নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে প্রশাসনে – U.S. Bangla News




নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে প্রশাসনে

ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স:-
আপডেটঃ ৩০ মে, ২০২৩ | ৮:৫৭
বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি ঘোষণার পর থেকে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে জনপ্রশাসনে। অনেকে নিজে থেকে নিরপেক্ষ থাকার ভান করছেন। কেউ কেউ বলতে শুরু করেছেন, তারা কোনো পক্ষে নেই। তাদের একমাত্র পরিচয় প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। এদিকে রাতারাতি রং পরিবর্তন করে সুযোগসন্ধানীদের মধ্যে গত ১৫ বছর যারা নানাভাবে সুবিধা নিয়েছেন, সরকারের ইমেজ নষ্ট করে আকণ্ঠ দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন, তারা এখন ভোল পালটানোর চেষ্টা করছেন। তবে প্রত্যাশা অনুযায়ী পোস্টিং ও সুবিধা না পেলেও যারা ছাত্রজীবন থেকে ছাত্রলীগ করা আমলা, তারা ভিসানীতির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছেন। আওয়ামী লীগের জন্য সবকিছু ত্যাগ করতে প্রস্তুত-এমন আমলারা সুযোগসন্ধানীদের কোনো প্রকার ছাড় না দিতে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছেন। যুগ্মসচিব থেকে সচিব পর্যায়ে কর্মরত কয়েকজন

কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গত তিন মেয়াদে যেসব বর্ণচোরা আমলার কারণে সরকারের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে, তাদের কোনোভাবে দেশত্যাগ করতে দেওয়া হবে না। যারা নানা অজুহাতে বিদেশে চলে গেছেন, তাদের ফিরিয়ে আনা হবে। এছাড়া স্ত্রী-সন্তানদের উন্নত দেশে সেটেল করে যারা গোপনে পাততাড়ি গোটানোর চেষ্টা করছেন, তাদের চিহ্নিত করে সরকারপ্রধানকে জানানো হবে। তারা মনে করেন, একসাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই দেশ কারও কাছে নতি স্বীকার করবে না। আমাদের দেশের সমস্যা আমরাই সমাধান করব। যে যাই বলুক না কেন, শেষ পর্যন্ত রাজনীতিবিদদের হাতে ক্ষমতা থাকতে হবে। তবে দেশের প্রয়োজনে প্রশাসনকে রাজনীতিমুক্ত করা এখন সময়ের দাবি। শেষ পর্যন্ত আমলারা কখনো কোনো সরকারের বন্ধু হতে পারে না।

বরং অনেক ক্ষেত্রে তাদের কারণে অনেক সরকারে ব্যাপক ক্ষতি হয়। প্রসঙ্গত, ২৪ মে শুধু বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে মোটা দাগে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু দেখতে চায়। কিন্তু যারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে বাধা হয়ে নানামুখী ভূমিকা রাখবে, তাদের ব্যাপারে নতুন ভিসানীতি প্রয়োগ করা হবে। তারাসহ তাদের পরিবারের সদস্যদের কাউকে আমেরিকার ভিসা দেওয়া হবে না। মূলত, এমন ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে সবদিকে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেন, যারা গণতন্ত্রের পথে বাধা হবে, এই ভিসানীতি তাদের ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি করবে। যারা গণতান্ত্রিক পদ্ধতি বিনষ্ট করতে ভূমিকা রাখবে, তাদের

ক্ষেত্রে তো সমস্যা হবেই। এছাড়া যারা সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে বাধা হবে, তাদেরও সমস্যা হবে। তবে যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে গণতন্ত্রের পথে কোনো ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করবে না, তাদের সমস্যা হবে না। সাবেক সিনিয়র সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান বলেন, একটা নেতিবাচক প্রভাব তো পড়বেই। নির্বাচনের সঙ্গে সম্পৃক্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যদি নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে চায়, ভূমিকা রাখতে চায়, সেই ক্ষেত্রে তাদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা অনেক বেশি। তবে যারা নিরপেক্ষভাবে নির্বাচনি দায়িত্ব পালন করবে, তাদের কোনো সমস্যা হওয়ার কথা না। তিনি আরও বলেন, যারা নির্বাচনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন, তারা অনেকটা সেফ জোনে আছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের রেফারেন্স দিয়ে আবু আলম শহীদ খান

আরও বলেন, যারা যুক্তরাষ্ট্রে টাকা পাচার করেছেন, যাদের ছেলেমেয়ে সেখানে বসবাস করেন, তাদের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা বেশি। প্রথমত, মার্কিন প্রশাসন তাদের সন্তানদের ভিসা বাতিল করতে পারে। দ্বিতীয়ত, তাদের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করতে পারে। দেশে নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত প্রায় ১০ লাখ কর্মচারী মার্কিন নতুন ভিসানীতির বিরূপ প্রভাবে রয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। এছাড়া রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, বিচারপতি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও রয়েছেন এ তালিকায়। সুতরাং নতুন ভিসানীতি দেশের প্রশাসনব্যবস্থার ওপর একধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বেই। সাবেক জনপ্রশাসন সচিব শেখ মো. ইউসুফ হারুন বলেন, ভিসা একটি গোপনীয় বিষয়। এ নীতিমালা ঘোষণার আগেও আবেদন করা সব সরকারি কর্মকর্তা কি ভিসা পেয়েছেন? অবশ্যই পাননি। কেন ভিসা দেওয়া হয় না,

তাও তারা কখনই ব্যাখ্যা করেন না। ভিসা দেওয়া-না-দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের এখতিয়ার এবং সার্বভৌমত্ব। এটি একটি অস্পষ্ট ঘোষণা। তবে বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে নতুন ভিসানীতি জাতি হিসাবে আমাদের জন্য লজ্জার। তবে সবাই ভয় পেয়ে গেছেন। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কি একমাত্র দেশ যে সেখানে যেতেই হবে। পৃথিবীতে আর কোনো দেশ কি নেই, যেখানে যাওয়া যায় বা যাবে। ইউসুফ হারুন বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এতে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। আমরা এ দেশেই থাকব। সম্মানের সঙ্গে থাকব। আমেরিকায় যাওয়ার দরকার নেই। ভয় পাওয়ারও কারণ নেই। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আজকের এই পরিস্থিতির জন্য আমলারা অনেকাংশে দায়ী। তাদের

কুকর্মের ফল ভোগ করছে দেশ। তারা অপরাধ না করলে আজকের এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো না। জাতি হিসাবে আমরা বিশ্বদরবারে লজ্জায় পড়েছি। আমরা এ অবস্থার পরিবর্তন চাই। কে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, হচ্ছে এবং হবে, তা দেখার সময় নেই। এছাড়া দেশের কোনো ক্ষতি আমরা মেনে নিতে পারি না। তিনি বলেন, আমলাদের লাভক্ষতি এখানে বিবেচনার সুযোগ নেই। আমার দেশের কী লাভক্ষতি হবে, তা আমরা দেখব। সব সময় তাদের আইন মেনে কাজ করার কথা। কিন্তু দুঃখজনক বাস্তবতা হচ্ছে, তারা আইন মানার পরিবর্তে দলীয় কর্মীর মতো আচরণ করেছেন এবং করছেন। আমরা এ অবস্থার পরিবর্তন চাই। অন্যথায় পরিণাম ভোগের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। বাংলাদেশ অ্যাডমিনেস্ট্রেটিভ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ

সম্পাদক অতিরিক্ত সচিব এসএম আলম বলেন, মার্কিন ভিসানীত আন্তঃরাষ্ট্রীয় বিষয়। আমরা মনে করি না এর ক্ষতিকর কোনো প্রভাব প্রশাসনের ওপর পড়বে। প্রশাসনের কেউ আমাদের কাছে এ বিষয়ে কোনো কিছু জানতেও চায়নি। এ বিষয়ে আমাদের কোনো ধরনের বক্তব্যও নেই।
ট্যাগ:

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
সর্বনাশা ‘স্টোন ব্রিকস’ ডলারের দর বাজারভিত্তিক না হওয়ায় উদ্বেগ সিকিউরিটি প্রিন্টিং প্রেসের ওপর নজর ডিবির মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা বাড়াল সরকার হিট স্ট্রোকে আরও ৮ মৃত্যু, বেশি আক্রান্ত শ্রমজীবীরা বিমানের ফ্লাইটে বিদ্যুৎ ছিল না ২ ঘণ্টা ইসরাইলি স্থাপনায় আবার হিজবুল্লাহর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচন: প্রতীক পেয়ে শুরু প্রচার-প্রচারণা বিদেশি বিনিয়োগেই হবে বে-টার্মিনাল নির্মাণ দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলার ভোটে ৬৪ নেতাকে শোকজ বিএনপির ঝিনাইদহ-১ আসনে উপনির্বাচন শনিবার থেকে নৌকার মনোনয়ন ফরম বিক্রি আ.লীগের গ্যাটকো মামলায় খালেদা জিয়াসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন ২৫ জুন চামেলীকে আওয়ামী লীগ থেকে অব্যাহতি কমিউনিটি অপ-এড নিউইয়র্ক সিটির অনন্য অর্জন ফ্লোরিডায় বিমানঘাঁটিতে কুমির সব আরোহীর মৃত্যুর শঙ্কা যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিমান বিধ্বস্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পানির সংকট ইসরাইলি স্থাপনায় আবার হিজবুল্লাহর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা গাড়ি লক্ষ্য করে থানচিতে কেএনএফের গুলি রেমিট্যান্স প্রেরকদের জন্য আরও সুবিধা চায় সংসদীয় কমিটি