সরকার সকলের জন্য খেলাধুলা নিশ্চিত করছে ॥ প্রধানমন্ত্রী




সরকার সকলের জন্য খেলাধুলা নিশ্চিত করছে ॥ প্রধানমন্ত্রী

ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স:-
আপডেটঃ ৩০ ডিসেম্বর, ২০২২ | ৭:৩৮
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ যাতে ভবিষ্যতে বিশ্বকাপ খেলতে পারে ফুটবল খেলোয়াড়দের এমনভাবে নিজেদের প্রস্তুত করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, কয়েকদিন আগে বিশ্বকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট শেষ হয়েছে, তবে আমাদের দেশ কোয়ালিফাই করতে পারেনি। আমি আশা করি বাংলাদেশ ভবিষ্যতে বিশ্বকাপ ফুটবল খেলবে এবং তোমাদের (ফুটবলার) নিজেদের সেভাবে প্রস্তুত করতে হবে। তোমরাই হবে সেই গোল্ডেন বয়। আমরাও বিশ্বকাপ জয় করব। আর ‘স্পোর্টস ফর অল’ অর্থাৎ সবার জন্য খেলাধুলা। বর্তমান সরকার সকলের জন্য খেলাধুলা নিশ্চিত করতেই কাজ করে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট বালক (অনূর্ধ্ব-১৭)-২০২২ এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট বালিকা (অনূর্ধ্ব-১৭)-২০২২-এর চ্যাম্পিয়ন ও

রানার্সআপের মধ্যে ট্রফি এবং পুরস্কার বিতরণকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। রাজধানীর বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। প্রধানমন্ত্রী রংপুর বিভাগ ও খুলনা বিভাগের মধ্যকার নারীদের ফাইনাল ফুটবল ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের খেলা প্রত্যক্ষ করেন। পরে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। ফুটবল টুর্নামেন্টে উপজেলা, জেলা ও জাতীয় পর্যায়ের ১ লাখ ১০ হাজার ৫৫২ জন ছেলে ও মেয়ের অংশগ্রহণের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটি একটি বিস্ময়কর ঘটনা। আমি মনে করি, বিশ্বে এমন আর কোনো দেশ নেই যেখানে এত বিপুল সংখ্যক ফুটবলার এ ধরনের টুর্নামেন্টে অংশ নেয়।’ ১৯৯৬ সালে ২১ বছর পর প্রথমবারের মতো ক্ষমতায় আসার

পর থেকে তাঁর সরকার খেলাধুলায় মানুষকে উৎসাহিত করার চেষ্টা করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে আমাদের প্রচেষ্টা ছিল আমাদের সন্তানদের ফুটবল, ক্রিকেট এবং অন্যান্য খেলাধুলাকে আরও উৎসাহিত করা। আমাদের শিশুরা যত বেশি খেলাধুলায় নিজেকে নিয়োজিত করবে আমরা তত বেশি সুবিধা পাব। খেলাধুলার সার্বিক উন্নয়নে তার সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য খেলাধুলা নিশ্চিত করা। খেলাধুলার উৎকর্ষ সাধনে সারাদেশে তাঁর সরকারের মেয়াদে প্রতিটি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম তৈরি করছে। একইসঙ্গে দেশীয় খেলাগুলো যাতে হারিয়ে না যায় সেজন্য তাঁর সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো.

জাহিদ আহসান রাসেল অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। সেনা বাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এবং বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রিড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মেসবাহ উদ্দিন স্বাগত বক্তব্য রাখেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ন্যাশনাল গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট অনূর্ধ্ব-১৭ বালক ফাইনাল ম্যাচে পেনাল্টি শর্টে গোল করে বরিশাল বিভাগের বিপক্ষে খেলায় সমতা ফিরিয়ে এনে ১-১ গোলে ড্র করে সিলেট বিভাগ। বালক পর্যায়ে সিলেট বিভাগের মো. সাইফুর রহমান ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট এবং একই বিভাগের মো. রাজু মিয়া ফাইনাল ম্যাচের

সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন। বরিশাল বিভাগের শাহাদৎ গাজী সেরা গোলদাতা এবং একই বিভাগের মো. রিয়াজ সেরা গোল কিপার হয়েছেন। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব ন্যাশনাল গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট বালিকা অনূর্ধ্ব-১৭ তে ২-১ গোলে খুলনা বিভাগকে পরাজিত করে রংপুর বিভাগ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। গার্লস ফুটবল টুর্নামেন্টে রংপুর বিভাগের কাকলি ওমেন অব দ্য টুর্নামেন্ট এবং ফাইনাল ম্যাচে একই বিভাগের শান্তি মর্জি সেরা খেলোয়ার, নাসরিন সেরা গোলদাতা এবং শাম্মি আক্তার সেরা গোলকিপার নির্বাচিত হয়েছেন। অনুষ্ঠানে খেলাধুলার উন্নয়নে আটটি বিভাগীয় শহরে আটটি বিকেএসপি নির্মাণ করা হবে জানান প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তিনি ক্রীড়াবিদদের জন্য বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশন করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন। টুর্নামেন্ট সংশ্লিষ্ট সকলের

প্রতি আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, উপজেলা, জেলা, বিভাগ ও জাতীয় পর্যায় থেকে ১ লাখ ১০ হাজার ৫৫২ জন খেলোয়াড় অংশ নিয়েছে। অদ্ভুত একটা ঘটনা। বোধহয় পৃথিবীর আর কোন দেশে এরকম ব্যবস্থা নাই। তাই সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। প্রধানমন্ত্রী বলেন, টুর্নামেন্ট থেকে প্রতিভাবান ৪০ বালক এবং বালিকাকে বিকেএসপিতে তিন মাসের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এছাড়া বিদেশে পাঠিয়েও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, কিছুদিন আগে আমরা দেখলাম বিশ্বকাপ ফুটবল হয়ে গেল; কিন্তু বাংলাদেশ জায়গা পায়নি। আশা করি আগামীতে অবশ্যই বাংলাদেশ বিশ্বকাপ ফুটবলে যোগদান করবে। তাই এখন থেকেই নিজেদের তৈরি করতে হবে। আমরাও বিশ্বকাপ জয় করবো। সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশকে

আমরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি আর্থ-সামাজিকভাবে উন্নয়নের পথে। এই বাংলাদেশ আধুনিক প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হবে। ডিজিটাল ডিভাইসে দক্ষ স্মার্ট বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলব। স্মার্ট জনগোষ্ঠী গড়ে তুলব। খেলাধুলা, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য শিক্ষা সবকিছুতে আমরা প্রযুক্তি ব্যবহার করে এগিয়ে যাব। এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, তাঁর সরকারের প্রথম মেয়াদে ক্রিকেটে বাংলাদেশ টেস্ট মর্যাদা অর্জন করেছিল। বর্তমান সরকার ফুটবলের উন্নয়নের জন্য চেষ্টা করছে এবং একই সঙ্গে নারীদের খেলাধুলায় সম্পৃক্ত করছে। বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, তৃণমূলের মেধাবীদের বের করে আনার লক্ষ্যে ২০০৯ সালে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এখন পর্যন্ত তারা প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে উচ্চ বিদ্যালয়, কলেজ ও

বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে। এমনকি বিশেষভাবে চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের খেলাধুলায় উৎসাহিত করেছে এবং তারা অনেক আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করে এনেছে। দেশের প্রতিটি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম এবং প্রতিটি জেলায় স্টেডিয়াম নির্মাণের পাশাপাশি একাডেমি নির্মাণ করা হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে ৫৬টি জেলায় স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হয়েছে। তাঁর সরকার প্রতিটি বিভাগে বিকেএসপি প্রতিষ্ঠা করবে, যার লক্ষ্য হচ্ছে প্রতিটি খেলার ক্রীড়াবিদদের যথাযথ প্রশিক্ষণের সুবিধা প্রদান করা। কারণ তিনি বিশ্বাস করেন, বাংলাদেশের বিশ্বমানের ক্রীড়া মঞ্চে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সক্ষমতা রয়েছে। তৃণমূলে খেলাধুলা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে সারাদেশে সুইমিং পুল, শূটিং রেঞ্জ, কাবাডি ও ভলিবল স্টেডিয়াম এবং স্পোর্টস কমপ্লেক্স নির্মাণ করছেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা এমন

ব্যবস্থা করছি যাতে প্রতিটি জায়গায় সবাই খেলাধুলায় অংশ নিতে পারে। ২০১৮ সালে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়নের পর তারা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদও গড়ে তুলেছেন। শেখ হাসিনা ক্রীড়াপ্রেমী পরিবারের সদস্য হিসেবে নিজেকে বর্ণনা করেন, কারণ তাঁর দাদা শেখ লুৎফুর রহমান, পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং দুই ভাই- শেখ জামাল ও শেখ কামাল ছিলেন ফুটবলার। ক্রীড়া উন্নয়নে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালে বিভিন্ন জেলায় ১৮টি ক্রীড়া ফেডারেশন প্রতিষ্ঠা ও ক্রীড়া পরিষদ প্রতিষ্ঠার অনুমতি দিয়েছিলেন।
ট্যাগ:

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
তামিমকে ছাড়াই বিশ্বকাপের দল ঘোষণা বিচারকের সই জাল করে পালাল আদালতের দুই পুলিশ নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আ.লীগকে থামানো যাবে না: ওবায়দুল কাদের ডেঙ্গুতে ১৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৩১২৩ রোগী ১৬৪ অবৈধ হাসপাতাল-ক্লি‌নিক বন্ধ করল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ১০ প্রতিষ্ঠানের ৩০০ কোটি টাকা পাচারের তথ্যের বিষয়ে যা বলল বিজিএমইএ মদের বিল চাওয়ায় বারে ছাত্রলীগের হামলা ভাঙচুর লুট নেলসন ম্যান্ডেলার নাতনি মারা গেলেন ক্যানসারে ‘দড়ি ধরে মারো টান, রাজা হবে খান খান’ খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে নিঃশেষ করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে: রিজভী খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে প্রশ্নে যা বললেন যুক্তরাষ্ট্রের মুখপাত্র পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে খুশি করতে চাঁদের বিরুদ্ধে রায়: মিনু দোনেৎস্কে রুশ হামলায় নিহত ২, খেরসনে বেড়ে ৬ জ্বালানি ডিপোতে শক্তিশালী বিস্ফোরণে নগোরনো-কারাবাখে নিহত ২০ কয়লাখনি মামলা: খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চার্জগঠন শুনানি পেছাল জার্মান আ.লীগের এনআরডাব্লিউ শাখার ত্রিবার্ষিক সম্মেলন পর্তুগাল বাংলা প্রেস ক্লাবের তৃতীয় কমিটির অভিষেক ভূতুড়ে বিলে গ্রাহকের নাভিশ্বাস: বিদ্যুৎ বিভাগের কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন পালটাপালটি আলটিমেটাম বাড়তি ব্যয় এক হাজার কোটি টাকার বেশি