
ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স:-
আরও খবর

কেজিতে ৩০০ টাকা কমে ভারতে যাচ্ছে ইলিশ!

আন্তঃব্যাংক লেনদেনে ভাটা, ডলার বাজারে অস্থিরতা থেকে স্থবিরতা

বেঁধে দেওয়া মূল্য মানছে না সিন্ডিকেট আলু পেঁয়াজ ডিমের দাম ৭ দিনেও অকার্যকর

সোমবার উঠছে সচিব কমিটির সভায় কর আদায় বাড়াতে নতুন ২৮টি কর অঞ্চল হচ্ছে

সংকট নিরসনে নতুন মডেলে কাজ করতে চায় আইএমএফ

পোশাকের দাম বাড়াতে বিদেশি ক্রেতাদের বিজিএমইএ’র চিঠি

আরও ৬ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি
সমাপ্ত প্রকল্পের সুফল পেতে বাধা

দূরত্ব প্রায় ২২ কিলোমিটার। চলমান রেলপথের দুপাশে নির্ধারিত জায়গাও ঠিকঠাক। অথচ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ঢাকা-টঙ্গী রেলপথের ৩য় ও ৪র্থ ডুয়েল গেজ লাইন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শেষ হচ্ছে না।
এ প্রকল্প ২০১২ সালের ১ জুলাই শুরু হয়। রেলওয়ে কর্মকর্তারা বলছেন, এ প্রকল্প খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ প্রকল্প সমাপ্ত না হওয়ায়, সমাপ্ত হওয়া বেশ কয়েকটি প্রকল্পের সুফল মিলছে না। টঙ্গী রেলওয়ে স্টেশন, আউটার বরাবর ট্রেনের জটলা লেগেই থাকে। এ প্রকল্প যথাসময়ে সমাপ্ত হলে বিনা বাধায় ট্রেন আসত কমলাপুরে। আবার কমলাপুর থেকে ১০-১২ মিনিট পরপর ট্রেন ছাড়াও সম্ভব হতো।
শুধু এ প্রকল্পটি নয়, চলমান ৩৬টি উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যে সবকটিরই একাধিকবার সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে।
সঙ্গে বাড়ানো হয়েছে প্রকল্প ব্যয়ও। প্রায় পৌনে ২ লাখ কোটি টাকা ব্যয়ের এসব প্রকল্পের সর্বশেষ সময় বৃদ্ধির পরও আশঙ্কা থাকছে-আরও সময় বৃদ্ধির। আর সময় বৃদ্ধি মানেই ব্যয় বৃদ্ধি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধীরগতি প্রকল্পে রেল এগিয়ে আছে-বাজিমাত করছে। রেলমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, আমরা আশা করছি ২০২৩-২৪ সালের মধ্যে চলমান সবকটি প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত হবে। রেলে আমূল পরিবর্তন আসবে। বর্তমান সরকার রেলে একের পর এক উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। কিছু প্রকল্পের কাজ মাঠ পর্যায়ে শুরু হতে বিলম্ব হয়। রেলে বেশ কয়েকটি অগ্রাধিকার বিশেষ প্রকল্প রয়েছে। এর মধ্যে চলতি বছরেই দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প সমাপ্ত হবে। ঢাকা-যশোর পর্যন্ত রেলপথের কাজও আগামী
২০২৪ সালের মধ্যে শেষ হবে। তাছাড়া করোনার কারণে অধিকাংশ প্রকল্পের কাজ ধীরগতিতে চলে। রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, ঢাকা-টঙ্গী প্রকল্পের শুরুতেই ঘাপলা ছিল। অর্থাৎ প্রাথমিক কিংবা চূড়ান্ত সমীক্ষায় প্রকল্পের সার্বিক বিষয় যথাযথ উঠে আসেনি। সঙ্গে যোগ হয়েছে জমি অধিগ্রহণের নানা সমস্যা। ঢাকা-টঙ্গী প্রকল্পের অবস্থা খুবই নাজুক। এ প্রকল্পের অধিকাংশের অগ্রগতি শূন্য! মোট প্রকল্পের অগ্রগতি ৬৬ শতাংশ, নির্মাণ কাজের অগ্রগতি ৪৭ শতাংশ। টঙ্গী থেকে বনানী পর্যন্ত অগ্রগতি ৫০ শতাংশ। আর বনানী থেকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত সার্বিক অগ্রগতি শূন্য। এ প্রকল্পের ওপর এবং দুপাশের অধিকাংশ স্থান দিয়ে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণকাজ চলছে। রেলের প্রকল্পকে দাবিয়ে এলিভেটেড প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ায়-রেল প্রকল্পের অগ্রগতি তলানিতে-রেল কর্তৃপক্ষ বলছেন,
