যদি আ.লীগই জনপ্রতিনিধি ঠিক করে তাহলে নির্বাচনের প্রয়োজন কেন: জিএম কাদের – U.S. Bangla News




যদি আ.লীগই জনপ্রতিনিধি ঠিক করে তাহলে নির্বাচনের প্রয়োজন কেন: জিএম কাদের

ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স:-
আপডেটঃ ৫ জুন, ২০২৩ | ১০:৪৭
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের এমপি বলেছেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে এখন যোগ দিয়েছে পুলিশ, প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন, পাবলিক সার্ভিস কমিশন। তারা সবাই মিলে একটা নতুন দল হয়েছে আওয়ামী লীগ প্লাস। সবাই যেন এখন আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন। সবাই এখন আওয়ামী লীগের ভাষায় কথা বলে। পার্লামেন্টও এখন আওয়ামী লীগের অঙ্গ হয়েছে। বিচার বিভাগকে আওয়ামী লীগের অঙ্গ বানানোর চেষ্টা চলছে। কয়েকদিন আগে আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেছেন, এক প্রধান বিচারপতিকে নামিয়ে দিয়েছি। প্রমাণ হয়েছে আওয়ামী লীগ বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তিনি আরও বলেন, রাজনীতির মাঠে কথা আছে আওয়ামী লীগ জামায়াতকে বিভিন্ন নামে কিছু সিট দেবে। আমাদেরও কিছু সিট দেবে।

আমাদের বলা হয়, আপনারা আরও সংগঠিত হন, আপনাদের আরও বেশি সিট দেব। কে দেবে? আওয়ামী লীগ দেবে? জনগণ ভোট দেবে না? যদি আওয়ামী লীগের নেতানেত্রীরা সিট দেয়, তাহলে নির্বাচনের দরকার কী? তাহলে ঘোষণা দিয়ে দেন-কে কে পাশ করেছে। সাংবাদিকরাও প্রশ্ন করছে আওয়ামী লীগ কোন কোন সিট দেবে আপনাদের? নির্বাচনের অর্থ হচ্ছে জনগণ ঠিক করবে কে হবেন তাদের প্রতিনিধি। যদি আওয়ামী লীগই জনপ্রতিনিধি ঠিক করে দেয়, তাহলে নির্বাচনের প্রয়োজন কেন? আওয়ামী লীগ প্লাস ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত গণতন্ত্র সম্ভব নয়। আওয়ামী লীগ প্লাস ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত দেশের মানুষের মুক্তি সম্ভব নয়। আইনগতভাবে বাকশাল করা হয়েছিল। এখন আইনগতভাবে না করলেও বাকশালের

আদলে ‘আওয়ামী লীগ প্লাস’ তৈরি করা হয়েছে। আমাদের দুর্ভাগ্য আর তাদের সৌভাগ্য হলে আগামী নির্বাচনের পর বাকশালের নাম হবে ‘আওয়ামী লীগ প্লাস’। সোমবার ঢাকা জেলা জাতীয় পার্টির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জিএম কাদের এসব কথা বলেন। সাবেক প্রতিমন্ত্রী, জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও ঢাকা জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন। প্রধান অতিথির বক্তৃতার শেষদিকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের ঢাকা-১ আসনে (দোহার-নবাবগঞ্জ) জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসাবে অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামের নাম ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে ঢাকা জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি হিসাবেও পুনরায় অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামের নাম ঘোষণা করেন তিনি। এ সময় সম্মেলনকে ঘিরে সমবেত দলের নেতাকর্মীসহ হাজার

হাজার মানুষ তুমুল করতালি দিয়ে অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামকে স্বাগত জানান। সম্মেলনের শুরুতে জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়। এরপর পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত। অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম উদ্বোধন করেন সম্মেলনের। এ সময় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত অথচ আবেগঘন বক্তব্য রাখেন তিনি। এর আগে দলের শীর্ষনেতাদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন ঢাকা জেলা জাতীয় পার্টির নেতারা। জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান তার বক্তৃতায় আরও বলেন, সারা দেশ গরমে পুড়ছে, সরকারের খবর নেই। সারা দেশে শতভাগ বিদ্যুৎ দেওয়ার কথা বলে ১৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র তৈরি করে রেখেছে। তারপরও দেশের মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছে না কেন? আসলে তারা আমাদের বিদ্যুৎ দেওয়ার জন্য বিদ্যুৎকেন্দ্র

তৈরি করেননি। তারা লুটপাটের জন্য বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করেছেন। তারা হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করে দিয়েছেন। আমাদের দরকার ১৪ হাজার মেগাওয়াট আর তৈরি করা হচ্ছে ২৪ হাজার মেগাওয়াট। কিন্তু আমরা পাচ্ছি ১০ হাজার মেগাওয়াটেরও কম বিদ্যুৎ। তিনি বলেন, সরকার এখন গ্যাস কিনতে পারছে না, কয়লা কিনতে পারছে না, তেল কিনতে পারছে না টাকার অভাবে। এ দেশের গরিব মানুষও বিদ্যুতের বিল বকেয়া রাখেনি তাহলে সরকার কয়লা কিনতে পারবে না কেন? হাসি হাসি মুখে তারা বলেন, কয়লা কিনতে আরও দেড় মাস লাগবে। তাহলে আপনারাও আমাদের সঙ্গে আসুন, আপনারাও থাকুন আমাদের সঙ্গে দোজখের আগুনে। সরকার বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক দুর্নীতি করেছে। টেন্ডার

ছাড়াই কাজ দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ খাতে। রেন্টাল পাওয়ার প্লান্টের নামে ঋণ করার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। ১ হাজার কোটি টাকার স্টিমেটের প্লান্টের জন্য খরচ হয়েছে মাত্র ৩শ কোটি টাকা। প্রকল্পে ৭ থেকে ৮শ কোটি টাকা ঋণ করে বাকি টাকা বিদেশে পাচার করে দিয়েছে। আবার বিদ্যুৎ উৎপাদন না করেও ক্যাপাসিটি চার্জের নামে লাখ লাখ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। তাই একশ্রেণির মানুষ দেশে টাকা রাখার জায়গা পাচ্ছে না। দেশের মানুষ যেন নরকে বাস করছে। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, রূপপুর পাওয়ার প্লান্ট রাশিয়া থেকে কেনা হয়েছে। এটি আণবিক শক্তির ২৪শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। একই ধরনের কোম্পানি থেকে ভারতেও এমন একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র কিনেছে

মাত্র ৩৪ হাজার কোটি টাকায়। আর আমাদের দেশে ১ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকার চুক্তি করা হয়েছে। এর মাত্র ৬০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আবার এই বিদ্যুৎকেন্দ্র মানুষের মৃত্যুঝুঁকি বাড়িয়ে দেবে। কোনোরকম ভুল-ত্রুটি হলে এটমবোমের মতো বিস্ফোরিত হয়ে ভয়াবহ বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে। যে দেশে দারোয়ানদের অবহেলায় শত শত গার্মেন্টকর্মী আগুনে পুড়ে মারা যায়, সে দেশে এমন ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি হচ্ছে। এখন উৎপাদনের সক্ষমতা আছে চাহিদার চেয়েও বেশি, তাহলে কেন অর্থনৈতিক অবস্থার ক্ষতি করে এমন প্রকল্প নেওয়া হলো। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে সত্য কথা বললে তার নিস্তার নেই। অনেকে আমাকে বলেন, আপনার সৌভাগ্য এখনো আপনি গায়েব হননি। পদ্মা সেতু নিয়ে

অনেক গল্প বলা হচ্ছে। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের টাকা নেওয়া হয়নি, নিজস্ব টাকায় পদ্মা সেতু নির্মিত হয়েছে। আসলে বাজেটের টাকা দেওয়া হয়েছে পদ্মা সেতু নির্মাণে। আমাদের বাজেট তৈরি হয় ঘাটতি বাজেট। বাজেটের পরিচালন ব্যয় করতে হয় দেশি বা বিদেশি ঋণ দিয়ে। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের টাকা আমরা ফিরিয়ে দিয়েছি, অথচ ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের সুদের হার ১শ টাকায় ১ বছরে মাত্র ৫০ পয়সা। এক ধরনের সুদবিহীন ঋণ। পদ্মা সেতুতে খরচ হয়েছে বিদেশি ঋণের বাজেটের টাকা। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের টাকা ফেরত দিয়েছেন কেন? দুর্নীতি যদি না হতো, তার প্রমাণ দিতেন। ফলে ১০ হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতু শেষ হয়েছে ৩২ হাজার ৬শ কোটি টাকায়। পদ্মা সেতু আসলে ঋণের

