আ.লীগে হেভিওয়েটদের লড়াই সরকার পতন চায় বিএনপি – U.S. Bangla News




আ.লীগে হেভিওয়েটদের লড়াই সরকার পতন চায় বিএনপি

ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স:-
আপডেটঃ ৮ নভেম্বর, ২০২৩ | ৮:৩১
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট নেতার বাস দ্বীপজেলা ভোলায়। মনোনয়ন প্রশ্নেও তাই দুদলেই রয়েছে হেভিওয়েটদের লড়াই। অনেকটা প্রকাশ্যেই এ লড়াইয়ে আছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতারা। বিপরীতে আন্দোলনের বাইরে মুখ খুলতে রাজি নয় বিএনপি। যদিও মনোনয়ন প্রশ্নে দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে রয়েছে স্পষ্ট বিভক্তি। তবু এ মুহূর্তে সরকার পতনের আন্দোলনেই একাট্টা সবাই। ৭ উপজেলা আর ৪ নির্বাচনি এলাকায় ’৯১-পরবর্তী নির্বাচনের হিসাব ধরলে বিএনপি বা আওয়ামী লীগ-কোনো দলেরই একক অবস্থান নেই এখানে। পরিবেশ আর পরিস্থিতি বুঝেই যেন ভোট দেন এই জেলার মানুষ। তবে ১৫ বছর ধরে এখানকার ৪টি আসনেই সংসদ-সদস্য আওয়ামী লীগ নেতারা। আগামী নির্বাচনেও সবকটি আসনে জয়ের দৃঢ়প্রত্যয় তাদের।

নির্বাচন প্রশ্নে বিএনপির চাওয়া কেবল নিরপেক্ষ ভোট। ভোট নিরপেক্ষ হলে কে জিতেন আর কে হারেন, তা সময়ই বলে দেবে বলছেন দলটির নেতারা। ভোলা-১ (সদর) : এ আসনের বর্তমান সংসদ-সদস্য আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। জেলার রাজনীতিতে কিংবদন্তিসম এই নেতা আসন্ন জাতীয় নির্বাচনেও চাইবেন নৌকার মনোনয়ন। নির্বাচনি এলাকার একটি পৌরসভা, সদর উপজেলা এবং ১৩ ইউনিয়নে রয়েছে তার ব্যাপক জনভিত্তি। বাংলাদেশের রাজনীতির বহু উত্থান-পতনের সাক্ষী এই নেতার মনোনয়ন প্রায় নিশ্চিত হলেও এখানে আওয়ামী লীগের আরও কয়েকজন দলীয় মনোনয়ন চাইছেন। তারা হলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুল কাদের মজনু মোল্লা, ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মাহবুবুর রহমান হিরণ এবং সাবেক ছাত্রলীগ

নেতা হেমায়েতউদ্দিন। অন্যদিকে বিএনপির রাজনীতির কিংবদন্তি নেতা সাবেক মন্ত্রী মোশাররফ হোসেন শাহজাহানের মৃত্যুর পর এখানে খানিকটা এলোমেলো হয়ে পড়ে দলটি। সেই ফাঁকে এখানে জেঁকে বসেন প্রয়াত নাজিউর রহমান মঞ্জুর ছেলে ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ। জোটের শরিক বিজেপির (নাজিউর) চেয়ারম্যান হিসাবে এখান থেকে মনোনয়ন নিয়ে সংসদ-সদস্য হন তিনি। এক্ষেত্রে তাকে সবচেয়ে বেশি সহায়তা করে তার বাবা প্রয়াত নাজিউর রহমান মঞ্জুর উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও জনপ্রিয়তা। জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন হলে আবারও এখানে মনোনয়ন চাইবেন ব্যরিস্টার পার্থ। তবে স্থানীয় বিএনপি নেতারা চান না দলের বাইরে এখানে অন্য কেউ মনোনয়ন পাক। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম নবী আলমগীর বলেন, এ আসন বিএনপির ঘাঁটি। নিরপেক্ষ নির্বাচনে এখানে কখনোই হারেনি

ধানের শীষ। আমাদের দাবি অনুযায়ী নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে যদি নির্বাচন হয় তবে দলের কাছে বিএনপির প্রার্থী চাইব। দল থেকে নির্বাচনের নির্দেশনা এলে এ আসনে গোলাম নবী আলমগীর ছাড়াও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হায়দার আলী লেলিন এ প্রার্থী হতে পারেন। এছাড়া জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক মোয়াজ্জেম হোসেন আজীম গোলদার ও ইসলামী আন্দোলন জেলা উত্তর সহ-সভাপতি মাওলানা মিজানুর রহমান প্রার্থী হবেন বলে শোনা যাচ্ছে। ভোলা-২ (দৌলতখান-বোরহানউদ্দিন) : এ আসনটি একসময় ছিল আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদের নির্বাচনি এলাকা। এখান থেকেই বারবার সংসদ-সদস্য হয়েছেন তিনি। পরে তিনি ভোলা আসনে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন। বর্তমানে এ আসনের সংসদ-সদস্য তোফায়েল আহমেদের ভাইয়ের ছেলে আলী

আজম মুকুল। বিএনপি ও আওয়ামী লীগ দুদলই আসনটিকে দাবি করে নিজেদের ভোটের ঘাঁটি। তবে ২০০৮ সালের পর থেকে এখানে জয়ের মুখ দেখেনি বিএনপি। এর আগে তোফায়েল আহমেদকে হারিয়ে সংসদ-সদস্য হন বিএনপির আলোচিত ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের বড় ভাই হাফিজ ইব্রাহিম। বর্তমানে এখানে সংসদ-সদস্য মুকুলের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইছেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য ড. আশিকুর রহমান শান্ত। শান্ত সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত নাজিউর রহমান মঞ্জুর ছেলে ও ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থর ভাই। এছাড়াও এখানে মনোনয়ন চাইছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্য ব্যারিস্টার আফতাব রাজ। অন্যদিকে সাবেক সংসদ-সদস্য হাফিজ ইব্রাহিমকে এ আসনে বিএনপির অপ্রতিদ্বন্দ্বী ধরা হলেও মনোনয়ন দৌড়ে তার সঙ্গে

আছেন বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম মোমিন এবং জাহাঙ্গীর আলম। রাজনৈতিক মামলাসহ অন্য যে কোনো কারণে হাফিজ ইব্রহিম নির্বাচন করতে না পারলে তার স্ত্রী মাফরুজা সুলতানা অথবা ছেলে ব্যারিস্টার মারুফ ইব্রাহিম এখানে প্রার্থী হতে পারেন। এছাড়া জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান ফরাজী এবং ইসলামী আন্দোলনের বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা ওবায়েদ বীন মোস্তফা এখানে প্রার্থী হবেন বলে শোনা যাচ্ছে। ভোলা-৩ (লালমোহন-তজুমদ্দিন) : এ আসনে বর্তমান সংসদ-সদস্য ঢাকা মহানগর যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নূরুন্নবী চৌধুরী শাওন। ১৩ বছর ধরে তিনি সংসদ-সদস্য এখানে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে প্রথমে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে সংসদ-সদস্য হন সাবেক সেনা কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন। নির্বাচনি হলফনামায় ভুল তথ্য

দেওয়ার অভিযোগে ২০১০ সালে সংসদ-সদস্য পদ হারান তিনি। এরপর উপনির্বাচনে সংসদ-সদস্য হন শাওন। এবারও তিনি এ আসনে মনোনয়ন চাইছেন। এখানে তিনি মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়টি প্রায় নিশ্চিত বলে নেতাকর্মীদের ধারণা। এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইছেন সাবেক সংসদ-সদস্য জসিম উদ্দিন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপকমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আবু নোমান হাওলাদার এবং কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোবাশ্বির আলী স্বপন। ২০০৮ সালের আগে এ আসনে টানা ছয়বার সংসদ-সদস্য হয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ ইব্রাহিম। স্বাধীনতা-পূর্বে তার বাবাও সংসদ-সদস্য ছিলেন এখানে। এককথায় ভোটযুদ্ধের অপ্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবেই ধরা হয় তাকে। এক-এগারোর সময় দলের মূলধারার বিরুদ্ধে গিয়ে রাজনৈতিকভাবে খানিকটা বেকায়দায় পড়েন এই বিএনপি

নেতা। পরে অবশ্য আন্দোলন-সংগ্রামে ভূমিকা রেখে পুনরুদ্ধার করেন অবস্থান। শারীরিক অসুস্থতার কারণে বর্তমানে রাজনীতির মাঠে খুব একটা দেখা না মিললেও আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন তিনি। হাফিজ ইব্রাহিম ছাড়াও এখানে বিএনপির মনোনয়ন চাইতে পারেন তজুমদ্দিন উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, লালমোহন উপজেলা বিএনপির সাবেক সম্পাদক নজরুল কাদের মার্শাল হিমু এবং চরভূতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান টিটব। এছাড়া জাতীয় পার্টির জেলা সদস্য সচিব নুরুন্নবী সুমন, সাবেক সভাপতি কেফায়েত উল্লাহ নজিব এবং ইসলামী আন্দোলন জেলা দক্ষিণের সহসভাপতি মাওলানা মোসলেহ উদ্দিন এ আসানে মনোনয়ন চাইবেন বলে শোনা যাচ্ছে। ভোলা-৪ (চরফ্যাশন-মনপুরা) : এ আসনে টানা তিনবারের সংসদ-সদস্য আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব। তার বাবা প্রয়াত

অধ্যক্ষ নজরুল ইসলামও ছিলেন এ আসনের সংসদ-সদস্য। উন্নয়ন প্রশ্নে নির্বাচনি এলাকাকে রানির মতো সাজিয়েছেন জ্যাকব। চরফ্যাশন-মনপুরাকে নতুন রূপে পরিচিত করিয়েছেন তিনি। উন্নয়নের পাশাপাশি নির্বাচনি এলাকাকে পর্যটনকেন্দ্র হিসাবেও দেশ তথা বিশ্বের কাছে পরিচিত করিয়েছেন এই আওয়ামী লীগ নেতা। ১৫ বছরের চেষ্টায় এখন দেশি-বিদেশি পর্যটকের অন্যতম গন্তব্যে পরিণত হয়েছে সাগরপারের এ দুই উপজেলা। চরফ্যাশন-মনপুরাকে ঢেলে সাজানো সংসদ-সদস্য জ্যাকবই এখানে আবার নৌকার মনোনয়ন পাবেন-এমনই বিশ্বাস দলের স্থানীয় নেতাকর্মীদের। তারপরও এখানে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইছেন সাবেক আমলা ঢাকা অফিসার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন। ডাকসুর সাবেক এজিএস বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম একসময় সংসদ-সদস্য ছিলেন এ আসনে। দল নির্বাচনে গেলে এবারও এ আসনে মনোনয়ন চাইবেন তিনি। যদিও তার এই মনোনয়নের বিরুদ্ধে শক্ত বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন যুবদলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সাবেক ছাত্রনেতা নুরুল ইসলাম নয়ন। এছাড়া জাতীয় পার্টির কেফায়েত উল্লাহ নজিব এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ভোলা দক্ষিণের অর্থ সম্পাদক মাওলানা সাইফুল ইসলাম এখানে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন বলে শোনা যাচ্ছে।
ট্যাগ:

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
পরিবেশ নৈতিকতা চর্চা না হলে পরিবেশের মূল্যবান উপাদানগুলো হারিয়ে যাবে : সেমিনারে বক্তারা পাটকলগুলো নিয়ে নতুন করে চিন্তা করছে সরকার : নানক শুদ্ধাচার নিশ্চিতকরণ ছাড়া এসডিজি অর্জন সম্ভব নয় : চট্টগ্রামে টিআইবি সোনালী আঁশ পাটের সুদিন ফিরিয়ে আনতে চাই : বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী ফায়ার সার্ভিস ও আবহাওয়া অধিদপ্তরকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ে অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ স্থায়ী কমিটির স্মার্ট দেশ উপহার দিতে নিরন্তর কাজ করছে সরকার : পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বরিশালে অচিরেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আসর বসবে : পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কুর্দি নেতাকে ৪২ বছরের কারাদণ্ড গাজা যুদ্ধে নিহত ৩৫ সহস্রাধিক ফিলিস্তিনী জীবন দিয়ে দেশ বিরোধী অপশক্তিকে মোকাবেলা করবো : নাছিম সাংবাদিক প্রবেশের বিষয় স্পষ্ট করলো বাংলাদেশ ব্যাংক তরুণরাই স্মার্ট বাংলাদেশের অভিযাত্রার সূর্য সারথি : তথ্য ও সম্প্রচার সচিব বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম বার্ষিকী উদযাপিত আগামী অর্থবছরের বাজেট সংকটেও উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা রিজার্ভে স্পর্শকাতর তথ্য বিক্রি করেন র‌্যাব-এটিইউর দুই কর্মকর্তা বিদেশে ৬ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা ঋণের খোঁজ বকেয়া ভূমি উন্নয়ন কর ৪৪৮ কোটি টাকা রণক্ষেত্র এখন জাবালিয়া, ইসরাইল-হামাস তুমুল লড়াই রাজধানীতে দাপটে চলছে ব্যাটারির রিকশা সিলেটে নতুন হোল্ডিং ট্যাক্স বাতিল হচ্ছে না