অবহেলায় অন্তহীন খেসারত – U.S. Bangla News




অবহেলায় অন্তহীন খেসারত

ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স:-
আপডেটঃ ২ মার্চ, ২০২৪ | ৬:২৬
বেইলি রোডের প্রশস্ত সড়কের পাশে চোখ ধাঁধানো গ্রিনকজি কটেজ ভবন। ঝলমলে আলোকসজ্জা আর বাহারি খাবারের পসরা সাততলা ভবনের ছয়টি ফ্লোরেই। প্রতিদিন হাজারো মানুষের যাতায়াত ছিল ভবনটিতে। ছোট দুটি লিফট দিয়েই চলাচল করতেন সবাই। একটি সংকীর্ণ সিঁড়ি থাকলেও তার ব্যবহার ছিল না বললেই চলে। ফলে সেখানেও রাখা হয় সিলিন্ডার। ছিল না কোনো ফায়ার এক্সিট। রেস্টুরেন্টগুলো নিজেদের মতো করে সাজিয়ে নেয় ভবনের প্রতিটি ফ্লোর। এতে বায়ু চলাচলের পথও বন্ধ হয়ে যায়। এভাবে পদে পদে লঙ্ঘন করা ইমারত বিধিমালাসহ অগ্নিনিরাপত্তাসংক্রান্ত নির্দেশনা। আর কর্তাব্যক্তিরা এসব অনিয়মের বিষয়ে কেবল নোটিশ দিয়েই দায় সেরেছেন। বৃহস্পতিবার রাতে এমন চরম অবহেলার খেসারত দিয়েছেন ভয়াবহ আগুনে নিহত-আহত শতাধিক নিরীহ

মানুষ। যার দায় তদারক কর্তৃপক্ষ, ভবন মালিক ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের। অথচ তারা সবাই এখন একে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপানোয় ব্যস্ত। রাজধানীর বেইলি রোডের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬ এ। এদের মধ্যে ৪০ জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল এবং শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের মর্গে ছয়টি লাশ রয়েছে। এদের পরিচয় নিশ্চিত হতে পারেনি ঢাকা জেলা প্রশাসন। নিহতদের মধ্যে দুজনের শরীর পুড়ে অঙ্গার। ফলে লাশের দাবিদার স্বজনদের ডিএনএ নমুনা পরীক্ষার পর হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার পর্যন্ত দুই হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১৩ জন। এদের সবার অবস্থাই

আশঙ্কাজনক। শুক্রবার সরেজমিন বেইলি রোডে গিয়ে দেখা যায়, আগুন নেভানোর জন্য অত্যন্ত অনুকূল অবস্থায় ছিল ভবনটি। সামনে ৩৫ ফুটের প্রশস্ত সড়ক। পূর্ব দিকে ছিল অনেকটাই ফাঁকা। অর্থাৎ আগুন নেভানোর জন্য ঢাকায় সাধারণত যে ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয় এর কোনোটিই সেখানে বিদ্যমান ছিল না। এর পরেও এত প্রাণহানির ঘটনায় বাকরুদ্ধ সবাই। ভবনের ত্রুটি নিয়ে সবাই কথা বলছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘সেখানে কোনো ফায়ার এক্সিট ছিল না। ৪৬ জন মানুষ মারা গেছেন। এর চেয়ে কষ্টের আর কী হতে পারে?’ ফায়ার সার্ভিস বলছে, ভবনটিতে কোনো অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থাই ছিল না। ফলে চুলা বা গ্যাস লিকেজ থেকে আগুন লাগতে পারে। তাদেরকে তিনবার নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। ঢাকা