রেলের জায়গায় কাজ করতে পারছে না ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। ইতোমধ্যে এ প্রকল্পে ৪ বার সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। ঢাকা-টঙ্গী ৩য় ও ৪র্থ লেন নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী নাজনীন আরা কেয়া বলেন, আমরা প্রস্তুত থেকেও দ্রুততার সঙ্গে কাজ করতে পারছি না। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা থাকার পরও কেবল এলিভেটেড প্রকল্প নির্মাণকাজের জন্য সমান্তরালে কাজ শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা এ প্রকল্পেরই অংশবিশেষ জয়দেবপুর-টঙ্গী ডাবল লাইন নির্মাণকাজ প্রায় শেষ করেছি। এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়। এ প্রকল্প খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ২০১২ সালে এর যাত্রা শুরু হলে মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু হয় ২০১৮-২০১৯ সালের দিকে। প্রকল্পের অতিগুরুত্বপূর্ণ অংশ বনানী থেকে কমলাপুর পর্যন্ত মোট কাজের অগ্রগতি শূন্য। এ পথে
কোনো অনুমোদনই পাওয়া যাচ্ছে না। এ পথজুড়ে এলিভেটেড প্রকল্পের কাজ চলছে। কখনো রেলপথের ওপর দিয়ে, কখনো দুপাশ ঘিরে কাজ চলছে। কিন্তু আমাদের কাজ বন্ধ। শুধু রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পে বিলম্ব হচ্ছে তা নয়, ইঞ্জিন-কোচ ক্রয়ের ক্ষেত্রে বারবার সময় বৃদ্ধি করা হচ্ছে। ৭০টি মিটারগেজ ডিজেল ইলেকট্রিক লোকোমোটিভ সংগ্রহ প্রকল্পটির যাত্রা শুরু হয় ২০১১ সালের ১ জুলাই। ৪ বার সময় বৃদ্ধি করে সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৩০ জুনে সমাপ্তের কথা বলা হয়েছে। ২০টি মিটারগেজ প্যাসেঞ্জার ক্যারেজ সংগ্রহ প্রকল্পের যাত্রা শুরু ২০১৬ সালের ১ জুলাই। ২ বছরের এ প্রকল্পের অগ্রগতি ০.০৯ শতাংশ। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সেকশনে বিদ্যমান মিটারগেজ রেললাইনের সমান্তরাল ডুয়েলগেজ নতুন লাইন নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয় ২০১৪
সালের ১ জুলাই। ইতোমধ্যে ৪ বার সময় বৃদ্ধি করে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে। ২ বছরের এ প্রকল্প ৮ বছর পেরিয়ে অগ্রগতি ৮২ শতাংশ। এ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. সেলিম রউফ বলেন, ‘ইতোমধ্যে ৪ বার সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। আমরা আশা করছি ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত করতে পারব। সময় বৃদ্ধির সঙ্গে ব্যয়ও বেড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, জায়গা অধিগ্রহণ, অধিগ্রহণকৃত জায়গায় স্থাপিত বিভিন্ন স্থাপনা উচ্ছেদে সময় নিয়েছে সবচেয়ে বেশি। তাছাড়া করোনাভাইরাসের প্রভাব তো আছেই। ৩৬ প্রকল্পের মধ্যে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার নতুন রেলপথ নির্মাণ, লোকোমোটিভ সংগ্রহ, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ, আখাউড়া-আগরতলা, আখাউড়া-লাকসাম রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের মতো অগ্রাধিকার প্রকল্পের সংখ্যা প্রায় ৯টি। ৩৬
প্রকল্পের বাস্তবায়ন সময় গড়ে ২ থেকে ৩ বছরের চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও প্রকল্পগুলো ৪ থেকে ১৩ বছর পর্যন্ত নির্মাণ কাজ চলছে। ২ বছরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা এমন প্রকল্পের সময় অন্তত ৩-৪ বার বাড়িয়ে ২০২২ সালের মধ্যে শেষ হবে-এমন প্রকল্পের সংখ্যা ৭টি। কিন্তু ২০২২ সালেও এ ৭ প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত না হওয়ায় আবারও সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। আবার এমনও প্রকল্প রয়েছে, যা ৪-৫ বছরে কাজই শুরু হয়নি। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সম্ভাব্যতা যাচাই, দরপত্র প্রক্রিয়া, পরামর্শক নিয়োগ, তহবিল সংগ্রহ, যথাসময়ে ফান্ড না পাওয়া, ঠিকাদারের গাফিলতি, জমি অধিগ্রহণ, করোনাকালীন স্থিতাবস্থাসহ নানা কারণেই নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পগুলোর দীর্ঘসূত্রতা বেড়েছে। আবার এমন কিছু প্রকল্প আছে যেগুলো সংশোধন
করে পরিধি বাড়ানো হয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য মেয়াদ বাড়ানোর বিকল্প ছিল না। এখন মেয়াদ বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে প্রকল্পের ব্যয়ও বাড়ছে। সামনে জাতীয় নির্বাচন চলে আসায় অনেকগুলো প্রকল্প একযোগে শেষ করতে সরকারের পক্ষ থেকে চাপ আছে। চলমান প্রকল্পগুলোর বেশিরভাগই আগামী তিন বছরের মধ্যে শেষ হবে। রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, রেলপথ উন্নয়নে প্রায় ১ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প ঋণদাতা সংস্থার অর্থায়নে বাস্তবায়িত হচ্ছে। তার মধ্যে বিভিন্ন দাতা সংস্থা প্রায় ৯১ হাজার ২০০ কোটি টাকা অর্থ সহায়তা দিচ্ছে। আর সরকারি ফান্ড থেকে বাকি ৫০ হাজার ৫০৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা ব্যয় হবে। কিন্তু প্রকল্পের ধীরগতির কারণে ঋণের সুদের পরিমাণ বেড়ে
যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদ্যমান প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন না হলে রেলের সেবা দেওয়া কঠিন হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নের ধীরগতির কারণে ভোক্তা, উৎপাদক, অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতার সক্ষমতা ও প্রাইভেট সেক্টরের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। ফলে ঋণের দায়ভার বাড়বে ও ভোক্তারা সেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. এম শামসুল হক বলেন, গৃহীত প্রকল্পের মধ্যে বাহারি প্রকল্পও রয়েছে। মনে রাখতে হবে, প্রকল্পের সময় বৃদ্ধির সঙ্গে ব্যয়ও বাড়ানো হয়। প্রাথমিক কিংবা চূড়ান্ত সমীক্ষায় ভাঁওতাবাজি থাকে। পরে সময় বাড়িয়ে ব্যয় বাড়ানো হয়। নির্ধারিত সময়ে প্রকল্প সমাপ্ত না হওয়ায় অনিময়-দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে।
সঙ্গে বাড়ানো হয়েছে প্রকল্প ব্যয়ও। প্রায় পৌনে ২ লাখ কোটি টাকা ব্যয়ের এসব প্রকল্পের সর্বশেষ সময় বৃদ্ধির পরও আশঙ্কা থাকছে-আরও সময় বৃদ্ধির। আর সময় বৃদ্ধি মানেই ব্যয় বৃদ্ধি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধীরগতি প্রকল্পে রেল এগিয়ে আছে-বাজিমাত করছে। রেলমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, আমরা আশা করছি ২০২৩-২৪ সালের মধ্যে চলমান সবকটি প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত হবে। রেলে আমূল পরিবর্তন আসবে। বর্তমান সরকার রেলে একের পর এক উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। কিছু প্রকল্পের কাজ মাঠ পর্যায়ে শুরু হতে বিলম্ব হয়। রেলে বেশ কয়েকটি অগ্রাধিকার বিশেষ প্রকল্প রয়েছে। এর মধ্যে চলতি বছরেই দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প সমাপ্ত হবে। ঢাকা-যশোর পর্যন্ত রেলপথের কাজও আগামী
২০২৪ সালের মধ্যে শেষ হবে। তাছাড়া করোনার কারণে অধিকাংশ প্রকল্পের কাজ ধীরগতিতে চলে। রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, ঢাকা-টঙ্গী প্রকল্পের শুরুতেই ঘাপলা ছিল। অর্থাৎ প্রাথমিক কিংবা চূড়ান্ত সমীক্ষায় প্রকল্পের সার্বিক বিষয় যথাযথ উঠে আসেনি। সঙ্গে যোগ হয়েছে জমি অধিগ্রহণের নানা সমস্যা। ঢাকা-টঙ্গী প্রকল্পের অবস্থা খুবই নাজুক। এ প্রকল্পের অধিকাংশের অগ্রগতি শূন্য! মোট প্রকল্পের অগ্রগতি ৬৬ শতাংশ, নির্মাণ কাজের অগ্রগতি ৪৭ শতাংশ। টঙ্গী থেকে বনানী পর্যন্ত অগ্রগতি ৫০ শতাংশ। আর বনানী থেকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত সার্বিক অগ্রগতি শূন্য। এ প্রকল্পের ওপর এবং দুপাশের অধিকাংশ স্থান দিয়ে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণকাজ চলছে। রেলের প্রকল্পকে দাবিয়ে এলিভেটেড প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ায়-রেল প্রকল্পের অগ্রগতি তলানিতে-রেল কর্তৃপক্ষ বলছেন,
রেলের জায়গায় কাজ করতে পারছে না ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। ইতোমধ্যে এ প্রকল্পে ৪ বার সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। ঢাকা-টঙ্গী ৩য় ও ৪র্থ লেন নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী নাজনীন আরা কেয়া বলেন, আমরা প্রস্তুত থেকেও দ্রুততার সঙ্গে কাজ করতে পারছি না। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা থাকার পরও কেবল এলিভেটেড প্রকল্প নির্মাণকাজের জন্য সমান্তরালে কাজ শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা এ প্রকল্পেরই অংশবিশেষ জয়দেবপুর-টঙ্গী ডাবল লাইন নির্মাণকাজ প্রায় শেষ করেছি। এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়। এ প্রকল্প খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ২০১২ সালে এর যাত্রা শুরু হলে মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু হয় ২০১৮-২০১৯ সালের দিকে। প্রকল্পের অতিগুরুত্বপূর্ণ অংশ বনানী থেকে কমলাপুর পর্যন্ত মোট কাজের অগ্রগতি শূন্য। এ পথে
কোনো অনুমোদনই পাওয়া যাচ্ছে না। এ পথজুড়ে এলিভেটেড প্রকল্পের কাজ চলছে। কখনো রেলপথের ওপর দিয়ে, কখনো দুপাশ ঘিরে কাজ চলছে। কিন্তু আমাদের কাজ বন্ধ। শুধু রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পে বিলম্ব হচ্ছে তা নয়, ইঞ্জিন-কোচ ক্রয়ের ক্ষেত্রে বারবার সময় বৃদ্ধি করা হচ্ছে। ৭০টি মিটারগেজ ডিজেল ইলেকট্রিক লোকোমোটিভ সংগ্রহ প্রকল্পটির যাত্রা শুরু হয় ২০১১ সালের ১ জুলাই। ৪ বার সময় বৃদ্ধি করে সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৩০ জুনে সমাপ্তের কথা বলা হয়েছে। ২০টি মিটারগেজ প্যাসেঞ্জার ক্যারেজ সংগ্রহ প্রকল্পের যাত্রা শুরু ২০১৬ সালের ১ জুলাই। ২ বছরের এ প্রকল্পের অগ্রগতি ০.০৯ শতাংশ। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সেকশনে বিদ্যমান মিটারগেজ রেললাইনের সমান্তরাল ডুয়েলগেজ নতুন লাইন নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয় ২০১৪
