
ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স:-
আরও খবর

যুক্তরাষ্ট্র সুষ্ঠু নির্বাচন চায়, হস্তক্ষেপ নয়: পিটার হাস

যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচন পর্যালোচনা দল আসছে অক্টোবরে

‘বাংলাদেশ সরকার সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে এসডিজি বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’

মরণোত্তর ‘বঙ্গবন্ধু স্বর্ণপদক’ পেলেন বেবী মওদুদ

ঢাকায় সিঙ্গাপুরের হাইকমিশন স্থাপনের ঘোষণা

মহাসাগর নদী রক্ষায় বিবিএনজে’তে স্বাক্ষর করলেন প্রধানমন্ত্রী

ঘুষের রেট নির্ধারণকারী এসিল্যান্ড সাময়িক বরখাস্ত
দুই জাতীয় পরিচয়পত্রে মুক্তিযোদ্ধার প্রতারণা

একই ব্যক্তির দুটি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি)। একটি দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা নেন, আরেকটি দিয়ে নেন পেনশন ভাতা। দুটি এনআইডিতে জন্মতারিখ এক থাকলেও সাল ভিন্ন। সেই হিসাবে দুই এনআইডির মধ্যে বয়সের পার্থক্য ছয় বছর। এমনই অভিনব প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার চরধীপুর গ্রামের বাসিন্দা আবুল কাশেম সরদারের বিরুদ্ধে। এমনকি আইনে ১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত যে কোনো মুক্তিযোদ্ধার বয়স কমপক্ষে সাড়ে ১২ বছর হওয়ার কথা থাকলেও তাঁর বয়স ১০ বছর!
তাঁর পেনশনসংক্রান্ত শনাক্তকরণের নথি, দুই জন্মতারিখের ভোটার আইডি কার্ড, যাচাই-বাছাই কমিটির মতামত, ই-পেমেন্ট পদ্ধতিতে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ভাতা প্রদানের কাগজপত্রসহ বেশ কয়েকটি নথি হাতে এসেছে।
নথির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, আবুল কাশেম সরদার
সাবেক বিডিআরে (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) একজন চাকরিজীবী ছিলেন। তিনি দুটি জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে একই সঙ্গে দুই ধরনের সুবিধা গ্রহণ করছেন। তিনি গোসাইরহাট উপজেলা সদরে অবস্থিত ইদিলপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৭৭ সালে মানবিক শাখায় দ্বিতীয় বিভাগে এসএসসি পাস করেন। সেই ফলাফলে জন্মতারিখ ১৯৬০ সালের ১৮ আগস্ট। পাসের পরের বছরই তিনি বিডিআরে যোগদান করেন এবং ২০০৮ সালে হাবিলদার পদে থেকে অবসর নেন। চাকরিতে থাকা অবস্থায় খাগড়াছড়ির বরকুল উপজেলায় অবস্থিত বিডিআর ক্যাম্পে ভোটার আইডি কার্ড করালে সেখানেও রেজাল্ট শিটের জন্মতারিখই দেন। সেই জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ৮৪১২১৪৭২২৯৫৫৮। এই পরিচয়পত্র অনুসারে তিনি অবসর ভাতা ভোগ করছেন। একই সঙ্গে আবুল কাশেম অন্য আরও একটি এনআইডি
কার্ড করেছেন (৯১৪০৬৪০৯৩০), যেখানে জন্মতারিখ ১৯৫৪ সালের ১৮ আগস্ট। এটি দিয়ে তিনি মুক্তিযোদ্ধা ভাতা উত্তোলন করছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ৭ নভেম্বর জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ দেন কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা। অভিযোগের পর এ বিষয়ে গোসাইরহাট উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির প্রতিবেদনে আবুল কাশেমের একাধিক জন্মতারিখ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে কমিটির সভাপতি এম এ আবদুস সাত্তার বলেন, আবুল কাশেম সরদার বিডিআর সদস্য হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা। কিন্তু চাকরির সময় তাঁর জন্মতারিখ ১৯৬০ সালের ১৮ আগস্ট। জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্মতারিখ ১৯৫৪ সালের ১৮ আগস্ট। কমিটির সদস্য সচিব ও তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলমগীর হুসেইন বলেন, ভোটার আইডি ও জন্মসনদের তারিখের সঙ্গে
