প্রধান শরিক জাসদ সাংগঠনিক বর্ষ ঘোষণা করে দল গোছানোর কাজটাকেই প্রাধান্য দিয়েছে।

তাদের মহানগর শাখা ও যুব সংগঠন ইতোমধ্যে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে কর্মসূচি পালন করছে। ঈদুল ফিতরের পর দুর্নীতি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, প্রশাসনে দলবাজিসহ সরকারের নানা অনিয়ম-অসংগতি নিয়ে সভা-সমাবেশের কর্মসূচি পালন করবে। এটাকে জাসদ বলছে, সুশাসনের দাবিতে সংগ্রাম। পাশাপাশি সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ ও রাজাকারবিরোধী অবস্থানও থাকবে দলটির। একইভাবে নানা কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জোটের অন্য দুই শরিক দল ওয়ার্কার্স পার্টি এবং সাম্যবাদী দল (এমএল)।
ট্যাগ:

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
হিসাব ব্যবস্থায় সংস্কার চান অর্থমন্ত্রী কেন কাশ্মীরে লড়ছে না মোদির দল? আবারো চালু হচ্ছে ‘ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন’ আর্জেন্টিনায় দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে আহত ৯০ এক মাছ ধরেই কোটিপতি তরুণ! এখনো ভিসা পাননি ৩৭ শতাংশ হজযাত্রী ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি, জাতিসংঘের সনদ ছিঁড়লেন ক্রুদ্ধ ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত জেলেনস্কির ব্যক্তিগত নিরাপত্তাবাহিনীর প্রধান বরখাস্ত মোদি যতই শেষ করার চেষ্টা করবে, আমরা ততই বৃদ্ধি পাব: কেজরিওয়াল প্রেমিকাকে বাড়িতে ঢুকতে দেখেই ভাবির বোরকা পরে পালালেন প্রেমিক আফগানিস্তানে আকস্মিক বন্যায় একদিনে নিহত ২০০ নয়াপল্টনে যুবদলের সমাবেশ শুরু বগুড়ায় নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক প্রশিক্ষণ আওয়ামী লীগের শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ আজ ডিজিটাল হজ্জ ব্যবস্থাপনা প্রধানমন্ত্রী নিজেই তদারক করছেন : পলক ৭ মার্চের আগেই বঙ্গবন্ধু পথনির্দেশ দিয়েছিলেন : গণপূর্তমন্ত্রী স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ এর ফিউনারেল প্যারেড অনুষ্ঠিত ৩২ সংগঠন নিয়ে ‘চট্টগ্রাম সঙ্গীত সংগঠন মোর্চা’র আত্মপ্রকাশ ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত সঠিক : সালমান এফ রহমান সিআইপি কার্ড পেলেন ১৮৪ ব্যবসায়ী