‘পড়ন্ত বিকেলে’ মেজর হাফিজের আক্ষেপ – U.S. Bangla News




‘পড়ন্ত বিকেলে’ মেজর হাফিজের আক্ষেপ

ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স:-
আপডেটঃ ৮ নভেম্বর, ২০২৩ | ৮:৪৫
তিন দশক ধরে বিএনপির রাজনীতি করছেন মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ। বিএনপির সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ নেতাদের মধ্যে তিনি একজন। জীবনের পড়ন্ত বিকেলে এসে রাজনীতি থেকে সরে যাওয়ার চিন্তা করছেন মুক্তিযুদ্ধে জেড ফোর্সের অধীনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা। বুধবার সকালে ঢাকার বনানীর বাসায় সাংবাদিকদের ডেকে তিনি বলেছেন, তার নতুন দল গড়ার যে কথা বাজারে আছে, তা ‘সঠিক নয়’। বিএনপি থেকেই তিনি অবসরে যেতে চান। মেজর হাফিজ বলেন, আমি ৩১ বছর বিএনপির রাজনীতি করছি, ৩১ বছর একটানাভাবে এই দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রয়েছি। এখন আমি অসুস্থ। আর আমার পক্ষে…। আমি শিগগিরই বিদেশে যাব। আগামী নির্বাচনেও অংশ নেওয়া হয়ত আমার পক্ষে সম্ভব হবে না। একাত্তরে

স্বাধীনতা যুদ্ধে জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন ‘জেড’ ফোর্সে ছিলেন হাফিজ উদ্দিন। যুদ্ধে সাহসিকতার জন্যে তিনি বীর বিক্রম খেতাব পান। সামরিক বাহিনী থেকে অবসরের পর রাজনীতিতে যুক্ত হন হাফিজ। ভোলা-৩ (লালমোহন-তজুমদ্দিন) থেকে ছয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ২০০১ সালে খালেদা জিয়া সরকার গঠন করলে হাফিজকে পানিসম্পদমন্ত্রী করেন। তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। সরকারবিরোধী আন্দোলনে তাকে কারাগারেও যেতে হয়েছে। ‘জিয়ার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে’ ১৯৯২ সালে বিএনপিতে যোগ দেওয়ার কথা তুলে ধরে হাফিজ উদ্দিন বলেন, গত ২৩ বছর ধরে আমি এই দলের ভাইস চেয়ারম্যান। স্থায়ী কমিটিতে যত সদস্য আছেন, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া

ছাড়া বাকি সবাই আমার নিচের পদে ছিলেন, আমি যখন ১৯৯২ সালে ভাইস চেয়ারম্যান। পদপদবি ও দলে মূল্যায়ন নিয়ে জীবনের পড়ন্ত বিকেলে এসে আক্ষেপ করে বর্ষীয়ান এই নেতা বলেন, একে একে তারা সবাই আমাকে অতিক্রম করে আমার উপরে চলে গেছেন। এতে আমার কোনো অসুবিধা নাই। পদবীর জন্য তো রাজনীতি করি না। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে আমি নানা ধরনের অসুবিধা সম্মুখিন হচ্ছি। হাফিজ বলেন, আমি শারীরিক কারণে শিগগিরই রাজনীতি থেকে অবসর নেব। কিন্তু ৩১ বছর বিএনপি করেছি, এই দলেই আছি, এই দলে থাকার চেষ্টা করব, এই দলের থেকেই রাজনীতি থেকে বিদায় নিতে চাই। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, খালেদা

জিয়া আমার নেত্রী। তার প্রতি শ্রদ্ধা রইল, তার মুক্তি কামনা করি। বিএনপির সব ত্যাগী নেতা-কর্মীর প্রতি অভিনন্দন জানাই। তারা রাজপথে যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছেন। কিন্তু সশস্ত্র প্রতিরোধের সামনে নিরস্ত্র ব্যক্তি কতটুকু করতে পারে? তবু তাদের অনেকে জীবন দিয়ে গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখার চেষ্টা করেছেন, তাদেরও ধন্যবাদ জানাই। তারেক রহমানের প্রতি সম্মান জানাই। ‘বিএনপির সংস্কার করুন’ মেজর হাফিজ বলেন, আমি আমাদের নেতা তারেক রহমানকে আহ্বান জানাব, দলে সংস্কার করুন। এখন যেভাবে চলে সেভাবে কোনো রাজনৈতিক দল চলতে পারে না। রাজনৈতিক দলের কাউন্সিল কেন্দ্রীয় কমিটি করবে, কেন্দ্রীয় কমিটি জেলা কমিটি করবে, জেলা কমিটি উপজেলা কমিটি করবে, উপজেলা কমিটি ইউনিয়ন কমিটি করবে, ইউনিয়ন কমিটি ওয়ার্ড কমিটি

করবে– সারা পৃথিবীতে এরকম সিষ্টেম। এরকম ব্যবস্থা জিয়ার সময়ে ছিল দাবি করে সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, আমরা কেন সেই পথ থেকে বিচ্যুত হলাম, কেন দলে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হল, কেন কমিটি বাণিজ্য হচ্ছে, কেন ত্যাগী নেতারা নির্বাসিত, খুলনার নজরুল ইসলাম মঞ্জু, সিলেটের আরিফুল হক চৌধুরী, বরিশালের মজিবুর রহমান সরওয়ার, এরা তো ত্যাগী নেতা। ভুল ত্রুটি থাকতেই পারে। আমি তারেক রহমানকে বলব, এই দলে সবাই আপনার অনুসারী, আপনি সবার শ্রদ্ধার পাত্র। বিএনপির বিভিন্ন সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে সাবেক মন্ত্রী হাফিজ বলেন, জিয়াউর রহমানের আদর্শ থেকে দূরে সরে যাওয়ার ফলে বিএনপি ক্ষমতার বাইরে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। অনেকগুলো ভুল আমরা করেছি। সেই ভুল ডিসকাস করার ফোরাম এটা

না। প্রকাশ্যে এটা বলা উচিত না। কিন্তু আমারতো কোনো ফোরাম নাই। দলে কোনো অবস্থা নাই। তিনি বলেন, গত ৮ বছর দলের কোনো কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়নি। নেতা নির্বাচন করার সুযোগ নাই, প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে রাজনীতি করার সুযোগ নাই, বক্তব্য রাখারও সুযোগ নাই। তিন বছর আগে আমি এই ছাদের ওপরে সাংবাদিক সম্মেলনে একটা কথা বলেছিলাম যে, আমার যথেষ্ট বয়স হয়েছে। আমি মুখ ও বধির স্কুলের ছাত্র না। সুতরাং একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কিছু কিছু কথা বলতেই হয় জাতির স্বার্থে। আমার কাছে দেশ সবার উপরে। তিনি বলেন, দলের সব নেতৃবৃন্দের প্রতি আমার শ্রদ্ধা রয়েছে, খালেদা জিয়া তিনি আমার নেত্রী, যতদিন বেঁচে থাকবেন তিনি আমার নেত্রীই থাকবেন,

সব সম্মান তিনি পাবেন। এখন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তিনিও আমাদের নেতা, তাকে সম্মান করি। কিন্তু কিছু ভুল ত্রুটি ধরিয়ে দেওয়া দরকার। হাফিজ বলেন, আমরা এমনই রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বসবাস করি, আওয়ামী লীগেরটা জানি না, কখনো আওয়ামী লীগ করি নাই, বিএনপিতে সত্যি কথা বলার মত কোনো লোক, বিশেষ করে চেয়ারপারসনের সামনে সত্যি কথা বলার মত লোক আমার চোখে পড়ে নাই। অনেক আগে সাইফুর রহমান সাহেব বলতেন তিনি একজন ত্যাগী নেতা। তাকে দুই-চারবার সত্যি কথা বলতে দেখেছি। এছাড়া সবাই ইয়েস স্যার, রাইট স্যার ছাড়া আর কোনো কিছুই জানেন না; এটা হল বাস্তবতা।
ট্যাগ:

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
পরিবেশ নৈতিকতা চর্চা না হলে পরিবেশের মূল্যবান উপাদানগুলো হারিয়ে যাবে : সেমিনারে বক্তারা পাটকলগুলো নিয়ে নতুন করে চিন্তা করছে সরকার : নানক শুদ্ধাচার নিশ্চিতকরণ ছাড়া এসডিজি অর্জন সম্ভব নয় : চট্টগ্রামে টিআইবি সোনালী আঁশ পাটের সুদিন ফিরিয়ে আনতে চাই : বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী ফায়ার সার্ভিস ও আবহাওয়া অধিদপ্তরকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ে অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ স্থায়ী কমিটির স্মার্ট দেশ উপহার দিতে নিরন্তর কাজ করছে সরকার : পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বরিশালে অচিরেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আসর বসবে : পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কুর্দি নেতাকে ৪২ বছরের কারাদণ্ড গাজা যুদ্ধে নিহত ৩৫ সহস্রাধিক ফিলিস্তিনী জীবন দিয়ে দেশ বিরোধী অপশক্তিকে মোকাবেলা করবো : নাছিম সাংবাদিক প্রবেশের বিষয় স্পষ্ট করলো বাংলাদেশ ব্যাংক তরুণরাই স্মার্ট বাংলাদেশের অভিযাত্রার সূর্য সারথি : তথ্য ও সম্প্রচার সচিব বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম বার্ষিকী উদযাপিত আগামী অর্থবছরের বাজেট সংকটেও উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা রিজার্ভে স্পর্শকাতর তথ্য বিক্রি করেন র‌্যাব-এটিইউর দুই কর্মকর্তা বিদেশে ৬ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা ঋণের খোঁজ বকেয়া ভূমি উন্নয়ন কর ৪৪৮ কোটি টাকা রণক্ষেত্র এখন জাবালিয়া, ইসরাইল-হামাস তুমুল লড়াই রাজধানীতে দাপটে চলছে ব্যাটারির রিকশা সিলেটে নতুন হোল্ডিং ট্যাক্স বাতিল হচ্ছে না