সার্ভিস বইয়ের জন্ম সালের মধ্যে গরমিল রয়েছে। কমিটিতে থাকা অন্য সদস্যরাও একই ধরনের পর্যবেক্ষণ দেন। পরবর্তী সময়ে ২০২১ সালে যাচাই-বাছাই কমিটির রিপোর্টেও জন্মতারিখ নিয়ে গরমিলের বিষয়টি উল্লেখ আছে। পরে ২০২০ সালের ১১ নভেম্বর এবং ২০২২ সালের ২০ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বরাবর অভিযোগ দেন সেই মুক্তিযোদ্ধারা। এর পরও কোনো প্রতিকার হয়নি। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় তাঁকে জামুকায় তদন্ত কমিটির সামনে উপস্থিত হতে নোটিশ দেওয়া হলেও তিনি উপস্থিত হননি। এ বছরের ১৮ জুলাই মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধার জন্মতারিখ ৩০.০৫.১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দ অর্থাৎ ১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর তারিখে ১২ বছর ৬ মাস কিংবা তার পূর্বে হতে হবে।’ কিন্তু
বিডিআরের সার্ভিস বইয়ের জন্মতারিখ অনুযায়ী, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ তাঁর বয়স হয় ১০ বছর ৬ মাস। অভিযোগ রয়েছে, আবুল কাশেম বিডিআর গেজেটের মাধ্যমে তিনি মুক্তিযোদ্ধা ভাতা উত্তোলন করতেন। ২০০৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বিডিআর গেজেট থেকে তাঁর গেজেট বাতিল করা হয়। এর পর তিনি জামুকার এক কর্মকর্তার সহায়তায় আবারও তাঁর মুক্তিযোদ্ধা ভাতা চালু করেন। অভিযোগের বিষয়ে আবুল কাশেম সরদার বলেন, এলাকায় রাজনীতি করতে গেলে পক্ষ-বিপক্ষ থাকে। আমার একটাই এনআইডি কার্ড। একাধিক যাচাই-বাছাইয়ের পর আমার সবকিছু অনুমোদন করা হয়েছে। গেজেটে এবং এমআইএসে আমার নাম আসার পর এখনও ভাতা চলছে। তাঁর অনুমোদনের নথিপত্র দেখতে চাইলে তিনি বলেন, আমার সব কাগজপত্র মন্ত্রীর কাছে দেওয়া
আছে। বিডিআরের গেজেট বাতিল হওয়ার পর আমাকে বেসরকারি গেজেটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সমন্বিত মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় আমার নাম রয়েছে। এসবের সিরিয়াল নম্বরগুলো জানতে চাইলে আবুল কাশেম বলেন, এসব আপনি আমার উপজেলা অফিস কিংবা মন্ত্রণালয় থেকে নিতে পারেন। এগুলো আমার কাছে চাওয়া কি ঠিক? এর পর কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার নাম উল্লেখ করে বলেন, তারা আমাকে চেনেন। তাদের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের ফোন নম্বর চাইলে তা দিতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।
সাবেক বিডিআরে (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) একজন চাকরিজীবী ছিলেন। তিনি দুটি জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে একই সঙ্গে দুই ধরনের সুবিধা গ্রহণ করছেন। তিনি গোসাইরহাট উপজেলা সদরে অবস্থিত ইদিলপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৭৭ সালে মানবিক শাখায় দ্বিতীয় বিভাগে এসএসসি পাস করেন। সেই ফলাফলে জন্মতারিখ ১৯৬০ সালের ১৮ আগস্ট। পাসের পরের বছরই তিনি বিডিআরে যোগদান করেন এবং ২০০৮ সালে হাবিলদার পদে থেকে অবসর নেন। চাকরিতে থাকা অবস্থায় খাগড়াছড়ির বরকুল উপজেলায় অবস্থিত বিডিআর ক্যাম্পে ভোটার আইডি কার্ড করালে সেখানেও রেজাল্ট শিটের জন্মতারিখই দেন। সেই জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ৮৪১২১৪৭২২৯৫৫৮। এই পরিচয়পত্র অনুসারে তিনি অবসর ভাতা ভোগ করছেন। একই সঙ্গে আবুল কাশেম অন্য আরও একটি এনআইডি
কার্ড করেছেন (৯১৪০৬৪০৯৩০), যেখানে জন্মতারিখ ১৯৫৪ সালের ১৮ আগস্ট। এটি দিয়ে তিনি মুক্তিযোদ্ধা ভাতা উত্তোলন করছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ৭ নভেম্বর জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ দেন কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা। অভিযোগের পর এ বিষয়ে গোসাইরহাট উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির প্রতিবেদনে আবুল কাশেমের একাধিক জন্মতারিখ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে কমিটির সভাপতি এম এ আবদুস সাত্তার বলেন, আবুল কাশেম সরদার বিডিআর সদস্য হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা। কিন্তু চাকরির সময় তাঁর জন্মতারিখ ১৯৬০ সালের ১৮ আগস্ট। জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্মতারিখ ১৯৫৪ সালের ১৮ আগস্ট। কমিটির সদস্য সচিব ও তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলমগীর হুসেইন বলেন, ভোটার আইডি ও জন্মসনদের তারিখের সঙ্গে
সার্ভিস বইয়ের জন্ম সালের মধ্যে গরমিল রয়েছে। কমিটিতে থাকা অন্য সদস্যরাও একই ধরনের পর্যবেক্ষণ দেন। পরবর্তী সময়ে ২০২১ সালে যাচাই-বাছাই কমিটির রিপোর্টেও জন্মতারিখ নিয়ে গরমিলের বিষয়টি উল্লেখ আছে। পরে ২০২০ সালের ১১ নভেম্বর এবং ২০২২ সালের ২০ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বরাবর অভিযোগ দেন সেই মুক্তিযোদ্ধারা। এর পরও কোনো প্রতিকার হয়নি। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় তাঁকে জামুকায় তদন্ত কমিটির সামনে উপস্থিত হতে নোটিশ দেওয়া হলেও তিনি উপস্থিত হননি। এ বছরের ১৮ জুলাই মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধার জন্মতারিখ ৩০.০৫.১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দ অর্থাৎ ১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর তারিখে ১২ বছর ৬ মাস কিংবা তার পূর্বে হতে হবে।’ কিন্তু
বিডিআরের সার্ভিস বইয়ের জন্মতারিখ অনুযায়ী, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ তাঁর বয়স হয় ১০ বছর ৬ মাস। অভিযোগ রয়েছে, আবুল কাশেম বিডিআর গেজেটের মাধ্যমে তিনি মুক্তিযোদ্ধা ভাতা উত্তোলন করতেন। ২০০৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বিডিআর গেজেট থেকে তাঁর গেজেট বাতিল করা হয়। এর পর তিনি জামুকার এক কর্মকর্তার সহায়তায় আবারও তাঁর মুক্তিযোদ্ধা ভাতা চালু করেন। অভিযোগের বিষয়ে আবুল কাশেম সরদার বলেন, এলাকায় রাজনীতি করতে গেলে পক্ষ-বিপক্ষ থাকে। আমার একটাই এনআইডি কার্ড। একাধিক যাচাই-বাছাইয়ের পর আমার সবকিছু অনুমোদন করা হয়েছে। গেজেটে এবং এমআইএসে আমার নাম আসার পর এখনও ভাতা চলছে। তাঁর অনুমোদনের নথিপত্র দেখতে চাইলে তিনি বলেন, আমার সব কাগজপত্র মন্ত্রীর কাছে দেওয়া
আছে। বিডিআরের গেজেট বাতিল হওয়ার পর আমাকে বেসরকারি গেজেটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সমন্বিত মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় আমার নাম রয়েছে। এসবের সিরিয়াল নম্বরগুলো জানতে চাইলে আবুল কাশেম বলেন, এসব আপনি আমার উপজেলা অফিস কিংবা মন্ত্রণালয় থেকে নিতে পারেন। এগুলো আমার কাছে চাওয়া কি ঠিক? এর পর কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার নাম উল্লেখ করে বলেন, তারা আমাকে চেনেন। তাদের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের ফোন নম্বর চাইলে তা দিতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।