সালের ১ জুলাই। ইতোমধ্যে ৪ বার সময় বৃদ্ধি করে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে। ২ বছরের এ প্রকল্প ৮ বছর পেরিয়ে অগ্রগতি ৮২ শতাংশ। এ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. সেলিম রউফ বলেন, ‘ইতোমধ্যে ৪ বার সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। আমরা আশা করছি ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত করতে পারব। সময় বৃদ্ধির সঙ্গে ব্যয়ও বেড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, জায়গা অধিগ্রহণ, অধিগ্রহণকৃত জায়গায় স্থাপিত বিভিন্ন স্থাপনা উচ্ছেদে সময় নিয়েছে সবচেয়ে বেশি। তাছাড়া করোনাভাইরাসের প্রভাব তো আছেই। ৩৬ প্রকল্পের মধ্যে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার নতুন রেলপথ নির্মাণ, লোকোমোটিভ সংগ্রহ, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ, আখাউড়া-আগরতলা, আখাউড়া-লাকসাম রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের মতো অগ্রাধিকার প্রকল্পের সংখ্যা প্রায় ৯টি। ৩৬
প্রকল্পের বাস্তবায়ন সময় গড়ে ২ থেকে ৩ বছরের চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও প্রকল্পগুলো ৪ থেকে ১৩ বছর পর্যন্ত নির্মাণ কাজ চলছে। ২ বছরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা এমন প্রকল্পের সময় অন্তত ৩-৪ বার বাড়িয়ে ২০২২ সালের মধ্যে শেষ হবে-এমন প্রকল্পের সংখ্যা ৭টি। কিন্তু ২০২২ সালেও এ ৭ প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত না হওয়ায় আবারও সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। আবার এমনও প্রকল্প রয়েছে, যা ৪-৫ বছরে কাজই শুরু হয়নি। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সম্ভাব্যতা যাচাই, দরপত্র প্রক্রিয়া, পরামর্শক নিয়োগ, তহবিল সংগ্রহ, যথাসময়ে ফান্ড না পাওয়া, ঠিকাদারের গাফিলতি, জমি অধিগ্রহণ, করোনাকালীন স্থিতাবস্থাসহ নানা কারণেই নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পগুলোর দীর্ঘসূত্রতা বেড়েছে। আবার এমন কিছু প্রকল্প আছে যেগুলো সংশোধন
করে পরিধি বাড়ানো হয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য মেয়াদ বাড়ানোর বিকল্প ছিল না। এখন মেয়াদ বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে প্রকল্পের ব্যয়ও বাড়ছে। সামনে জাতীয় নির্বাচন চলে আসায় অনেকগুলো প্রকল্প একযোগে শেষ করতে সরকারের পক্ষ থেকে চাপ আছে। চলমান প্রকল্পগুলোর বেশিরভাগই আগামী তিন বছরের মধ্যে শেষ হবে। রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, রেলপথ উন্নয়নে প্রায় ১ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প ঋণদাতা সংস্থার অর্থায়নে বাস্তবায়িত হচ্ছে। তার মধ্যে বিভিন্ন দাতা সংস্থা প্রায় ৯১ হাজার ২০০ কোটি টাকা অর্থ সহায়তা দিচ্ছে। আর সরকারি ফান্ড থেকে বাকি ৫০ হাজার ৫০৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা ব্যয় হবে। কিন্তু প্রকল্পের ধীরগতির কারণে ঋণের সুদের পরিমাণ বেড়ে
যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদ্যমান প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন না হলে রেলের সেবা দেওয়া কঠিন হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নের ধীরগতির কারণে ভোক্তা, উৎপাদক, অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতার সক্ষমতা ও প্রাইভেট সেক্টরের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। ফলে ঋণের দায়ভার বাড়বে ও ভোক্তারা সেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. এম শামসুল হক বলেন, গৃহীত প্রকল্পের মধ্যে বাহারি প্রকল্পও রয়েছে। মনে রাখতে হবে, প্রকল্পের সময় বৃদ্ধির সঙ্গে ব্যয়ও বাড়ানো হয়। প্রাথমিক কিংবা চূড়ান্ত সমীক্ষায় ভাঁওতাবাজি থাকে। পরে সময় বাড়িয়ে ব্যয় বাড়ানো হয়। নির্ধারিত সময়ে প্রকল্প সমাপ্ত না হওয়ায় অনিময়-দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে।