কেবল তিস্তার পানি নয়, আছে নিরাপত্তার প্রশ্নও – U.S. Bangla News




কেবল তিস্তার পানি নয়, আছে নিরাপত্তার প্রশ্নও

ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স:-
আপডেটঃ ২৮ জুন, ২০২৪ | ৫:৫৬
অভিন্ন নদী তিস্তার বাংলাদেশ অংশে পানি সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনাবিষয়ক প্রকল্পটি পেতে নানামুখী চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে নয়াদিল্লি ও বেইজিং। এতে অনেকটাই এগিয়ে দিল্লি। তবে প্রকল্পটি যে শুধু পানিবিষয়ক তা নয়, এর সঙ্গে নিরাপত্তার প্রশ্নটিও জড়িত। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে অনেক প্রস্তাবই এসেছে। যে প্রস্তাব অধিক লাভজনক ও উপযোগী হবে, সেটাই সরকার গ্রহণ করবে। তবে তিস্তা প্রকল্পটি ভারত করে দিলে সব সমস্যারই সমাধান হয়ে যায়। কূটনীতিকরা মনে করেন, তিস্তায় পানি বণ্টন ইস্যুটি এখন গৌণ। গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে নিরাপত্তার প্রশ্নটি। কারণ, তিস্তা প্রকল্পটি যেখানে বাস্তবায়ন হবে, সেটি বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের কাছে। আর সেখানে কোনোভাবেই চীনের উপস্থিতি দেখতে চায় না দিল্লি। বাংলাদেশ এমন

সিদ্ধান্ত নেবে না, যা ভারতের নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন নিয়ে ভারতের সঙ্গে দরকষাকষি চলছে কয়েক দশক ধরে। তবে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর পানি বণ্টনের মতো স্পর্শকাতর বিষয়টি গ্রহণযোগ্য সমাধানের দিকে যাচ্ছিল। তখন তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রস্তুত হয় একটি খসড়া চুক্তিও। তবে শেষ পর্যন্ত ভারত চুক্তিটি সইয়ে ব্যর্থ হয়। তিস্তা চুক্তি সই করতে না পারায় দীর্ঘ এক দশক পানি নিয়ে দু’দেশের যৌথ নদী কমিশনের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকও করতে দেয়নি ভারত। ওই কর্মকর্তা বলেন, ভারতের নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগ তৈরি করতে

পারে এমন কোনো কাজ করবে না বাংলাদেশ। আর তিস্তায় চীন যুক্ত হলে দেশটির প্রচুর নাগরিক বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের কাছে শিলিগুড়ি করিডোর বা চিকেনস নেকের কাছে কাজ করবে। আর সেখানে চীনা নাগরিকের উপস্থিতি কখনোই চাইবে না দিল্লি। তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে দিল্লি থেকে কোনো সমাধান না পেয়ে যতটুকু পানি পাওয়া যাচ্ছে তার সর্বোচ্চ ব্যবহার ও সংরক্ষণে মনোযোগ দেয় ঢাকা। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বাংলাদেশ সফরের মধ্য দিয়ে দু’দেশের মধ্যে নদী খনন, ভূমি পুনরুদ্ধারসহ নদী ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে একমত হয় ঢাকা ও বেইজিং। সেই থেকে তিস্তা নিয়ে কাজ করতে থাকে চীন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৯ সালের মে মাসে তিস্তা নদী

ব্যবস্থাপনাবিষয়ক একটি ‘প্রিলিমিনারি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল’ বা উন্নয়ন প্রকল্পের প্রাথমিক প্রস্তাব (পিডিপিপি) প্রস্তুত করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। আনুষ্ঠানিক শিরোনাম তিস্তা নদী সমন্বিত ব্যবস্থাপনা ও পুনরুদ্ধার প্রকল্প (টিআরসিএমআরপি)। ২০১৯ সালের ৩ জুন পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক স্বাক্ষরিত প্রস্তাবটি ২০২০ সালের ২৩ জুলাই পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, তিস্তায় বিদ্যমান সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকার পাওয়ার চায়না প্রস্তাবিত টিআরসিএমআরপি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আনুষ্ঠানিক প্রাথমিক প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে যাওয়ার পর থেকেই মূলত ভারতের দিক থেকে আপত্তি ওঠে। কূটনৈতিক সূত্র বলছে, এমনিতেই বাংলাদেশে চীনের বাড়তে থাকা প্রভাব নিয়ে ভারতের উদ্বেগ রয়েছে। তবে চীন যেভাবে অর্থ সহায়তা

নিয়ে এগিয়ে আসতে পারে, সে সক্ষমতা ভারতের নেই। তাই এক প্রকার চুপ করে থাকে। তবে কৌশলগত প্রকল্পগুলোতে চীনের উপস্থিতি কখনোই দেখতে চায় না ভারত। আর বাংলাদেশও ভারতকে অসন্তুষ্ট করে এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নিতে চায় না। যেমনটি হয়েছিল সোনাদিয়া গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্পের ক্ষেত্রে। ২০১২ সালে অনুমোদন দেওয়া এ গভীর সমুদ্রবন্দরের প্রকল্পটি ছিল সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্পের একটি। সোনাদিয়া গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে এর সম্ভাব্যতা যাচাইও হয়েছিল। এ বন্দরটি নির্মাণে চীনের সঙ্গে চুক্তিও হওয়ার কথা ছিল। তবে এ প্রকল্পে চীনের যুক্ত হওয়া নিয়ে ভারতের আপত্তির কারণে শেষ পর্যন্ত ঢাকা ও বেইজিং ওই বন্দর নির্মাণে একমত হয়নি। পরে আর আলোর মুখও দেখেনি প্রকল্পটি। সোনাদিয়ায় যেহেতু

চীনের সঙ্গে কথা অনেক দূর এগিয়ে ছিল, ফলে অন্য কোনো দেশকে এখানে যুক্ত করেনি বাংলাদেশ। বরং সোনাদিয়া থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে মাতারবাড়ীতে জাপানের সহায়তায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে এগিয়ে যায় ঢাকা। তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে অন্য কোনো উপাদান গুরুত্ব পাওয়া উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির। তিনি বলেন, অঞ্চলের পানি নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান চাইলে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর পানি বণ্টন, ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি অগ্রাধিকার দিতে হবে। এ বিষয়গুলো যদি বাদ বা কম গুরুত্ব দেওয়া হয়, তবে ভবিষ্যতে দীর্ঘ মেয়াদে অঞ্চলের পানিসম্পদের জন্য ইতিবাচক হবে না। অন্য উপাদানের চেয়ে পানি বণ্টন, ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু দিক থেকে টেকসই সমাধানের পক্ষে

মত দেন সাবেক এ কূটনীতিক।
ট্যাগ:

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
ইসরাইলের ‘প্রস্তাব’ মেনে নিতে চাপ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র: হামাস বৃষ্টিতে পাহাড়ধসের শঙ্কা, সতর্কতা জারি অনির্দিষ্টকালের জন্য ঢাবির সব পরীক্ষা স্থগিত জবি ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ কোরিয়ায় কেন জনপ্রিয় হয়ে উঠলো ‘হ্যাপিনেস ফ্যাক্টরি’ ১৩ বছরের কিশোরকে গুলি করে হত্যা করল নিউইয়র্ক পুলিশ ৩২ বছরেও বদলায়নি দ. আফ্রিকার বিশ্বকাপ ভাগ্য মতিউরকে নিয়ে বিভিন্ন জেলায় দুদকের চিঠি এনবিআরের সেই প্রথম সচিব ফয়সালকে বদলি করাচিতে যাত্রীবাহী বাস উলটে নিহত ৭ বাজেটে বিদেশনির্ভরতা অনেক কমিয়ে আনা হয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী সারাদেশে বৃষ্টি নিয়ে দুঃসংবাদ আবহাওয়া অফিসের বেনজীরের ৪ ফ্ল্যাটে প্রবেশে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের নির্দেশ আবেদন নিয়ে আদালতে হাজির মতিউরপত্নী লায়লা ভারতের টি২০ বিশ্বকাপ জয়ের কারিগরেরা এখন কোথায়? ১৭৯ কিমি বেগে আঘাত হানবে ‘হারিকেন বেরিল’ কোপা-ইউরোয় যে বিচিত্র অভিজ্ঞতা হলো মেসি-রোনালদোর নতুন করে ইসরাইলি অবৈধ বসতি স্থাপন, ওআইসির তীব্র নিন্দা যে কারণে নাগরিকদের দ্রুত লেবানন ছাড়তে বলল সৌদি প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের নায়করা এখন কোথায়