![](https://usbangla24.news/wp-content/themes/pitwmeganews/pitw-assets/pitw-image/user_default.png)
ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স:-
আরও খবর
![](https://usbangla24.news/wp-content/uploads/2024/07/image-478955-1721996113.jpg)
স্কুলছাত্রী গণধর্ষণের ভিডিও ভাইরাল, আটক ৩
![](https://usbangla24.news/wp-content/uploads/2024/07/image-830276-1721917282.jpg)
‘নরসিংদী কারাগারে হামলাকারীদের আশ্রয় দেবেন না’
![](https://usbangla24.news/wp-content/uploads/2024/07/image-829255-1721246823.jpg)
হানিফ ফ্লাইওভারে গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন নিহত
![](https://usbangla24.news/wp-content/uploads/2024/07/image-829263-1721258854.jpg)
আবু সাঈদের পরিবারের জন্য সাহায্য পাঠালেন তাসরিফ
![](https://usbangla24.news/wp-content/uploads/2024/07/image-478170-1721222603.jpg)
কুষ্টিয়ায় শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষ : আহত ১০
![](https://usbangla24.news/wp-content/uploads/2024/07/image-828860-1721147893.jpg)
বগুড়ায় আ.লীগ অফিসে অগ্নিসংযোগ, মুজিব মঞ্চ ভাঙচুর
![](https://usbangla24.news/wp-content/uploads/2024/07/image-828390-1721042233.jpg)
কুমিল্লায় জোড়া খুনে ৬ আসামির ফাঁসি, ৭ জনের যাবজ্জীবন
কীসের সংলাপ, কার সঙ্গে?
![](https://usbangla24.news/wp-content/uploads/2023/03/13-03-23-PM_Press-Conferenc-samakal-640f0c8473f88-1.jpg)
আগামী নির্বাচনের আগে বিএনপির সঙ্গে সংলাপের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, সংলাপ কার সঙ্গে করব? যারা আমার মা-বাবাকে হত্যা করেছে, বারবার আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছে– তাদের সঙ্গে? কেউ কি পারবেন মা-বাবার হত্যাকারীদের সঙ্গে বৈঠক করতে? যেটুকু সহ্য করেছি, সব দেশের জন্য, দেশের স্বার্থে। বিএনপি ভদ্রতা জানে না, তাদের সঙ্গে বৈঠকেরই বা কী আছে?
আগামী নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে সরকারপ্রধান বলেছেন, নির্বাচন কমিশনকে অবাধ ও নিরপেক্ষ করে গড়ে তোলা হয়েছে। আগামী নির্বাচনেও জনগণ যেন স্বাধীন ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে পারে, সেই প্রস্তুতি রয়েছে। দলীয় সরকারের অধীনেও যে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে
পারে– সেটা আওয়ামী লীগ সরকার প্রমাণ করেছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোই এর প্রমাণ। গতকাল সোমবার গণভবনে তাঁর সদ্য সমাপ্ত কাতার সফর বিষয়ে আয়োজিত জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ে মানুষের যেন কষ্ট না হয়, সে জন্য সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে। বাংলাদেশ এখন আর পরনির্ভরশীল নয়, নিজেরাই এখন উৎপাদন করছে। দেশে পর্যাপ্ত খাদ্য মজুত আছে। আশা করি, রমজানে কোনো অসুবিধা হবে না। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক কোনো চাপ আছে কিনা– এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, এমন কোনো চাপ নেই, যেটা শেখ হাসিনাকে দিতে পারে। এটা মাথায় রাখতে হবে। আমার শক্তি একমাত্র
আমার জনগণ। অতীতেও এ রকম বহু চাপ ছিল, তাতে আমাদের কিছু আসে-যায় না। ওপরে আল্লাহ আছেন এবং আমার বাবার আশীর্বাদের হাত আমার মাথায় আছে। কাজেই কে কী চাপ দিল, না দিল– এতে আমাদের কিছু আসে-যায় না। সারাদেশের মানুষ বর্তমান সরকারের প্রতি আস্থাশীল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার দল করে না, অন্য দল করে; তাদের মুখ থেকেই কিন্তু আমি এ তথ্যটা নিয়েছি। সাধারণ মানুষ, গ্রামের মানুষের এখন একটাই কথা– এই সরকারেরই থাকা উচিত। এটা সাধারণ মানুষের আকাঙ্ক্ষা। নির্বাচন জনগণের ইচ্ছা। জনগণ ভোট দিলে আছি, না দিলে নেই। এ নিয়ে আফসোস নেই। তবে গত ১৪ বছরে দেশে ব্যাপক উন্নয়নের ফলে আমাদের ওপর দেশের
জনগণের আস্থা-বিশ্বাস বহু গুণ বেড়েছে। গত ৪ থেকে ৮ মার্চ কাতারের রাজধানী দোহায় অনুষ্ঠিত স্বল্পোন্নত দেশগুলোর পঞ্চম জাতিসংঘ সম্মেলনে (এলডিসি-৫) যোগদানের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের খোলামেলা জবাবও দেন তিনি। প্রশ্নোত্তরে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, সংলাপ এবং নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে বিশ্বের ৪০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির বিবৃতি দিয়ে বিজ্ঞাপন প্রকাশসহ চলমান রাজনীতির বিভিন্ন প্রসঙ্গ উঠে আসে। একই সঙ্গে আগামী রমজান মাস সামনে রেখে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি এবং করোনা ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলাসহ টানা তিন মেয়াদের ১৫ বছরে তাঁর সরকারের গৃহীত উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রসঙ্গেও কথা বলেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিমের সঞ্চালনায়
সংবাদ সম্মেলন মঞ্চে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আরও ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোনেম এবং বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টারা এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদক ও কর্মাধ্যক্ষ, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। যারা ভদ্রতা জানে না, তাদের সঙ্গে বৈঠকের কী আছে: আগামী নির্বাচনের আগে বিএনপির সঙ্গে সংলাপ করবেন কিনা– সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৫ আগস্ট আমার মা-বাবার হত্যাকারী, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে আইভি রহমানসহ আমাকে হত্যার চেষ্টা, বোমা হামলা করে আমাকে
হত্যাচেষ্টা যারা করেছে– তাদের সঙ্গে আমি বসেছি শুধু দেশের স্বার্থে। শুধু তাই নয়, খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে মারা গেলে আমি গেলাম একজন সন্তানহারা মাকে সহানুভূতি জানাতে। আমাকে কীভাবে অপমানটা করল? মুখের ওপর দরজা বন্ধ করে দিয়ে অভদ্রতা করেছে। যারা এটুকু ভদ্রতা জানে না, তাদের সঙ্গে বৈঠকের কী আছে? কেউ পারবেন? তিনি বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগেও আমি সংলাপ করেছি। তার ফলাফল কী? নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা ছাড়া আর কিছুই করেনি বিএনপি। টাকা খেয়ে ৩০০ আসনে ৭০০ নমিনেশন দিয়ে নিজেরাই নিজেদের নির্বাচন থেকে সরিয়ে নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এ প্রসঙ্গে দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মানবিক কারণে তাঁর বাসায় থাকার সুযোগ করে দেওয়ার
কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বয়োবৃদ্ধ অসুস্থ একজন মানুষের বোন ও ভাই এসে যখন আকুতি করলেন, তাঁর সাজা স্থগিত করে বাসায় থাকা ও চিকিৎসার সুযোগ করে দিয়েছি। এটুকু যে করেছি, সেটাই যথেষ্ট। সন্ত্রাস করা ছাড়া তো তাদের আর কোনো ক্ষমতা নেই। এটুকু সহানুভূতি যে পেয়েছে, সেটা আমার কারণে। ওদের সঙ্গে আবার কীসের বৈঠক আর কীসের কী? সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে নেতা বানিয়েছে বিএনপি : বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে সরকারপ্রধান বলেন, যে দল বেশি লাফায়, সেই দলের দুই নেতাই হচ্ছেন সাজাপ্রাপ্ত আসামি। সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা না পারবেন নির্বাচন করতে, না পারবেন ক্ষমতায় আসতে। বিএনপি নিজের গঠনতন্ত্র নিজেরা ভঙ্গ করছে। কারণ তাদের গঠনতন্ত্রে আছে– সাজাপ্রাপ্ত আসামি
দলের নেতা হতে পারে না। এখন গঠনতন্ত্র ভঙ্গ করে সেই সাজাপ্রাপ্ত আসামিকেই দলের নেতা বানিয়ে রেখে দিয়েছে। এখন এই দলের কাছে কী আশা করবেন? এখন ভোট কারচুপির সুযোগ নেই : দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি ও স্থিতিশীলতার জন্য অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রয়োজন বলে জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি। তিনি বলেন, এখন আর ভোট কারচুপির সুযোগ নেই। সরকার ছবিসহ ভোটার তালিকা করে দিয়েছে। এনআইডি যুক্ত করা হয়েছে। ভুয়া ভোটার দিয়ে নির্বাচন করার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ইভিএমে ভোট করতে চেয়েছিল, অনেকে আপত্তি করেছে। নির্বাচন কমিশন যতটা সম্ভব ইভিএম ব্যবহার করবে। ভোটাররা আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে ভোট দেবেন। ব্যাংকের এমডি পদে কী মধু আছে :
নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশ-সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, এটা ঠিক বিবৃতি নয়, একটা বিজ্ঞাপন। আমার একটা প্রশ্ন আছে, যিনি এত নামিদামি নোবেল প্রাইজপ্রাপ্ত, তাঁর জন্য ৪০ জনের নাম খয়রাত করে এনে বিজ্ঞাপন দিতে হবে কেন? তাও আবার বিদেশি পত্রিকায়। তিনি বলেন, একজন ভদ্রলোক (ড. ইউনূস) একটি ব্যাংকের এমডি ছিলেন। তাঁকে এমডি পদে বহাল রাখতে কোনো একটি দেশের অ্যাম্বাসাডর, পররাষ্ট্রমন্ত্রী থেকে শুরু করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের টেলিফোনের ওপর টেলিফোন আসতে থাকে। এমডি পদের কী মধু আছে? সেটা তো জানি না। আইনে আছে ৬০ বছর (চাকরির বয়স), তাঁর হয়ে গেছে ৭০ বছর। তার পরও তাঁকে এমডি পদে থাকতে হবে। এমডি পদে থাকলে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নেওয়া যায়, পয়সা মারা যায়। গরিবের রক্ত চুষে খাওয়া যায়। রোহিঙ্গাদের প্রতি আমাদের দায়িত্বও রয়েছে : প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের আমরা আশ্রয় দিয়েছি। ফলে তাদের প্রতি আমাদের দায়িত্বও আছে। মিয়ানমারের সঙ্গে ঝগড়া করতে যাইনি। আমরা তাদের বলছি, তাদের নাগরিকদের নিজ দেশে ফেরত নিতে। শুরুতে আমরা এককভাবে রোহিঙ্গাদের ভরণপোষণ দিয়েছি। পরে বিভিন্ন দেশ এগিয়ে এসেছে। তিনি বলেন, আমরা চাই, রোহিঙ্গারা ভাসানচরে যাক। সেখানে গেলে তাদের জীবন-জীবিকার সুযোগ হবে। রোহিঙ্গারা আমাদের জন্য বোঝা। কিন্তু আমাদের এটাও মনে রাখতে হবে, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এদেশের এক কোটি মানুষ ভারতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছিল। ববির ফুল দেওয়া প্রসঙ্গে : ঐতিহাসিক ৭ মার্চে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তাঁর বোন শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববির বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এটি কোনো রাজনৈতিক চমক নয়। রাজনৈতিক কোনো উদ্দেশ্য নিয়েও ববি সেখানে যায়নি। তিনি আরও বলেন, আপনার দেখছেন, আমার পরিবারের সদস্যরা দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁরা গোপন বাসনা ও রাজনৈতিক অভিলাষ নিয়ে কাজ করেন না। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আমার ও শেখ রেহানার পাঁচ ছেলেমেয়ের প্রত্যেকেই অবদান রেখে চলেছে। জ্বালানি চাহিদা পূরণে কাতার পাশে থাকবে : কাতার সফরের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা পূরণে কাতার পাশে থাকবে। সফরকালে দেশটির আমির শেখ তামিম বিন হামাদ বিন খলিফা আল থানির সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এ আশ্বাস দিয়েছেন। স্বল্পোন্নত দেশগুলো করুণা চায় না; বরং আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তাদের ন্যায্য পাওনা চায় বলে জানান তিনি।
পারে– সেটা আওয়ামী লীগ সরকার প্রমাণ করেছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোই এর প্রমাণ। গতকাল সোমবার গণভবনে তাঁর সদ্য সমাপ্ত কাতার সফর বিষয়ে আয়োজিত জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ে মানুষের যেন কষ্ট না হয়, সে জন্য সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে। বাংলাদেশ এখন আর পরনির্ভরশীল নয়, নিজেরাই এখন উৎপাদন করছে। দেশে পর্যাপ্ত খাদ্য মজুত আছে। আশা করি, রমজানে কোনো অসুবিধা হবে না। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক কোনো চাপ আছে কিনা– এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, এমন কোনো চাপ নেই, যেটা শেখ হাসিনাকে দিতে পারে। এটা মাথায় রাখতে হবে। আমার শক্তি একমাত্র
