পাকিস্তানের নতুন কৌশল: আমেরিকাকে আরব সাগরের সীমান্তবর্তী পাসনি বন্দর নির্মাণের প্রস্তাব – ইউ এস বাংলা নিউজ




ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আপডেটঃ ৭ অক্টোবর, ২০২৫
     ১০:৫৯ অপরাহ্ণ

পাকিস্তানের নতুন কৌশল: আমেরিকাকে আরব সাগরের সীমান্তবর্তী পাসনি বন্দর নির্মাণের প্রস্তাব

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ৭ অক্টোবর, ২০২৫ | ১০:৫৯ 62 ভিউ
পাকিস্তানের সামরিক প্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরের উপদেষ্টারা আমেরিকান কর্মকর্তাদের কাছে আরব সাগরের তীরে পাসনি বন্দর নির্মাণ ও পরিচালনার একটি বিলিয়ন ডলারের প্রস্তাব তুলে ধরেছেন। এই বন্দরটি পাকিস্তানের খনিজ সম্পদ রপ্তানির হাব হিসেবে কাজ করবে বলে দাবি করা হয়েছে, যা চীনের গোয়াদার বন্দরের কাছাকাছি এবং ইরানের সীমান্তবর্তী। ফিনান্সিয়াল টাইমসের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, এই প্রস্তাবটি ‘উপহার’ হিসেবে উপস্থাপিত না হলেও, পাকিস্তানের কৌশলগত স্বার্থে আমেরিকাকে এই সংবেদনশীল অঞ্চলে একটি শক্তিশালী অবস্থান প্রদান করার লক্ষ্য রয়েছে। এটি দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক ভারসাম্যে নতুন ঝড় তুলতে পারে, বিশেষ করে চীন এবং ভারতের স্বার্থের সঙ্গে সংঘর্ষের আশঙ্কা তৈরি করেছে। প্রস্তাবের পটভূমি: পাসনি, বেলুচিস্তানের গোয়াদার জেলার একটি ছোট মাছ ধরার

শহরতলী, ইরানের সীমান্ত থেকে মাত্র ১০০ মাইল এবং চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডরের (সিৱাইপিসি) অংশ গোয়াদার বন্দর থেকে ৭০ মাইল দূরে অবস্থিত। ফিনান্সিয়াল টাইমসের প্রাপ্ত নীলনক্ষত্র অনুসারে, এই প্রস্তাবে আমেরিকান বিনিয়োগকারীরা বন্দরটি নির্মাণ ও পরিচালনা করবে, যার খরচ ১.২ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত হতে পারে। এটি পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ খনিজ সম্পদ—যেমন তামা, অ্যান্টিমনি, নিওডিমিয়াম—রপ্তানির জন্য একটি নতুন রেলপথের সাথে যুক্ত হবে, যা ব্যাটারি, অগ্নিনিরোধক উপাদান এবং ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়। প্রস্তাবে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, এখানে আমেরিকান সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করা যাবে না—এটি একটি বেসরকারি বাণিজ্যিক প্রকল্প। তবে, নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, “পাসনির ইরান ও মধ্য এশিয়ার নৈকট্য আমেরিকার বাণিজ্য ও নিরাপত্তা বিকল্প বাড়াবে… গোয়াদারের ভারসাম্য

রক্ষা করে আরব সাগর ও মধ্য এশিয়ায় আমেরিকান প্রভাব বাড়াবে।” পাকিস্তানের এক উপদেষ্টা বলেন, “আমরা চীনের উপর নির্ভরতা কমাতে চাই। গোয়াদারের বাইরে এটি চীনের সাথে পরামর্শের প্রয়োজন নেই।” এই প্রস্তাবটি গত মাসে হোয়াইট হাউসে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ এবং আসিম মুনিরের সাথে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈঠকের পরপরই উত্থাপিত হয়েছে। সেই বৈঠকে পাকিস্তান খনিজ নমুনা উপহার দিয়ে আমেরিকান বিনিয়োগ আকর্ষণের চেষ্টা করেছিল। একজন আমেরিকান কর্মকর্তা বলেন, “ট্রাম্প এবং তার উপদেষ্টারা এই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেননি,” কিন্তু পাকিস্তানের এই ‘রিসেট’ কৌশল ট্রাম্প প্রশাসনের সাথে সম্পর্ক উষ্ণ করার অংশ। চীন ও ভারতের জন্য চ্যালেঞ্জ: ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকিপাসনি বন্দরের প্রস্তাব চীনের গোয়াদারের ‘দ্বৈত-ব্যবহার’ (সামরিক ও বাণিজ্যিক) ভয়কে

সামনে তুলে ধরেছে, যা বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের অংশ। পাকিস্তান চীনের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করলেও, এটি আমেরিকাকে ‘ব্যালেন্সিং’ অপশন হিসেবে দেখছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি পাকিস্তানের চীন-নির্ভরতা কমানোর চেষ্টা, যা সৌদি আরবের সাথে সাম্প্রতিক নিরাপত্তা চুক্তির পর আরও স্পষ্ট হয়েছে।ভারতের জন্য এটি উদ্বেগজনক, কারণ পাসনি ইরানের চাবাহার বন্দর—যা ভারত নির্মাণ করছে—থেকে মাত্র ৩০০ কিলোমিটার দূরে। চাবাহার মধ্য এশিয়ায় ভারতের অ্যাক্সেস নিশ্চিত করে, এবং পাসনির উন্নয়ন এই অঞ্চলে তিন পক্ষীয় প্রতিযোগিতা তৈরি করতে পারে। এক বিশ্লেষক বলেন, “এটি আমেরিকাকে গোয়াদারের কাছে স্থান দিয়ে চীনকে চাপ দেয়, কিন্তু বেলুচিস্তানের অস্থিরতা (বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন) এই প্রকল্পকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলবে।” একই সাথে, মিসৌরি-ভিত্তিক ইউএস স্ট্র্যাটেজিক মেটালস কোম্পানি

ইতিমধ্যে পাকিস্তানের সামরিক প্রকৌশল সংস্থার সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে এবং করাচি ও গোয়াদারের বন্দর কর্তৃপক্ষদের সাথে আলোচনা করেছে। পাকিস্তানের সিনিয়র নিরাপত্তা কর্মকর্তারা এই প্রস্তাব অস্বীকার করেছেন। আরব নিউজের প্রতিবেদন অনুসারে, এক কর্মকর্তা বলেন, “পাসনিতে আমেরিকাকে কোনো অ্যাক্সেস দেওয়া হয়নি।” আমেরিকান পররাষ্ট্র দপ্তর এবং হোয়াইট হাউস এখনও কোনো মন্তব্য করেনি। তবে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি পাকিস্তানের ঐতিহ্যবাহী আমেরিকা-নির্ভরতার (শীতল যুদ্ধ থেকে ৯/১১-এর পর) পুনরুজ্জীবনের চেষ্টা, যা আফগানিস্তানে তালেবান সমর্থনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।বেলুচিস্তানের বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো এই প্রস্তাবকে ‘বিদেশি শক্তির আগমন’ বলে সমালোচনা করেছে, যা অঞ্চলকে ‘যুদ্ধক্ষেত্র’ বানাতে পারে। পাকিস্তানের এই কৌশল কতদূর সফল হবে, তা ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করবে। ততক্ষণ, দক্ষিণ এশিয়ার এই

‘পোর্ট রেস’ নতুন করে আঞ্চলিক উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলেছে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
১১ মাসে ১৭০ ধর্ষণ মাগুরায় পেট্রোল বোমায় পুড়ল সাব-রেজিস্ট্রি ও ভূমি অফিস পেঁয়াজের ঝাঁজ ১৬০ টাকায়: কৃত্রিম সংকটে দিশেহারা ক্রেতা এশিয়ার রাজনৈতিক দাবার বোর্ডে ভারতই যখন ‘কিংমেকার’ দুই পা কেটে কৃষক হত্যা, ছুরিকাঘাতে যুবক খুন ইমরানের ‘আইডল’ বঙ্গবন্ধু ইমরান খানের মুখে প্রশংসা, পাক সেনাবাহিনীর চোখে বঙ্গবন্ধু ‘গদ্দার’ ‘ভারত টুকরো না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে শান্তি আসবে না’: সাবেক জেনারেল আজমির বিস্ফোরক মন্তব্যে তোলপাড় কারাগারে ৭ম শ্রেণির ছেলে, পুলিশ হেফাজতে বাবার মৃত্যু: হ্নীলায় এক পরিবারের করুণ ট্র্যাজেডি ঘরে ঢুকে মুক্তিযোদ্ধা দম্পতিকে গলা কেটে হত্যা এক বছরেও প্রকাশ হয়নি উপদেষ্টাদের আয়–সম্পদের হিসাব স্বচ্ছতার প্রতিশ্রুতি মিললেও বাস্তবে অদৃশ্য, সরকারের জবাবদিহিতা নিয়ে ঘনীভূত প্রশ্ন ‘রোজা ও পূজা একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ’ মন্তব্যে শিশির মনিরের বিরুদ্ধে মামলা সৌদিতে জমে উঠেছে ‘রেড সি ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’ ভারতের গোয়ার নাইটক্লাবে বড় অগ্নিকাণ্ড, নিহত ২৩ ভারতে থাকা না-থাকার সিদ্ধান্ত শেখ হাসিনার: এস জয়শঙ্কর ডেঙ্গুতে আরও ২ মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৫৬৫ সিরিয়াকে ‘সন্ত্রাসবাদের তালিকা’ থেকে বাদ দিল কানাডা বিশ্বকাপে সেমিফাইনালের আগেই মেসি-রোনালদোর লড়াই সহজ উপায়ে চোখের কালো দাগ দূর করুন শেরপুর সীমান্তে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে সরকারের ক্ষতি কোটি টাকা সাত হাজার বছর পুরোনো গ্রামের খোঁজ মিলল ইরানে