দক্ষিণ সিটি করপোরেশন বলছে, বহুতল ভবনে ইমরাত বিধিমালা লঙ্ঘন করা হয়েছে। অন্যদিকে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের দাবি, ভবনটির নকশায় কোনো ত্রুটি নেই। তবে এই ভবনটির পঞ্চমতলা পর্যন্ত বাণিজ্যিক অনুমোদন থাকলেও তারা উপরের বাকি দুইতলাও বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করেছে। এদিকে সুরক্ষা সেবা বিভাগ বলছে, ভবনটিকে আগেই অগ্নিনিরাপত্তা সংক্রান্ত নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। সরেজমিন শুক্রবার গিয়েও ভবনটির চতুর্থ তলার সিঁড়িতে ছড়ানো-ছিটানো অবস্থায় সিলিন্ডার পড়ে থাকতে দেখা গেছে। শুক্রবার পুড়ে যাওয়া ভবনটি পরিদর্শনে যান স্থপতি ইকবাল হাবিব। পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, পুরো ভবন আবদ্ধ, প্রাকৃতিক আলো বাতাস প্রবাহের কোনো জায়গা ছিল না। ২০ ভাগ মানুষ আগুনে পুড়ে আর ৮০ ভাগ মানুষ ধোঁয়াতে মারা গেছে। এটা হয়েছে কারণ

ভবন থেকে বেরিয়ে আসার কোনো পথ ছিল না। আমি যে কক্ষে গেছি সেখানে ফায়ার সার্ভিস আমাকে দেখাল, এখানে ৯টা মরদেহ পড়েছিল। ওই রুমের বিভিন্ন জায়গায় খামচির দাগ ছিল। তারা কোনো না কোনো একটা জানলা দরজা খোলার চেষ্টা করেছিল, বাতাস নেওয়া জন্য। এটা ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড। আশপাশে ওয়ালে তারা জানালা খুঁজেছে কিন্তু কিছুই নেই। ভবনে ভেন্টিলেটর না থাকা একটা চূড়ান্ত অপরাধ। এ ঘটনা আমাদের নতুনভাবে ভাবতে শুরু করেছে। এটি মূলত ছয়টি মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সংস্থার দীর্ঘদিনের অবহেলা। তাদের অধীনস্থরা আইন ও বিধিমালা না মেনে অমার্জনীয় অপরাধ করে গেছে। কোনো রকম কার্যক্রম তারা পরিচালনা করেনি। তারা দায়িত্বশীল আচরণ না করার জন্য এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।

এই ছয় সংস্থার বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে ফায়ার সার্ভিস একটি এবং রাজউক পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। আগামী সাতদিনের মধ্যে রাজউক ভবনটির বিষয়ে প্রতিবেদন দেবে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ক্রাইমসিন ইউনিট ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পুড়ে যাওয়া বহুতল ভবনটি থেকে আলামত সংগ্রহ করেছে। তারা অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত নিয়ে কাজ করছে। এখন পর্যন্ত প্রায় সবাই একমত, পুড়ে যাওয়া ভবনের নিচতলার চা-চুমুক নামের একটি ফাস্টফুডের দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত। গ্যাস লিকেজ অথবা চুলা থেকে শুরুতে আগুন ধরে। হাতে আসা একটি ভিডিওতেও শুরুতে নিচতলায় আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। যেহেতু সব রেস্টুরেন্টের সাজসজ্জায় প্রচুর পরিমাণে

দাহ্য পদার্থ ব্যবহার করা হয়েছে-এ কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আগুন নেভানো হলেও তীব্র ধোঁয়ায় অচেতন হয়ে পড়েন অনেকে। এদের বেশির ভাগই মারা গেছেন। শুক্রবার সকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেনও একই কথা বলেছেন। তিনি বলেন, যারা মারা গেছেন, তাদের বেশির ভাগ ‘কার্বন মনোক্সাইড পয়জনিংয়ের’ শিকার হয়েছেন। অর্থাৎ, একটি বদ্ধ ঘর থেকে যখন ধোঁয়া বের হতে পারে না, তখন তা শ্বাসনালীতে চলে যায়। প্রত্যেকেরই তা হয়েছে। যাদের বেশি হয়েছে, তারা মারা গেছেন। তবে যারা আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি, তারা কেউ শঙ্কামুক্ত নন। ফায়ার সার্ভিসের কাছে থাকা ২০২৩ সালের ভবনটির নথিতে উল্লেখ রয়েছে, ভবনটি আটতলাবিশিষ্ট। তাদের অনুমোদিত ফায়ার সেফটি প্ল্যান ছিল না।

সেখানে নিয়মিত অগ্নিনির্বাপণবিষয়ক মহড়া অনুষ্ঠিত হয়নি। এতে মোট ৪ ফুট প্রশস্ত একটি সিঁড়ি রয়েছে। ভবনের বেজমেন্টে ৫০ হাজার লিটার ধারণক্ষমতার আন্ডারগ্রাউন্ড ওয়াটার রিজার্ভার আছে। ৩০ মিটারের মধ্যে উন্মুক্ত জলাশয় আছে। তবে পাম্প হাউজ নেই। পিলার হাইড্রেন্ট সিস্টেম, স্ট্যান্ডপাইপ, ডিটেকশন ও ফায়ার এলার্ম সিস্টেম নেই। ছিল না ইমার্জেন্সি লাইটিং ব্যবস্থা। এক রুমেই ছিল জেনারেটর ও সাবস্টেশন। প্রয়োজনীয় স্থানে ছিল না ফায়ার স্টোপার। এছাড়া ভবনটিতে আরও ১০ ধরনের অগ্নিনিরাপত্তা ত্রুটি ও দুর্বলতা ছিল। ভবনের বেজমেন্টে ছিল গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা। নিচতলায় ছিল আটটি দোকান। দ্বিতীয়তলায় ছিল বিরিয়ানির পরিচিত খাবার দোকান ‘কাচ্চি ভাই’। তৃতীয়তলায় পাঞ্জাবির শোরুম। এছাড়া চতুর্থ, পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তমতলায় ছিল রেস্টুরেন্ট।

