নিখোঁজ নেতাদের অবিলম্বে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার রাত আড়াইটার দিকে রাজধানীর শিশু হাসপাতাল থেকে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মারজুক আহমেদকে সাদা পোশাকধারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নিয়ে যায়। এখন পর্যন্ত তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। এছাড়া গত ৩০ জুন দুপুরে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলা কৃষকদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুজ্জামানকে রতনপুরের নিজ বাড়ি থেকে গোয়েন্দা পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। এখন পর্যন্ত তারও কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। ১ জুলাই সন্ধ্যায় ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সহসভাপতি আতিকুর রহমান রাসেলকে রাজধানীর আজিমপুর অগ্রণী স্কুলের সামনে থেকে ডিবি তুলে নিয়ে গেলেও এখনো

পর্যন্ত তার কোনো সন্ধান মেলেনি। বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল এসব অভিযোগ করেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, শনিবার ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে ও সোমবার সারা দেশের সব মহানগর এবং বুধবার সারা দেশের সব জেলা শহরে খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে শান্তিপূর্ণ সমাবেশে সরকারদলীয় সন্ত্রাসী ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর আক্রমণ চালিয়ে গুরুতর জখম করেছে। তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের মুক্তির দাবিতে বুধবার নাটোর জেলা বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশস্থলে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সশস্ত্র হামলা চালিয়ে বিএনপির বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক এবং রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, নাটোর জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক শহীদুল ইসলাম বাচ্চুসহ অনেক নেতাকর্মীকে গুরুতর আহত করে।

পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সমাবেশে যাওয়ার পথে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বিএনপি নেতাকর্মীদের গাড়িবহরে অতর্কিত হামলা চালিয়ে কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর এবং কলাপাড়া উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মামুন সিকদারসহ অনেক নেতাকর্মীকে গুরুতর আহত করে। সকাল থেকে বাগেরহাট জেলা বিএনপি কার্যালয়ের ভেতর বিএনপির গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীমসহ নেতৃবৃন্দকে পুলিশ অবরুদ্ধ করে রাখে। নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানা বিএনপি নেতা ও দুবতারা ইউনিয়ন বিএনপি নেতার ওপর আওয়ামী লীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হামলা করে তাদেরকে গুরুতর আহত করে। ৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে জোর করে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলকারী আওয়ামী অবৈধ শাসকগোষ্ঠী বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর সহিংস আক্রমণ শুরু করেছে। নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে তাদেরকে গুরুতর জখমসহ বিভিন্নভাবে নির্যাতনের উদ্দেশ্যই হলো—আওয়ামী অবৈধ

শাসন নিয়ে কেউ যেন প্রতিবাদ করতে সাহস না পায়। মির্জা ফখরুল বলেন, ৩০ জুন কামরাঙ্গীচর থানার একটি ‘মিথ্যা’ মামলায় থানা বিএনপির প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জহিরুল হকসহ ৬ জন নেতাকর্মী এবং কোতয়ালী থানার আরেকটি ‘মিথ্যা’ মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক দলের আহ্বায়ক সুমন ভূঁইয়ার জামিন বাতিল ও তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়। ‘বিএনপিসহ সমমনা দল এবং গণতন্ত্রকামী মানুষের চলমান আন্দোলন—কর্মসূচিকে বাধাগ্রস্ত করতেই অবৈধ আওয়ামী দখলদার সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও তাদের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দিয়ে পৈশাচিক উন্মাদনায় মেতে উঠেছে। এ ধরনের বর্বরতার বিরুদ্ধে ধিক্কার জানানোর ভাষা আমার জানা নেই। নিষ্ঠুরতা, পৈশাচিকতা, বর্বরতা, অমানবিকতার দৃষ্টান্ত হচ্ছে আওয়ামী লীগ’। বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব হামলায় গুরুতর আহত নেতাকর্মীদের

সুস্থতা কামনা করেন এবং নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।