টাকায় তৈরি হয়েছে। তিনগুণ বেশি টাকা খরচ হয়েছে পদ্মা সেতুতে। নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু? কিসের বাহাদুরি? বিশ্বব্যাংকের স্বল্পসুদের ঋণ না নিয়ে অনেক বেশি সুদের ঋণের টাকায় পদ্মা সেতু হয়েছে। জনগণের গলায় ঋণের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা কোনো গর্বের প্রকল্প হতে পারে না। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনকালীন সরকারে আমি এবং অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম একসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী ছিলাম। অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম নিজেদের টাকা খরচ করে গণমানুষের পাশে থাকেন। মানুষের জন্য রাজনীতি করেন। সুখে-দুঃখে, বিপদে-আপদে তিনি সাধারণ মানুষের পাশে থাকেন। অপরদিকে এই এলাকায় একজন ব্যক্তি আছেন, তিনি লাখ লাখ যুবকের জীবন ধ্বংস করেছেন। করোনা টিকা বাণিজ্যেও এই লোকের নাম চলে এসেছে। লুটপাট, অর্থ পাচারসহ সর্বত্র তার নাম। লুটপাট করে এরা দেশটাকে শেষ করে দিচ্ছে। এর আগে বিএনপি লুটপাট করেছে। বিদেশে সম্পদ পাচার করেছে। এখন আওয়ামী লীগের নেতারা লুটপাট করছে। সম্পদ পাচার করছে। আওয়ামী লীগের লোকজন খাইতে খাইতে পেট এত উঁচু হইছে যে, তারা খুব একটা নড়তে-চড়তে পারেন না। তিনি আরও বলেন, রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ প্লান্টের নামে ১২ বছরে ৯০ হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে সরকার। আমি সংসদে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই টাকার হিসাব চেয়েছিলাম। তিনি জবাব দেননি। জনগণের সামনে একদিন তাদের এর জবাব দিতেই হবে। আশা করছি ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে এর জবাব পেয়ে যাব। জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, আজ এই সম্মেলনে মাথার ওপর যে ফ্যান ঘুরছে তার সরকারের বিদ্যুতের বদৌলতে নয়। অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামের টাকায় কেনা জেনারেটরের বিদ্যুৎ দিয়ে ফ্যান ঘুরছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, এক বছর আগে সারা দেশ বিদ্যুতের আওতায়। অথচ কিছুদিন আগে আমি গ্রাম থেকে এসেছি, সেখানে দুই ঘণ্টাও বিদ্যুৎ থাকে না। লাখ লাখ যুবক বেকার। বেকারত্ব দূর করতে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই। ঋণের নামে ১ লাখ ২৪ হাজার কোটি টাকা ব্যাংক থেকে লুটে নেওয়া হয়েছে। পাচার করা হয়েছে। এই টাকা আর ফেরত পাবে না ব্যাংক। অথচ এই টাকা দিয়ে নতুন নতুন শিল্প-কলকারখানা করা যেত। বেকারদের কর্মসংস্থান হতো। অর্থনীতি বেগবান হতো। মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, মার্কিন ভিসানীতি নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি-দুই পক্ষই বিপদে আছে। জাতীয় পার্টি বিপদে নেই। কারণ আমরা লুটপাট করিনি। বিদেশে আমাদের সম্পদ নেই। যারা অর্থ পাচার করেছে। বিদেশে সম্পদ করেছে-তারা নতুন ভিসানীতি দেখে চিন্তায় আছে। তিনি বলেন, আমরা প্রথম থেকেই বলেছিলাম, অযথা বড় বড় মেগা প্রকল্প গ্রহণের দরকার নেই। আমাদের কথা শোনেনি। এখন বলা হচ্ছে, কয়লা কেনার টাকা নেই। ডলার নেই। এই টাকা কোথায় গেল। কার পকেটে গেল। জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, মেগা প্রকল্প শেষ হওয়ার খবর নেই। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র শেষ হওয়ার খবর নেই। বাকি মেগা প্রকল্পগুলো কবে শেষ হবে কেউ জানে না। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলছেন, জুলাইয়ে বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে। তিনি জনগণকে ধোঁকা দিতে চান। জনগণকে বোকা বানাতে চান। জুলাইয়ে তো এ দেশে বর্ষাকাল। তখন এমনিতেই বিদ্যুতের চাহিদা কমে আসবে। লোডশেডিং কম হবে। মানুষকে বোকা বানিয়ে এই সরকার আর কতদিন এভাবে পার পাবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দিন শেষ। এই দুই দলের ভবিষ্যৎ কী হবে-তা জিএম কাদেরের ওপর নির্ভর করছে। জাতীয় পার্টির ওপর নির্ভর করছে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি বলেন, দেশের মানুষ ভালো নেই। গ্যাস নেই, পানি নেই, বিদ্যুৎ নেই। বাজারে আগুন। সারা দেশ জ্বলছে। এক বছর আগে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বললেন, বাংলাদেশ থেকে নেপালে বিদ্যুৎ রপ্তানি করবেন। আর এক বছর পর এসে তিনি বলছেন, নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করবেন। একেক সময় একেক কথা বলে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী জনগণের ক্ষতি করছেন। শুধু বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী একা নন, বাণিজ্যমন্ত্রীও ব্যর্থ। পেঁয়াজের দাম যখন একশ টাকা ছুঁই ছুঁই তখন তিনি পেঁয়াজ আমদানির উদ্যোগ নিয়েছেন। আমার প্রশ্ন হলো-আরও আগে পেঁয়াজ আমদানির উদ্যোগ নিলে কী সমস্যা হতো তার। সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এ সময় দোহার ও নবাবগঞ্জ এলাকার উন্নয়নে অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামের অনবদ্য অবদানের কথা তুলে ধরে বলেন, প্রয়াত শিল্পপতি নুরুল ইসলামের স্ত্রী ও যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম মানুষের সঙ্গে থেকে রাজনীতি করছেন। মানুষের সুখে-দুঃখে তিনি সব সময় পাশে থাকেন। ছুটে যান। তার দরজা সবার জন্য উন্মুক্ত, একজন রাজনীতিবিদের এটা একটি বড় গুণ। অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম সাধারণ মানুষকে ভালোবাসেন। তাই এখানকার মানুষও তাকে অন্তর দিয়ে ভালোবাসেন। তিনি এ সময় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের উদ্দেশে বলেন, আমি আশা করব আজকের এই সম্মেলন থেকে তাকে (অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম) জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করা হবে। সভাপতির বক্তব্যে সাবেক প্রতিমন্ত্রী, জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও ঢাকা জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি প্রখর খরতাপ উপেক্ষা করে দোহার, নবাবগঞ্জসহ ঢাকা জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী, সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ী এই সম্মেলনে যোগ দেওয়ায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আপনারা আমাকে যে সম্মান জানিয়েছেন, প্রতিকূল আবহাওয়া উপেক্ষা করে আমার ডাকে সাড়া দিয়ে এখানে সমবেত হয়েছেন, এজন্য আমি আপনাদের প্রতি অভিভ‚ত এবং কৃতজ্ঞ। আমি সুখে-দুঃখে আপনাদের পাশে ছিলাম, আছি, আগামী দিনেও থাকব। আপনাদের ভালোবাসাই আমার জীবনের একমাত্র চাওয়া। একজন মুসলমান হিসাবে আমি বিশ্বাস করি, মানুষকে ভালোবাসলে, মানুষের ভালোবাসা অর্জন করলে, মহান আল্লাহও তাকে ভালোবাসেন। অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম আরও বলেন, আপনারা সবাই এখানে উপস্থিত হয়ে এই সম্মেলনকে আলোকিত করেছেন। তাই আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। এখানে দাঁড়িয়ে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি সাবেক সফল রাষ্ট্রপতি পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে। যিনি তার কর্মের মাঝে বেঁচে আছেন কোটি বাঙালির হৃদয়ের মণিকোঠায়। জাতীয় পার্টির রয়েছে গৌরবের ইতিহাস। রাজনীতির পথচলায় জাতীয় পার্টির সাফল্যের ঝুড়িতে অনেক অর্জন সঞ্চিত হয়েছে। যার বড় অংশ উপহার দিয়ে গেছেন পল্লীবন্ধু এরশাদ। একমাত্র পল্লীবন্ধুই অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে শিখিয়ে গেছেন কীভাবে ঔপনিবেশিক আমলের সিস্টেম থেকে বেরিয়ে এসে একটি স্বাধীন দেশের জন্য নিয়ম চালু করতে হয়। এজন্যই আজ আমরা গর্বের সঙ্গে জাতীয় পার্টি করি। তিনি বলেন, ১৯৯০ সালে গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখার জন্য পল্লীবন্ধু এরশাদ শান্তিপূর্ণ উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিলেন। জাতীয় পার্টির শাসনামলের স্বর্ণযুগে মানুষ আজ ফিরে যেতে চায়। বিগত সময়ে ঢাকা জেলা জাতীয় পার্টিকে সুসংগঠিত করার জন্য আমি অক্লান্ত পরিশ্রম করেছি। দোহার-নবাবগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ, ধামরাই, সাভার-প্রতিটি উপজেলায় জাতীয় পার্টিকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করেছি। বিশেষ করে দোহার-নবাবগঞ্জ উপজেলাকে জাতীয় পার্টির ঘাঁটিতে পরিণত করেছি। যার প্রমাণ আজকের এই সম্মেলন। দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের ত্যাগ ও বঞ্চনার কথা তুলে ধরে সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি বিশ্বাস করি, তৃণমূল কর্মীরাই জাতীয় পার্টির প্রাণ। দীর্ঘ ৩২ বছর ক্ষমতার বাইরে থেকে এই কর্মীরাই জাতীয় পার্টিকে সংগঠিত করে রেখেছে। আমরা অনেকেই মন্ত্রী, এমপি হয়েছি। কিন্তু তৃণমূল কর্মীরা পার্টিকে নিঃস্বার্থভাবে ভালোবেসে দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তাদের যথাযথ মূল্যায়ন করতে হবে। আপনারা সবাই লক্ষ্য করেছেন, নির্বাচন এলেই জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়। তাই আমাদের সজাগ থাকতে হবে। অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম বলেন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের নেতৃত্বে ইস্পাতকঠিন ঐক্য ধরে রেখে সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। তবেই আমাদের সাফল্য আসবে, ইনশাআল্লাহ। এ সময় তিনি সবাইকে সেই ইস্পাতকঠিন ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান এবং যারা সম্মেলন সফল করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক, সাবেক সংসদ-সদস্য ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা খান মো. ইসরাফিল বলেন, অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম আমাদের নয়নমণি। তার যোগ্য ও দক্ষ নেতৃত্বে ঢাকা জেলা জাতীয় পার্টি আজ অনেক বেশি সুসংগঠিত এবং শক্তিশালী। আমরা অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামের নেতৃত্বে এই ধারাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম ঢাকা-১ (দোহার ও নবাবগঞ্জ) আসনের সংসদ-সদস্য ছিলেন। নৌকাকে পরাজিত করে তিনি লাঙ্গল নিয়ে জয়ী হন। আরেকবার তার জয় ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। আমরা চাই, আগামী দিনেও ঢাকা-১ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামকে করা হোক। জনগণ তার সঙ্গে আছেন। অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট হলে তাকে কেউ পরাজিত করতে পারবে না এ আসনে। প্রখর খরতাপ এবং সময় স্বল্পতার কারণে সম্মেলনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের, মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু এবং কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা ছাড়া কেন্দ্রীয় নেতাদের কাউকে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে তাদের সবাইকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। এর আগে সবাইকে ফুল এবং লাঙ্গল খঁচিত ব্যাজ পরিয়ে দেওয়া হয় সম্মেলনের আয়োজক অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামের পক্ষ থেকে।
ট্যাগ:

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
উপজেলা ভোটের পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা ফের হামলা হলে ইসরাইলকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি ইরানের তালিকা ধরে ব্যবস্থা নেবে আ.লীগ মালিকরা সমৃদ্ধ হলেও পোশাক শ্রমিকদের উন্নয়ন নেই: বিলস শোকজ শুরু বিএনপির পদধারী প্রার্থীদের তাপমাত্রা কমার সুখবর নেই, তীব্র গরমে ঘরে-বাইরে সর্বত্র অস্বস্তি এআইর টার্গেটে এখন শিশুরাও জেলে ১৪ দিনের মেয়াদ বাড়ল কেজরিওয়ালের গণহত্যা-ধ্বংস-ক্ষুধা-বর্বরতার ২০০ দিন দক্ষিণ আফ্রিকায় বক্সিং টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের জিনাতের সোনা জয় গোপালগঞ্জে বোমা হামলায় বাবা-ছেলে আহত এফডিসিতে সাংবাদিকদের ওপর হামলা, যা বললেন ডিপজল মাদক অভিযানে গিয়ে ৩ পুলিশ সদস্য আহত ১৮ বছর পর স্কটল্যান্ডের দ্বীপে মিলল রেসের হাঁস তাপমাত্রা কমার সুখবর নেই, তীব্র গরমে ঘরে-বাইরে সর্বত্র অস্বস্তি ইসরাইলি ড্রোন ভূপাতিত করে যে বার্তা দিচ্ছে হিজবুল্লাহ মিরপুরে ছাদ থেকে লাফিয়ে ট্রান্সজেন্ডার নারীর আত্মহত্যা ব্যাংক একীভূতকরণ দায়মুক্তির নতুন মুখোশ: টিআইবি সাবেক প্রেমিকাকে কাছে পেয়ে জড়িয়ে ধরলেন সৃজিত! চেয়ারম্যানরা এমপি মন্ত্রীর স্বজন হলেও নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন: মির্জা আজম