বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেছেন, শেখ হাসিনার ও আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচনে বিএনপি যাবে না। বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে জনগণ ঐক্যবদ্ধ আছে। যদি এ সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি না মানে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি পাবেন। সকলে যার যার অবস্থান থেকে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়বেন। আমাদের আন্দোলনে বিজয় ইনশাল্লাহ সুনিশ্চিত। শুক্রবার সন্ধ্যায় নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মানিকপুর গ্রামে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের ৮৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, আগের সংসদ নির্বাচনে দিনের ভোট রাতে হয়েছে, এবার হাসিনার অধীনে ভোট হলে- দুইদিন

আগে ভোট হয়ে যাবে। কারণ আওয়ামী লীগ জনগণ এবং গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। নির্বাচন আসলে আওয়ামী লীগ নানা ষড়যন্ত্র করে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে তারা নানা ষড়যন্ত্র করে জনগণের ভোটাধিকার হরণের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছিল। সামনে নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ ষড়যন্ত্র করবে, এদের জনগণ বিশ্বাস করে না বলেই জনগণও আওয়ামী লীগের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। তিনি আরও বলেন, ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আওয়ামী লীগেরই ছিল, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আওয়ামী লীগ দুইবার ক্ষমতায়ও এসেছিল। এখন তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার মানে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারে আওয়ামী লীগের ভয় কিসের, বলুক না। যদি নিরপেক্ষ ভোট হয়, নোয়াখালীতে একটি আসনও আওয়ামী লীগ পাবে না। ব্যারিস্টার মাহবুব

উদ্দিন খোকন বলেন, আমেরিকার নিষেধাজ্ঞায় (স্যাংশন) গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের ফলাফলে আওয়ামী লীগ ও তাদের নেতাকর্মীরা চুপ হয়ে গেছে। নৌকার যে জোয়ার এসেছিল, তা এখন ডোবার সময় এসে গেছে। এখন জোর করে আর ভোট নিতে পারবেন না। জনগণ যেখানে নৌকা, সেখানে প্রতিরোধ করছে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে গণতন্ত্রের বিজয় আনতে চাই। কিন্তু প্রশাসনকে অনৈতিক ব্যবহার করলে, অনুরোধ করে বলবো-পুলিশ, র‌্যাব, প্রশাসনের ভাইয়েরা- আওয়ামী লীগের দলীয় হয়ে সরকারের গণবিরোধী কোনো কাজ করবেন না। যদি আওয়ামী লীগের নির্দেশে দলীয়ভাবে কাজ করেন, আমেরিকার স্যাংশনের বিষয় তো জেনেছেন- ডিসি, এসপি, ইউএনও, ওসি সাহেবদের খবর আছে কিন্তু। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য বেলায়েত হোসেন স্বপনের সভাপতিত্বে

ও সদস্য সচিব মাহমুদুর রহমান রিপনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন- ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের সহধর্মিণী বেগম হাসনা জসীম উদদীন মওদুদ, ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মাসুদ, প্রকৌশলী হানিফ, কবিরহাট বিএনপির আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান মঞ্জু, আবদুর রহীম চেয়ারম্যান, অ্যাডভোকেট আজম খান, মমিন বাহার, জাতীয়তাবাদী মহিলা দল নেত্রী জোসনা বেগম, জাসাস নেতা অধ্যাপক শেখ সাদি বাবু, মাস্টার ওবায়দুল হক, আবদুল হাই, বেলায়েত হোসেন, কবির আহম্মদসহ জেলা-উপজেলার নেতৃবৃন্দ। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের সহধর্মিণী বেগম হাসনা জসীম উদদীন মওদুদ বলেন, এ সরকারের আমলে নোয়াখালীতে কোনো উন্নয়ন হয়নি। নোয়াখালীতে যে সব উন্নয়ন হয়েছে তা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের আমলে হয়েছে। নোয়াখালীর মানুষ হল-সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী। এ সরকার রোহিঙ্গাদের জন্য কোটি

কোটি টাকা খরচ করছে, তাদের বাসস্থানের জন্য। কিন্তু নোয়াখালীর উপকূলীয় অঞ্চলে নদী ভাঙ্গন কবলিত মানুষের জন্য কোনো বাসস্থানের ব্যবস্থা করেনি। হাসিনা সরকার বিদেশীদের বড় বড় গলায় বলে, আমরা এদেশের একটা লোককেও না খেয়ে মরতে দেইনি। এটা সঠিক কথা না- দেশের মানুষ ক্ষুধা, দারিদ্রে অসহায়ত্বের মধ্যে আছে। তিনি বলেন, ব্যারিস্টার মওদুদ ছিলেন আওয়ামী লীগের ভয়ংকর রাজনৈতিক শত্রু। এ সরকারের সব বাজেটগুলো গরিব মানুষকে মারার বাজেট, বড় লোক ও লুটেরা বানানোর বাজেট। আমেরিকা বলেছে, যদি কেউ নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা দেয়, তাদেরকে আমেরিকায় ঢুকতে দেওয়া হবে না।