আমার জনগণ। অতীতেও এ রকম বহু চাপ ছিল, তাতে আমাদের কিছু আসে-যায় না। ওপরে আল্লাহ আছেন এবং আমার বাবার আশীর্বাদের হাত আমার মাথায় আছে। কাজেই কে কী চাপ দিল, না দিল– এতে আমাদের কিছু আসে-যায় না। সারাদেশের মানুষ বর্তমান সরকারের প্রতি আস্থাশীল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার দল করে না, অন্য দল করে; তাদের মুখ থেকেই কিন্তু আমি এ তথ্যটা নিয়েছি। সাধারণ মানুষ, গ্রামের মানুষের এখন একটাই কথা– এই সরকারেরই থাকা উচিত। এটা সাধারণ মানুষের আকাঙ্ক্ষা। নির্বাচন জনগণের ইচ্ছা। জনগণ ভোট দিলে আছি, না দিলে নেই। এ নিয়ে আফসোস নেই। তবে গত ১৪ বছরে দেশে ব্যাপক উন্নয়নের ফলে আমাদের ওপর দেশের
জনগণের আস্থা-বিশ্বাস বহু গুণ বেড়েছে। গত ৪ থেকে ৮ মার্চ কাতারের রাজধানী দোহায় অনুষ্ঠিত স্বল্পোন্নত দেশগুলোর পঞ্চম জাতিসংঘ সম্মেলনে (এলডিসি-৫) যোগদানের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের খোলামেলা জবাবও দেন তিনি। প্রশ্নোত্তরে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, সংলাপ এবং নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে বিশ্বের ৪০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির বিবৃতি দিয়ে বিজ্ঞাপন প্রকাশসহ চলমান রাজনীতির বিভিন্ন প্রসঙ্গ উঠে আসে। একই সঙ্গে আগামী রমজান মাস সামনে রেখে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি এবং করোনা ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলাসহ টানা তিন মেয়াদের ১৫ বছরে তাঁর সরকারের গৃহীত উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রসঙ্গেও কথা বলেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিমের সঞ্চালনায়
সংবাদ সম্মেলন মঞ্চে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আরও ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোনেম এবং বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টারা এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদক ও কর্মাধ্যক্ষ, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। যারা ভদ্রতা জানে না, তাদের সঙ্গে বৈঠকের কী আছে: আগামী নির্বাচনের আগে বিএনপির সঙ্গে সংলাপ করবেন কিনা– সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৫ আগস্ট আমার মা-বাবার হত্যাকারী, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে আইভি রহমানসহ আমাকে হত্যার চেষ্টা, বোমা হামলা করে আমাকে
হত্যাচেষ্টা যারা করেছে– তাদের সঙ্গে আমি বসেছি শুধু দেশের স্বার্থে। শুধু তাই নয়, খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে মারা গেলে আমি গেলাম একজন সন্তানহারা মাকে সহানুভূতি জানাতে। আমাকে কীভাবে অপমানটা করল? মুখের ওপর দরজা বন্ধ করে দিয়ে অভদ্রতা করেছে। যারা এটুকু ভদ্রতা জানে না, তাদের সঙ্গে বৈঠকের কী আছে? কেউ পারবেন? তিনি বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগেও আমি সংলাপ করেছি। তার ফলাফল কী? নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা ছাড়া আর কিছুই করেনি বিএনপি। টাকা খেয়ে ৩০০ আসনে ৭০০ নমিনেশন দিয়ে নিজেরাই নিজেদের নির্বাচন থেকে সরিয়ে নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এ প্রসঙ্গে দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মানবিক কারণে তাঁর বাসায় থাকার সুযোগ করে দেওয়ার
কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বয়োবৃদ্ধ অসুস্থ একজন মানুষের বোন ও ভাই এসে যখন আকুতি করলেন, তাঁর সাজা স্থগিত করে বাসায় থাকা ও চিকিৎসার সুযোগ করে দিয়েছি। এটুকু যে করেছি, সেটাই যথেষ্ট। সন্ত্রাস করা ছাড়া তো তাদের আর কোনো ক্ষমতা নেই। এটুকু সহানুভূতি যে পেয়েছে, সেটা আমার কারণে। ওদের সঙ্গে আবার কীসের বৈঠক আর কীসের কী? সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে নেতা বানিয়েছে বিএনপি : বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে সরকারপ্রধান বলেন, যে দল বেশি লাফায়, সেই দলের দুই নেতাই হচ্ছেন সাজাপ্রাপ্ত আসামি। সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা না পারবেন নির্বাচন করতে, না পারবেন ক্ষমতায় আসতে। বিএনপি নিজের গঠনতন্ত্র নিজেরা ভঙ্গ করছে। কারণ তাদের গঠনতন্ত্রে আছে– সাজাপ্রাপ্ত আসামি
দলের নেতা হতে পারে না। এখন গঠনতন্ত্র ভঙ্গ করে সেই সাজাপ্রাপ্ত আসামিকেই দলের নেতা বানিয়ে রেখে দিয়েছে। এখন এই দলের কাছে কী আশা করবেন? এখন ভোট কারচুপির সুযোগ নেই : দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি ও স্থিতিশীলতার জন্য অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রয়োজন বলে জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি। তিনি বলেন, এখন আর ভোট কারচুপির সুযোগ নেই। সরকার ছবিসহ ভোটার তালিকা করে দিয়েছে। এনআইডি যুক্ত করা হয়েছে। ভুয়া ভোটার দিয়ে নির্বাচন করার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ইভিএমে ভোট করতে চেয়েছিল, অনেকে আপত্তি করেছে। নির্বাচন কমিশন যতটা সম্ভব ইভিএম ব্যবহার করবে। ভোটাররা আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে ভোট দেবেন। ব্যাংকের এমডি পদে কী মধু আছে :
নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশ-সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, এটা ঠিক বিবৃতি নয়, একটা বিজ্ঞাপন। আমার একটা প্রশ্ন আছে, যিনি এত নামিদামি নোবেল প্রাইজপ্রাপ্ত, তাঁর জন্য ৪০ জনের নাম খয়রাত করে এনে বিজ্ঞাপন দিতে হবে কেন? তাও আবার বিদেশি পত্রিকায়। তিনি বলেন, একজন ভদ্রলোক (ড. ইউনূস) একটি ব্যাংকের এমডি ছিলেন। তাঁকে এমডি পদে বহাল রাখতে কোনো একটি দেশের অ্যাম্বাসাডর, পররাষ্ট্রমন্ত্রী থেকে শুরু করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের টেলিফোনের ওপর টেলিফোন আসতে থাকে। এমডি পদের কী মধু আছে? সেটা তো জানি না। আইনে আছে ৬০ বছর (চাকরির বয়স), তাঁর হয়ে গেছে ৭০ বছর। তার পরও তাঁকে এমডি পদে থাকতে হবে। এমডি পদে থাকলে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নেওয়া যায়, পয়সা মারা যায়। গরিবের রক্ত চুষে খাওয়া যায়। রোহিঙ্গাদের প্রতি আমাদের দায়িত্বও রয়েছে : প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের আমরা আশ্রয় দিয়েছি। ফলে তাদের প্রতি আমাদের দায়িত্বও আছে। মিয়ানমারের সঙ্গে ঝগড়া করতে যাইনি। আমরা তাদের বলছি, তাদের নাগরিকদের নিজ দেশে ফেরত নিতে। শুরুতে আমরা এককভাবে রোহিঙ্গাদের ভরণপোষণ দিয়েছি। পরে বিভিন্ন দেশ এগিয়ে এসেছে। তিনি বলেন, আমরা চাই, রোহিঙ্গারা ভাসানচরে যাক। সেখানে গেলে তাদের জীবন-জীবিকার সুযোগ হবে। রোহিঙ্গারা আমাদের জন্য বোঝা। কিন্তু আমাদের এটাও মনে রাখতে হবে, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এদেশের এক কোটি মানুষ ভারতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছিল। ববির ফুল দেওয়া প্রসঙ্গে : ঐতিহাসিক ৭ মার্চে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তাঁর বোন শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববির বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এটি কোনো রাজনৈতিক চমক নয়। রাজনৈতিক কোনো উদ্দেশ্য নিয়েও ববি সেখানে যায়নি। তিনি আরও বলেন, আপনার দেখছেন, আমার পরিবারের সদস্যরা দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁরা গোপন বাসনা ও রাজনৈতিক অভিলাষ নিয়ে কাজ করেন না। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আমার ও শেখ রেহানার পাঁচ ছেলেমেয়ের প্রত্যেকেই অবদান রেখে চলেছে। জ্বালানি চাহিদা পূরণে কাতার পাশে থাকবে : কাতার সফরের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা পূরণে কাতার পাশে থাকবে। সফরকালে দেশটির আমির শেখ তামিম বিন হামাদ বিন খলিফা আল থানির সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এ আশ্বাস দিয়েছেন। স্বল্পোন্নত দেশগুলো করুণা চায় না; বরং আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তাদের ন্যায্য পাওনা চায় বলে জানান তিনি।