বাণিজ্যিকভাবে ইঁদুর চাষে সফল রাবির মামুন – U.S. Bangla News




বাণিজ্যিকভাবে ইঁদুর চাষে সফল রাবির মামুন

ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স:-
আপডেটঃ ২৮ জানুয়ারি, ২০২৩ | ৫:১৬
কথিত আছে, ইঁদুরের উৎপাত থেকে জার্মানির হ্যামিলন শহরের বাসিন্দাদের রেহাই দিতে বাঁশি বাজিয়ে শহর থেকে দূরের এক নদীতে ইঁদুরের দল ফেলে এসেছিলেন এক বাঁশিওয়ালা। তবে রাজশাহীতে ঘটেছে এর পুরো উলটো এক ঘটনা। রাজশাহীর কাটাখালী এলাকার সমসাদিপুর গ্রামের পূর্বপাড়ায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হচ্ছে ইঁদুর। সুইস অ্যালবিনো প্রজাতির এই ধবধবে সাদা ইঁদুরের চাষ করছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ল্যাব সহকারী সালাহউদ্দিন মামুন। শখের বশে ইঁদুর পুষতে গিয়ে এখন নিজের বাসায় একটি ও তার শ্বশুরের বাসায় আরেকটি খামার গড়ে তুলেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, ইতোমধ্যে রাজশাহী, চট্টগ্রাম এবং সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ১৪ জন উদ্যোক্তাও তৈরি করেছেন তিনি। ২০১২ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগ

থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা সালাহউদ্দিন মামুন জানান, তার ইঁদুর পালনের শুরুটা হয়েছিল অদ্ভুতভাবে। ২০১৭ সালের শেষের দিকে রাবির উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের এক পিএইচডি গবেষক গবেষণা শেষ করে চারটি ইঁদুর ক্যাম্পাসের কোথাও ছেড়ে দিতে বলেন। ধবধবে সাদা ছোট ইঁদুরগুলো দেখে মায়া হওয়ায় ‘সুইচ অ্যালবিনো’ প্রজাতির ইঁদুর চারটি বাড়িতে নিয়ে আসেন তিনি। চারটির মধ্যে বিড়ালে একটি ইঁদুর খেয়ে ফেলে। কিছুদিন যেতে না যেতেই একটি ইঁদুর ১০টি বাচ্চা দেয়। আরেকটি কয়েকদিনের মধ্যে আরও ১০টি বাচ্চা দেয়। মামুন বলেন, ইঁদুরের বাচ্চা দেওয়ার বিষয়টি আমি বিভাগে গল্প করি। এ সময় জার্মানির এক গবেষক প্রাণিবিদ্যা বিভাগের মিউজিয়ামে ট্যাক্সিডার্মি নিয়ে কাজ করছিলেন। তিনি গবেষণার জন্য ইঁদুর চান। আমি

তাকে ২০টি ইঁদুর দিই। তিনি আমাকে এক হাজার টাকা দিলেন। টাকা পেয়ে আমি কিছুটা অবাকই হলাম। এরপরই মূলত ইঁদুর পালনে আগ্রহী হয়ে উঠি এবং সে বিষয়ে পড়াশোনা শুরু করি। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, নিজ বাসার ছাদে ইঁদুরের খামার গড়ে তুলেছেন মামুন। খামারের ভেতরে প্রবেশ করতেই ভয়ে মেঝেতে রাখা মলাটের বাক্সের মধ্যে নিজেদের লুকিয়ে ফেলল ইঁদুরগুলো। খামারটিতে রাখা প্রায় ৫০টি প্লাস্টিকের বাক্স ঘুরে দেখা গেল, কোনো কোনো বাক্সে বিশ্রাম নিচ্ছেন গর্ভবতী ইঁদুরগুলো। আবার কোনো কোনো বাক্সে বাচ্চাদের বুকের দুধ পান করাচ্ছেন মা ইঁদুরগুলো। বিদেশের বিভিন্ন ল্যাবে অনেক চাহিদা থাকায় ইঁদুর রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। মামুন জানান, বর্তমানে তার খামারে প্রায়

১০০টি মা ইঁদুর, ৫০টি বাবা এবং সবমিলিয়ে রয়েছে ৪৬০টি ইঁদুর। প্রতি ৪০ দিন পরপর ৮-১০টি বাচ্চা দেয় একটি মা ইঁদুর। বছরে বাচ্চা দেয় ৮-১০ বার। প্রথমদিকে প্রতিমাসে ১০০টি ইঁদুর উৎপাদন করলেও বর্তমানে প্রতিমাসে ৩০০টি ইঁদুর উৎপাদন হয় তার খামারে। বর্তমানে ২০ গ্রাম ওজনের প্রতিটি ইঁদুর ১০০ টাকায় এবং ২৫ গ্রামের প্রতিটি ইঁদুর ১২০ টাকায় বিক্রি করেন তিনি। যদিও ইঁদুর চাষের শুরুর দিকে ৩০-৪০ টাকায় প্রতিটি ইঁদুর বিক্রি করতেন তিনি। বর্তমানে গড়ে প্রতিমাসে ৩০ হাজার টাকার ইঁদুর বিক্রি করেন তিনি, আর খরচ হয় ১০ হাজার টাকা। মামুন বলেন, বর্তমানে আমি দেশের প্রায় ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঁদুর সরবরাহ করছি। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়সহ ঢাকার একাধিক

ফার্মাসিউটিক্যালস ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান এখান থেকে ইঁদুর নিয়ে যায়। ইঁদুরগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ও শিক্ষার্থীরা তাদের গবেষণা কাজের জন্য কিনে নেয়। ছেলের এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগে খুশি মামুনের বাবা মো. বেলালউদ্দিন। তিনি বলেন, প্রতিদিন ফজর নামাজ পড়ে ৬ ঘণ্টা ধরে খামার পরিষ্কার করি, পানি ও খাবার দিই। খামারে সময় কাটাতে আমার ভালোই লাগে।
ট্যাগ:

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
কারফিউ তুলে নেওয়ার বিষয়ে যা জানালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজস্ব আদায়ে ৫ চ্যালেঞ্জ চার দিনে খান ইউনিস ছেড়েছেন পৌনে ২ লাখ ফিলিস্তিনি দেশে আর কতদিন কারফিউ থাকবে? কোটা সংস্কার আন্দোলন ক্ষতিগ্রস্তদের চোখে শুধুই নীরব অশ্রু গ্রেফতার আতঙ্কে ঘরছাড়া বহু সাধারণ শিক্ষার্থী জনজীবন স্বাভাবিক হলে কারফিউ প্রত্যাহার: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কারা অধিদপ্তরে জরুরি সিকিউরিটি সেল সীমিত আকারে চলছে দূরপাল্লার বাস, যাত্রী কম ডিবি হেফাজতে কোটা আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক ১০ দিনে কারাগারে ৩৩০ চট্টগ্রামে গ্রেফতার আতঙ্কে ঘরছাড়া বিএনপি নেতাকর্মীরা ‘তারেক রহমানের হামলার নির্দেশনার অডিও সরকারের কাছে’ সরকার দিশেহারা হয়ে বিরোধীদের ওপর দোষ চাপাচ্ছে: জামায়াত সব দল নিয়ে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান বিএনপির মাঠে থাকার অঙ্গীকার আ.লীগ নেতাদের ওয়াইফাই নেটওয়ার্কে নিরবচ্ছিন্ন সুবিধা পেতে যা করবেন কী হয়েছিল জাহ্নবীর? সহিংসতায় আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করবে সরকার: প্রধানমন্ত্রী পুলিশকে দুর্বল করতেই পরিকল্পিতভাবে হামলা-ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে: ডিবিপ্রধান প্রকৃত কোনো ছাত্রই এই হামলায় জড়িত ছিল না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী