
ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স:-
আরও খবর

যার কারণে প্রেম-বিয়ে ভেঙেছিল অক্ষয়ের

আমরা দিকহারা পথিকের মতো ছুটছি: বুবলী

শাকিবের সঙ্গে শুটিং করে প্রাণ ভরে গেছে: ইধিকা

কাকে করুণা না করার ইঙ্গিত দিলেন পরীমনি

পরীর সঙ্গে সংসার টিকবে কিনা বলতে পারবেন চয়নিকা ও গিয়াস উদ্দিন সেলিম: রাজ

দাদুকে হারিয়ে আলিয়ার আবেগঘন পোস্ট

ফাঁস হওয়া ভিডিও নিয়ে অনুরাগীদের যে অনুরোধ করলেন তিশা
সাংস্কৃতিক ও নাগরিক আন্দোলন কর্মী গোপাল সান্যাল’র আজ জন্মদিন

আমেরিকা জুড়ে পেনডামিকের মধ্যে বর্ণ বৈষম্যর বিরুদ্ধে যে নাগরিক আন্দোলনের জোয়ার এসেছিল সেই বিক্ষোভে গুটি কয়েক বাংলাদেশিদের উপস্থিতি দেখা গেছে তাদের মধ্যে কমিউনিটির পরিচিত যুবক গোপাল সান্যালের উপস্থিতি ছিল সরব।আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মী সিতাংশ গুহের ভোরের কাগজের একটি কলামে লিখেছেন “বাংলাদেশ বা দেশের বাইরে (কলকাতার কথা জানি না), গৌরী প্রসন্ন মজুমদারকে নিয়ে স্মরণসভা বা জন্মদিন কোথাও পালিত হয় বলে শুনিনি। নিউইয়র্কে তাই হয়েছে। ঘোষণা এসেছে, এখন থেকে হবে। গৌরী প্রসন্ন মজুমদারের বাড়ি যে পাবনা, তাই আমরা ক’জনা জানতাম? পাবনার ছেলে গোপাল সান্যাল আমাদের তাই জানান দিয়ে গেলেন।পাবনার সুচিত্রা সেনকেও ইনি আগলে রেখেছেন। লক্ষ্য, এদের স্মৃতিটুকু রক্ষিত হোক, সরকার দায়িত্ব নিক।”এভাবেই আমরা গোপাল স্যানাল কে চিনি,আজীবন সংগ্রামীর ভূমিকায়। তবে পাবনার এই কীর্তিমান যুবার পুরো নাম প্রদীপ কে স্যানাল গোপাল।বাংলাদেশ কিংবা এই প্রবাসে গোপাল স্যানাল নামেই সর্বাধিক পরিচিত।পাবনা জেলা স্কুল থেকে পড়াশুনা শুরু। তারপর এডওয়ার্ড কলেজ থেকে রাজশাহী কলেজ।সেখান থেকেই সমাজ বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী সম্পন্ন করেন।পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ শাখা ছাত্রলীগ কমিটির কার্যনির্বহী সদস্য হিসেবে রাজনৈতিক জীবনের সূচনা। তখন ৯০ এ স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহন করেন।পরবর্তী জীবনে সাংস্কৃতিক আন্দোলনে জড়িয়ে যান রাজনৈতিক অগ্রযাত্রায়। বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটারের অন্যতম সংগঠন পাবনা ড্রামা সার্কেলের সাধারন সম্পাদক ও সভাপতি পদে আট বছর নেতৃত্ব দেন। তার দিকদর্শী নেতৃত্বে পাবনা ড্রামা সার্কেল পাবনা তথা জাতীয় নানা ইস্যুতে সংগ্রামী ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে পাবনার তৎকালীন সাংসদ একজন যুদ্ধপরাধী হওয়ায় প্রগতিশীল সকল আন্দোলন থামিয়ে দেয়ার প্রবনতা ছিল। সেই দু:সময়ে পাবনা ড্রামা সার্কেলের সাহসী প্রতি পদক্ষেপে ছিলেন অকুতোভয় গোপাল স্যানাল। একই সময় জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটে যুগ্ন আহব্বায়ক হয়ে দীর্ঘ সময় নেতৃত্ব দেন। পাবনা সদর ও বেড়া উপজেলার দুইজন শীর্ষ রাজাকার সাংসদের ত্রাসের রাজত্বে যখন সকল সাংস্কৃতিক আন্দোলন পাবনায় স্থবির ,সেই সময় গোপাল স্যানাল যুদ্ধপরাধীদের বিচারের ইস্যু কে আলোকপাত করে “ওঝা” নাটক মঞ্চস্থ করেন। পরবর্তীতে এই নাটকটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার,ঢাকায় মঞ্চস্থ হলে ব্যাপক আলোচিত হয়।মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দেবার আন্দোলনে তিনি ছিলেন সর্বাগ্রে। তারই সাহসী পদক্ষেপে পাবনার রাজাকার অধু্ষ্যিত অঞ্চলে “তারামন বিবি বীরপ্রতীকে”র সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়।কোন হুমকি প্রান সংশয় গোপাল স্যানালকে প্রগতিশীল আন্দোলন থেকে সরাতে পারেনি। তারই ধারাবাহিকতায় তৎকালীন ক্ষমতাশীল সরকারের প্রভাবশালী রাজাকার সাংসদের কব্জায় থাকা মহানায়িকা সুচিত্রা সেন এর বাড়ি উদ্ধার করতে সকলের সহযোগীতায় সংগঠিত করে চলে তাদের কার্যক্রম।সেই আন্দোলন বিশ্বব্যাপী বাংলা ভাষাভাষী সকল মানুষের সমর্থন অর্জন করে। আজ গোপাল স্যানাল সহ পাবনার প্রগতিশীল ব্যক্তিত্বদের দীর্ঘ, অক্লা্ন্ত সাহসী আন্দোলনের ফসল পাবনায় ‘সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংগ্রহশালা”,যা আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে সবাই জানেন। ২০১১ সালে নিউইয়র্কে প্রবাস জীবন শুরু করেন। যুদ্ধারাধীদের বিচারের দাবীতে শাহবাগে “গনজাগরন মঞ্চ” আন্দোলন শুরু হলে নিউইয়র্কে গড়ে উঠা গনজাগরন মঞ্চের অন্যতম সহযোদ্ধা হিসাবে ভূমিকা পালন করেন। উত্তর আমেরিকায় প্রগতিশীল আন্দোলনে অন্যতম কর্মী হিসাবে তিনি সবসময় মুখ্য ভূমিকায়। পরবর্তীতে ব্লগার হত্যার প্রতিবাদে নিউইয়র্কে বিভিন্ন প্রতিবাদ সমাবেশে প্রথম সারিতে থেকে প্রতিবাদী কন্ঠে গর্জে উঠেন গোপাল স্যানাল।এছাড়াও সুচিত্রা সেন মেমোরিয়াল এর পরিচালনা তারই অবদান,যার ফলশ্রুতিতে প্রতিবছর গানে ,চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর মাধ্যমে মহানায়িকা নিউইয়র্কে আলো ছড়িয়ে যান । জীবন বাজি রেখে রাজপথে থাকা এই সংস্কৃতি কর্মী গোপাল স্যানাল ,কখনো অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেননি।আজীবন লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অসীম সাহস তাকে দিয়েছে নতুন মাত্রা।সুকান্তের কবিতার মতো ‘আঠার বছর বয়স কি দু:সহ” ,তাকে কখনো চিরযুবা থেকে মলিন করতে পারেনি।সুদুর প্রবাসে থেকেও নিউইয়র্কে শ্লোগানে প্রতিবাদী কন্ঠ গোপাল স্যানাল।এই প্রানময় সংস্কৃতি কর্মী পাবনা তথা বাংলাদেশের গনমানুষের দাবী আদায়ে আজীবন সংগ্রামী ভুমিকা পালনের যে ব্রত নিয়ে পথ চলেছেন দীর্ঘসময়,কোন প্রাপ্তির আশা না রেখে,গনমানুষের বিজয় তাকে এই প্রেরনা যোগাবে সারাজীবন।আজ ৪ ফেব্রুয়ারি তার শুভ জন্মদিন । কবি সুকান্তের কবিতা দিয়ে তাকে অভিবাদন জানাই “স্বপ্নের বীজ বপন করেছি সদ্য,বিদ্যুৎবেগে ফসল সংঘবদ্ধ!তারই সুত্রপাতকে করেছি সাধন -হে সাথী, আজকে রক্তিম অভিবাদন।