আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন শনিবার নতুনত্ব আসছে নেতৃত্বে



আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন শনিবার নতুনত্ব আসছে নেতৃত্বে

ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স:-
আপডেটঃ ২২ ডিসেম্বর, ২০২২ | ১০:২৯
মাত্র একদিন পর সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। শনিবার উপমহাদেশের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২২তম ত্রি-বার্ষিক জাতীয় সম্মেলন। সংগঠনটির লাখো কোটি নেতাকর্মীসহ দেশবাসীর দৃষ্টি এখন ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে। সবার দৃষ্টি শুধু একটি পদের দিকে। সেটি হচ্ছে কে হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার পরবর্তী রানিংমেট? বর্তমানে টানা দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করা ওবায়দুল কাদেরের ওপরই আবার ভরসা রেখে পুনরায় আরেক মেয়াদে থাকছেন? নাকি নতুন কাউকে রানিংমেট বেছে নেবেন শেখ হাসিনা- সেই চমক দেখার অপেক্ষায় এখন দলটির সর্বস্তরের নেতাকর্মীসহ পুরো দেশবাসী। তবে জাতীয় সম্মেলনের দিনক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসছে বর্তমানে পদে থাকা এবং পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে চিন্তার বলিরেখা ততই প্রকট হচ্ছে।

সম্মেলনে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী এই ফোরামে শেষ পর্যন্ত কারা টিকে থাকছেন, কারা কারা পদোন্নতি পাচ্ছেন। আবার কাদের কপাল পুড়ছে বা কারা কারা ছিটকে পড়বেন- এ নিয়ে দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে এখন জল্পনা-কল্পনার যেন অন্ত নেই। বৈশ্বিক সংকটের কারণে এবারের সম্মেলনে ব্যাপক জৌলুস পরিহার করা হলেও আওয়ামী লীগের সম্মেলন মানেই নানা চমক। সেই ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় শনিবার সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনেই কাদের কপাল খুলছে আর কাদের কাদের কপাল পুড়ছে তার সবকিছুই পরিষ্কার হয়ে যাবে। তবে বর্তমান বাস্তবতার আলোকে বড় রদবদল আসার সম্ভাবনা কম। সেক্ষেত্রে মাত্র ১০ থেকে ১৫টি পদে নতুন মুখ, কয়েকজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক এবারের কাউন্সিলে পদোন্নতি পেতে পারেন বলে দলটির

একাধিক সূত্রে আভাস পাওয়া গেছে। ‘উন্নয়ন অভিযাত্রায় দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়’- এই প্রতিপাদ্য নিয়ে শনিবার সকালে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক জাতীয় কাউন্সিলের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতোমধ্যে মঞ্চ ও প্যান্ডেল নির্মাণসহ সম্মেলনের অন্যান্য কাজ প্রায় শেষের দিকে। ইতোমধ্যেই সারাদেশ থেকে দলের কাউন্সিলর-ডেলিগেটরা ঢাকায় আসতে শুরু করেছেন। সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয় সব পর্যায়ের নেতাদের পদচারণায় গমগম করছে। সম্মেলনকে ঘিরে সারাদেশেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশ, অন্যরকম উম্মাদনা। ৩২তম জাতীয় সম্মেলনেও বঙ্গবন্ধু শেখ হাসিনা সভাপতি পদে আবারও

নির্বাচিত হচ্ছেন এটি নিয়ে কারও মনে বিন্দুমাত্র প্রশ্ন নেই। কেননা, বঙ্গবন্ধুকন্যাকে ছাড়া আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে অন্য কারোর কথা কাউন্সিলর- ডেলিগেটরসরা কল্পনাও করেন না, মেনেও নেবেন না। বরাবরের মতো এবারও সারাদেশ থেকে আগত কাউন্সিলররা আওয়ামী লীগকে পরিচালনার ভার তুলে দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় টানা দশমবারের মতো সভানেত্রী নির্বাচিত করা হবে শুধু দেশেরই নয়, বর্তমানে পুরো বিশ্বের সামনে একজন দক্ষ রাজনীতিক, উন্নয়নে দেশকে বদলে দেওয়ার বলিষ্ঠ নেতৃত্বদানকারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। এরপর তার রানিংমেট সাধারণ সম্পাদকসহ ৮১ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের পুরো টিম সাজানোর দায়িত্বও কাউন্সিররা শেখ হাসিনার ওপর অর্পণ করবেন। তবে এবার এক ভিন্ন পরিস্থিতিতে এসেছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় জাতীয়

সম্মেলন। এই সম্মেলনের মাধ্যমে গঠিত নেতৃত্বই টানা চতুর্থবারের মতো আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনতে আগামী নির্বাচনের মূল চালিকা শক্তি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। তাই এবার নেতা নির্বাচনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দক্ষতা, রাজপথসহ সর্বত্র রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের সব ধরণের আন্দোলন-সংগ্রাম মোকাবিলার মতো সাংগঠনিক যোগ্যতা, অভিজ্ঞতার পাশাপাশি বিবেচনায় থাকবে দলের সর্বস্তরে গ্রহণযোগ্যতা। তবে সম্মেলনকে ঘিরে কাউন্সিলরসহ কেন্দ্রীয় অধিকাংশ নেতা বঙ্গবন্ধুর উত্তরাধিকারদের আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ দিয়ে সক্রিয় করার পক্ষে। দ্বিতীয় অধিবেশনে সুযোগ পেলে কাউন্সিলররা প্রধানমন্ত্রীর কাছে বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এবং রাদওয়ান সিদ্দিক ববিকে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করার দাবী জানাবেন। অন্যদিকে ছাত্রলীগের সাবেক একঝাঁক নেতৃত্ব দেওয়া নবীণ নেতারাও কেন্দ্রীয় কমিটিতে

স্থান পেতে মুখিয়ে রয়েছেন। তাদের ধারণা, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে তারুণ্যের জয়গান ও গণজাগরণ সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রবীণদের পাশাপাশি তাদেরও কেন্দ্রীয় কমিটিতে ঠাঁই দিয়ে তাদের সাংগঠনিক দক্ষতাকে ব্যবহার করবেন। সম্মেলনের সর্বশেষ প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আজ বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বর্তমান মেয়াদের শেষ বৈঠক ডাকা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠেয় এই বৈঠকে সম্মেলনের সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হবে। এখানে গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্রের বিষয়ে আসা প্রস্তাবগুলো উপস্থাপন করা হবে। অন্যদিকে সারাদেশ থেকে আসা তালিকা ধরে প্রস্তুত করা হয়েছে কাউন্সিলর ও ডেলিগেটস কার্ড। বুধবার থেকে দলীয় সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে তা বিতরণ শুরু করা হয়েছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে ষড়যন্ত্রকারীরা আওয়ামী লীগের নাম-নিশানা মুছে ফেলার নানা ষড়যন্ত্র শুরু করে। চরম এক ক্রান্তিলগ্নে ১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারিতে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাকে সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। এরপর সামরিক ও ঘাতকচক্রের সকল রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে দেশে ফিরে এসে আওয়ামী লীগের হাল ধরেন শেখ হাসিনা। এরপর টানা ৪২ বছর ধরে সভাপতির দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করে আওয়ামী লীগকে উপমহাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বৃহৎ, জনপ্রিয় ও শক্তিশালী রাজনৈতিক দলে পরিণত করেছেন। দলের দায়িত্ব নেওয়ার পর তার একক ক্যারিশম্যাটিক-সাহসী-প্রাজ্ঞ নেতৃত্ব ও ইমেজের কারণে দলকে চারবার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এনেছেন তিনি। অন্যদিকে

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর পর বাংলাদেশের যত সাফল্য, উন্নয়ন, অগ্রগতি সেসবও এসেছে তারই কন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরে। শত ষড়যন্ত্র, ১৯ বার তাকে হত্যার প্রচেষ্টা, হুমকি-ধামকি ও মৃত্যুভয়কে পায়ের ভৃত্য করে শেখ হাসিনা দেশকে নিয়ে গেছেন উন্নয়নের মহাসোমানে। সারাবিশ্বের সামনে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের বিস্ময়, রোল মডেল। জানা গেছে, প্রথম অধিবেশনের পর অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় অর্থাৎ কাউন্সিল অধিবেশন। শুরুতে সভাপতি হিসেবে কাউন্সিল অধিবেশনে প্রাথমিক বক্তব্য শেষে বর্তমান কমিটিকে বিলুপ্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতির আসন ছেড়ে দিয়ে বসবেন কাউন্সিলরদের সারিতে। দ্বিতীয় অর্ধিবেশন পরিচালনা করবেন গঠিত নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। প্রথমে একজন আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ হাসিনার নাম প্রস্তাব করবেন, আরেকজন সমর্থন করবেন।

সভাপতি পদে অন্য কোনো প্রার্থী না থাকলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভানেত্রী নির্বাচিত হবেন। এরপর পরবর্তী সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য একজনের নাম প্রস্তাব এবং সমর্থন করবেন। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পর কাউন্সিলরা অতীতের মতো সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে ৮১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটির ঘোষণার ভার শেখ হাসিনার ওপর অর্পণ করতে পারেন। এর পর নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্ধারিত আসনে বসবেন।
ট্যাগ:

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
ভোক্তাপিছু কম ব্যয় করে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা বিধিনিষেধে সরকারই দায়ী: মির্জা ফখরুল ভয় দেখিয়ে লাভ নেই, ষড়যন্ত্র সফল হবে না: আ.লীগ ডেঙ্গু পরিস্থিতির চরম অবনতি, সেপ্টেম্বরের ২৩ দিনেই প্রাণ গেল ৩০০ জনের ‘বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার সময় মানবতা কোথায় ছিল’ ভিসানীতি নিয়ে পরোয়া করি না: ঢাকায় নেমে কাদের যেকোনো উপায়ে সাংবিধানিক ধারা বজায় রাখতে হবে: ইনু ভোক্তা অধিদপ্তরের তদারকি: বিভিন্ন অনিয়মে ৮৬টি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা বিএনপি কি আসলেই নির্বাচন চায়, তাদের নেতা কে- প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর ইউক্রেনে কেন অস্ত্র পাঠাবে না পোল্যান্ড? ইউক্রেনকে অল্প সংখ্যক দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দেবে যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর নিয়ে বিএনপির বক্তব্য কী? গুজরাটে চলন্ত ট্রেনে ভয়াবহ আগুন যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে চীন: নিকি হ্যালি নির্বাচনের আগে ৫২ হাজার সাউন্ড গ্রেনেড কিনবে পুলিশ মালয়েশিয়ায় মৃত্যুদণ্ড থেকে রেহাই পেলেন বাংলাদেশি নির্বাচনের আগে ৫২ হাজার সাউন্ড গ্রেনেড কিনবে পুলিশ ‘ইইউ পর্যবেক্ষক না পাঠালেও কিছু যায় আসে না’ পুতুলের রাজনীতিতে আসার সম্ভাবনা নিয়ে যা বললেন শেখ হাসিনা