অষ্টমতলায় মসজিদের জায়গা দেখানো হয়েছে। যদিও এখানেও দোকান ছিল। ভবনটির পূর্বদিকে তিনতলা ভবন, পশ্চিম দিকে বহুতল আরেকটি ভবন, দক্ষিণে ৩৫ ফুট রাস্তা এবং উত্তরে খালি জায়গা। এ অবস্থায় আটতলার আমব্রোসিয়া রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড মিউজিক ক্যাফেকে গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চিঠি দিয়েছিল ফায়ার সার্ভিস। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ফায়ার সার্ভিসের কাছে থাকা এসব তথ্যও সঠিক নয়। যেভাবে ভবনের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে এবং অগ্নিনিরাপত্তার বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়েছে, প্রকৃত চিত্র তার চেয়ে ভিন্ন। এ বিষয়ে স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, যে ভবনে আগুন লেগেছে এটাকেও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে। ফায়ার সার্ভিস এ অনুমোদন দিতে রাজি ছিল না। মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তাদের হুমকি দেওয়া হয়েছে। পরে তারা শর্তসাপেক্ষে তিন মাসের অনুমোদন দেন। ইকবাল বলেন, হুমকি দিলেই কী অনুমোদন দিতে হবে। তাহলে এই মৃত্যুর দায় কেন নেবে না। তিন মাসের মধ্যে সব ঠিক করা হবে এমন শর্তে অনুমোদন নেওয়া। অথচ এই কার্যক্রমে রাজউক একবার এসে পরিদর্শনও করেনি। তারা দেখেনি কিভাবে অনুমোদন ছাড়া একটা ভবনের সব ফ্লোরে একের পর এক রেস্টুরেন্ট হলো। রেস্টুরেন্টের যে কিচেন সেটি সাধারণ বাসাবাড়ির কিচেন না। এর জন্য বিশেষ ডিজাইন করতে হয়। এমন কিচেনে সিলিন্ডার রাখার জন্য জায়গা থাকতে হয়। কিন্তু এখানে তা ছিল না। ফলে সব সিলিন্ডার রাখা হয়েছে ভবনের একটি মাত্র সিঁড়িতে। এদিকে ঘটনার দিন কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টে ৫০ শতাংশ ছাড় থাকায় ভবনটিতে ছিল বাড়তি মানুষের চাপ। খাবার ডেলিভারির অ্যাপস ফুডপান্ডার অনেক কর্মীও আসেন অর্ডার নিতে। বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি ফরিদুল নামের একজনের সঙ্গে শুক্রবার কথা হয়। তিনি বলেন, রেস্টুরেন্টটিতে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ভিড় বেশি ছিল। হঠাৎ ঘটনাটি ঘটে যায়। পড়ে কোনো মতে প্রাণে বেঁচে ফেরেন। ‘বিল্ডিং কোড লঙ্ঘন করা হয়েছে’ : শুক্রবার ক্ষতিগ্রস্ত ভবন পরিদর্শনে এসে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, বেইলি রোডের আগুন লাগা বহুতল ভবনে ইমারত বিধিমালা লঙ্ঘন করা হয়েছে। বিধিমালা অনুযায়ী পঞ্চমতলার ঊর্ধ্বে কোনো ভবনের ক্ষেত্রে অন্তত দুটো সিঁড়ি থাকতে হয়। কিন্তু আমরা বেঁচে যাওয়া ক্ষতিগ্রস্তদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি, ওই ভবনে একটি মাত্র সিঁড়ি ছিল। সে সিঁড়িটা সঙ্কীর্ণ হওয়ায় অনেকে নামতে পারেননি, অনেকে উপরে চলে যান। ফলে ঝুঁকির মাত্রা আরও বেড়ে যায়। মেয়র বলেন, বিভিন্নভাবে নকশা অনুমোদন করা হচ্ছে, কিন্তু সেসব নকশায় ইমারত বিধিমালা মানা হচ্ছে না। দ্বিতীয়ত অনেক ক্ষেত্রে নকশা ঠিক থাকলেও যখন ভবন নির্মাণ হচ্ছে তখন ব্যত্যয় হচ্ছে। তদারকির জায়গায় গাফিলতি রয়েছে, পর্যাপ্ত হচ্ছে না। এজন্য আমরা বলেছি, ভবন নির্মাণের আগে সিটি করপোরেশনের অনুমতির বাধ্যবাধকতা করা হলে, আমরা সেই তদারকি করতে প্রস্তুত। কারণ আমাদের জবাবদিহিতা করতে হয় জনগণের কাছে। অন্য কর্তৃপক্ষের জনগণের কাছে জবাবদিহিতা নেই। ‘নোটিশ দেওয়া হয়েছিল’ : ভবনটিকে আগেই অগ্নিনিরাপত্তা সংক্রন্ত নোটিশ দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী। শুক্রবার দুপুরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তিনি বলেন, এই ভবনটাতে একটা মাত্র সিঁড়ি আছে। ধোঁয়ার কারণে মানুষ যেখানে অচেতন হয়ে পড়েছিল। আমরা একটি তদন্ত কমিটি করেছি, আমরা আসলে দেখতে চাই কারও কোনো গাফিলতি ছিল কি না। তিনি বলেন, এই ভবনে ফায়ার সেইফটি প্ল্যান ছিল কিনা আমরা তদন্তে দেখতে চাই। এছাড়া, ভবন নির্মাণ করতে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের অনুমতি ছিল কিনা তাও আমরা তদন্ত করে দেখব। আমরা তদন্তে দেখতে পাব কীভাবে আগুন লেগেছে এবং এখানে কারও কোনো গাফিলতি ছিল কিনা। আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। ভবনটিতে অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা কেমন ছিল জানতে চাইলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন বলেন, এই ভবনে কোনো অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। ফায়ার সেইফটি প্ল্যান ছিল না। ভবনে আমরা দু-একটি ফায়ার এক্সটিংগুইশার দেখেছি। ভবনে একটি মাত্র সিঁড়ি রয়েছে। মানুষ যে কক্ষে আশ্রয় নিয়েছিলেন, সেখানে একটি জানালাও ছিল না। এছাড়া চারতলায় গ্যাস সিলিন্ডার রয়েছে। আমরা তাদেরকে তিনবার নোটিশ দিয়েছি। গ্রেফতার তিনজন : বেইলি রোডে আগুনের ঘটনায় কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টের ম্যানেজারসহ তিনজনকে আটক করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। তারা হলেন-কাচ্চি ভাই’র ম্যানেজার জিসান আহমেদ এবং ভবনের নিচতলার চা-চুমুক রেস্টুরেন্টের দুই মালিক আনোয়ারুল হক ও শাকিল আহমেদ রিমন। শুক্রবার রাতে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে বেইলি রোডের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ড. খ মহিদ উদ্দিন। সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে-নাছিম : বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ-সদস্য কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে। যারা ভবন নির্মাণ করবেন, যারা এর দেখভালের দায়িত্বে তারাসহ সবাই আইন মেনে চললে অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধ করতে পারব। ভবন নির্মাণের সময় ফায়ার সার্ভিসের নীতিমালা মেনে চলতে হবে, প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভবনে রাখতে হবে। শুক্রবার দুপুরে বেইলি রোডে আগুনের ঘটনায় নিহত ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষিকা লুৎফুর নাহার করিম ও তার মেয়ে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জান্নাতি তাজরিন নিকিতার জানাজায় উপস্থিত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। পুলিশ সপ্তাহের অনুষ্ঠান বাতিল : বেইলি রোডে মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ সপ্তাহ ২০২৪-এর শুক্রবারের মতবিনিময় সভা বাতিল করা হয়েছে। সাধারণত এ মতবিনিময় সভার পাশাপাশি পুলিশ কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের গেট টুগেদার হয়ে থাকে। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ পুলিশের একজন অতিরিক্ত ডিআইজির বুয়েটে পড়ুয়া মেয়েও অগ্নিদগ্ধ হয়ে এ আগুনে প্রাণ হারিয়েছেন। আইজিপি নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। তিনি আহত ও চিকিৎসাধীনদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।
ট্যাগ:

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
কারফিউ তুলে নেওয়ার বিষয়ে যা জানালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজস্ব আদায়ে ৫ চ্যালেঞ্জ চার দিনে খান ইউনিস ছেড়েছেন পৌনে ২ লাখ ফিলিস্তিনি দেশে আর কতদিন কারফিউ থাকবে? কোটা সংস্কার আন্দোলন ক্ষতিগ্রস্তদের চোখে শুধুই নীরব অশ্রু গ্রেফতার আতঙ্কে ঘরছাড়া বহু সাধারণ শিক্ষার্থী জনজীবন স্বাভাবিক হলে কারফিউ প্রত্যাহার: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কারা অধিদপ্তরে জরুরি সিকিউরিটি সেল সীমিত আকারে চলছে দূরপাল্লার বাস, যাত্রী কম ডিবি হেফাজতে কোটা আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক ১০ দিনে কারাগারে ৩৩০ চট্টগ্রামে গ্রেফতার আতঙ্কে ঘরছাড়া বিএনপি নেতাকর্মীরা ‘তারেক রহমানের হামলার নির্দেশনার অডিও সরকারের কাছে’ সরকার দিশেহারা হয়ে বিরোধীদের ওপর দোষ চাপাচ্ছে: জামায়াত সব দল নিয়ে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান বিএনপির মাঠে থাকার অঙ্গীকার আ.লীগ নেতাদের ওয়াইফাই নেটওয়ার্কে নিরবচ্ছিন্ন সুবিধা পেতে যা করবেন কী হয়েছিল জাহ্নবীর? সহিংসতায় আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করবে সরকার: প্রধানমন্ত্রী পুলিশকে দুর্বল করতেই পরিকল্পিতভাবে হামলা-ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে: ডিবিপ্রধান প্রকৃত কোনো ছাত্রই এই হামলায় জড়িত ছিল না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী